আপনি কি জানেন, আমাদের দেহে এমন অনেক ছোট ছোট অঙ্গ রয়েছে, যারা ধীরে ধীরে আমাদের শরীরের সব কাজকে সুন্দরভাবে চালাতে সাহায্য করে? এই অঙ্গগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গ্রন্থি। গ্রন্থি শুধুমাত্র শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করে না, বরং আমাদের দেহের নানা প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে চালানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আজ আমরা গ্রন্থি সম্পর্কে জানব, কীভাবে এগুলো কাজ করে এবং আমাদের শরীরের জন্য কেন এত গুরুত্বপূর্ণ। আসুন, একসাথে বিস্তারিতভাবে জানি।
গ্রন্থি কি?
গঠনগত ও কার্যগতভাবে বিশেষিত যে কোষ বা কোষগুচ্ছ দেহের বিভিন্ন জীববৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে তাকে গ্রন্থি (Gland) বলা হয়।
অন্যভাবে বলা যায়, যে অঙ্গ (কখনও কখনও একটি মাত্র কোষ বা কোষগুচ্ছ) এক বা একাধিক নির্দিষ্ট রাসায়নিক যৌগ উৎপাদন ও নিঃসরণ কাজে লিপ্ত থাকে, তাকে গ্রন্থি বলা হয়। এটি একপ্রকার রূপান্তরিত কলা, যার কোষসমূহ বিশেষ ধরনের রস নিঃসৃত করে।
গ্রন্থি তৈরি ও কাজ
ভ্রূণের পরিস্ফুটনের নির্দিষ্ট পর্যায়ে দেহের নির্দিষ্ট অঞ্চলে গ্রন্থি তৈরি হয়। গ্রন্থি কর্তৃক নিঃসৃত তরল রাসায়নিক পদার্থ দেহের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলিতে অংশগ্রহণ করে। যেমন মিউকাস, উৎসেচক (Enzyme), হরমোন ইত্যাদি। এগুলো বিভিন্ন পৃথক গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়।
গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থ সাধারণত তরল আকারে থাকে। হরমোন ও উৎসেচক প্রভৃতি পদার্থ দেহের অভ্যন্তরে রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় রাসায়নিক বার্তা বহন করে।
গ্রন্থির প্রকারভেদ
কোষের সংখ্যার ভিত্তিতে
কোষের সংখ্যার ভিত্তিতে গ্রন্থি দুই ধরনের:
- এককোষী গ্রন্থি (Unicellular Gland)
- বহুকোষী গ্রন্থি (Multicellular Gland)
ক্ষরণ পদ্ধতি ও গঠন অনুযায়ী
গ্রন্থির গঠন, কার্যক্রম, ক্ষরণ পদ্ধতি ও ক্ষরণ নির্গমনকারীর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির ভিত্তিতে গ্রন্থি দুই ধরনের:
- বহিঃক্ষরা বা সনালী গ্রন্থি (Exocrine or Ductile gland)
- অন্তঃক্ষরা বা অনালী গ্রন্থি (Endocrine or Ductless gland)
গ্রন্থি আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে স্বাভাবিকভাবে চলতে সাহায্য করে। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে আপনি গ্রন্থি সম্পর্কে অনেক কিছু নতুন শিখেছেন। যদি আরও সহজ ও সুন্দরভাবে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকে, তাহলে অবশ্যই StudyTika.com-এ আরও পোস্ট দেখুন এবং পড়তে থাকুন। আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে এবং পড়াশোনার মজা দ্বিগুণ হবে।