গীবত কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | গীবত থেকে বাঁচার উপায় | গীবত কেন ক্ষতিকর? | গীবতের ধরন

আপনি কি কখনো শুনেছেন, কেউ আপনার পেছনে আপনার খারাপ দিক নিয়ে কথা বলছে? এমন ঘটনা আমাদের চারপাশে খুব সাধারণ। কিন্তু জানেন কি, ইসলামে এমন কাজকে বিশেষ একটি নাম দেওয়া হয়েছে? আজকের এই পোস্টে আমরা সেই বিষয়ের কথা সহজভাবে জানব। গল্পের মতো সহজ ভাষায় বোঝানো হয়েছে, যাতে আপনি পড়তে পড়তে সম্পূর্ণ বিষয়টা বুঝে যান এবং বুঝতে পারেন কেন এটি আমাদের জীবনের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চলুন, বিস্তারিত জানি!

গীবত কাকে বলে?(সহজ সংজ্ঞা)

গীবত কাকে বলে?

কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষত্রুটি বা অপ্রীতিকর বিষয় নিয়ে সমালোচনা করা বা আলোচনা করাকেই গীবত বলে।

আরো বিস্তারিতভাবে বললে, গীবত হল কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষ বা ত্রুটি নিয়ে কথা বলা, যা সে শুনতে পছন্দ করে না। এটি ইসলামে একটি জঘন্য পাপ। গীবত মানুষের নেক আমলকে কমিয়ে দেয় এবং সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট করে।

গীবতের প্রধান কারণ

‘গীবত’ শব্দটির আরবি অর্থ হলো: নিন্দা করা, দোষারোপ করা বা কারো পেছনে সমালোচনা করা। এটি সচরাচর সমাজে প্রচলিত, কিন্তু অত্যন্ত ক্ষতিকর।

গীবতের ধরন

  • হারাম গীবত: কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষ-বিশেষ উল্লেখ করা যা সে অপছন্দ করে।
  • ওয়াজিব গীবত: কখনও কখনও অন্যকে সতর্ক করার জন্য দোষ-বর্ণনা করা যেমন বিয়ে, হাদীস যাচাই বা প্রতারক থেকে সতর্ক করা।
  • মুবাহ বা জায়েয গীবত: বিচার বা সত্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে করা, যেমন প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা।

গীবতের বিভিন্ন ধরন

মৌখিক গীবত

মুখে কথা বলেই করা হয় সবচেয়ে বেশি। ছোট কথাবার্তা, চা-চক্র বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কেউ কারো দোষ আলোচনা করলে তা গীবত হয়।

হৃদয়ের গীবত

মনেই কারো সম্পর্কে খারাপ ধারণা রাখা। ইমাম গাজ্জালী বলেছেন, মনের মধ্যে কারো দোষ নিয়ে খারাপ ধারণা রাখা হারাম।

ইশারা বা অঙ্গভঙ্গি দিয়ে গীবত

চোখ, হাত বা অঙ্গভঙ্গি দিয়ে কারো দোষ বা ত্রুটি বোঝানো। উদাহরণস্বরূপ, কারো ছোট বা লম্বা হওয়া নিয়ে ইঙ্গিত করা।

লিখে গীবত

লেখার মাধ্যমে কারো দোষ প্রকাশ করা। যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় কারো সমালোচনা লেখা।

গীবত শোনার নিয়ম

যদি কেউ গীবত করে, তা শোনাও পাপ। আল্লাহ বলেন, "যখন তারা ফালতু কথাবার্তা শোনে, তা যেন উপেক্ষা করে।" গীবত শুনেও প্রতিবাদ না করলে দায়মুক্ত হওয়া যায় না।

গীবত কেন ক্ষতিকর?

  • মানুষের সম্মান নষ্ট করে।
  • আল্লাহর নিকট পাপের কারণ।
  • সম্পর্ক ও সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করে।

গীবত থেকে বাঁচার উপায়

  • কারো দোষ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা।
  • মনের মধ্যে খারাপ ধারণা না রাখা।
  • গীবত শোনার সময় তা উপেক্ষা করা।
  • অন্যকে সতর্ক করার প্রয়োজন হলে মাত্রই বলা।

উপসংহার

গীবত ইসলামে মহাপাপ। এটি মানুষের সম্মান নষ্ট করে এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আমাদের উচিত গীবত করা থেকে বিরত থাকা এবং অন্যদেরও এ বিষয়ে সতর্ক করা। আরও ইসলামিক শিক্ষার জন্য, StudyTika.com ভিজিট করতে ভুলবেন না।

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.