ত্রিভুজ কাকে বলে: ত্রিভুজ হল একটি আকৃতি, যা তিনটি বাহু ও তিনটি কোণ নিয়ে তৈরি। এটি আমাদের চারপাশে বিভিন্নভাবে দেখা যায়। আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা ত্রিভুজের মানে, এর প্রকার এবং বৈশিষ্ট্যগুলো জানব। আশা করি, এই তথ্যগুলো আপনার কাজে আসবে!
ত্রিভুজ কাকে বলে?
তিনটি বাহু দ্বারা ঘেরা একটি আকারকে ত্রিভুজ বলা হয়। অথবা এভাবে বলা যায় যে, তিনটি বাহু দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রকে ত্রিভুজ বলে। আবার, তিনটি কোণ দ্বারা ঘেরা ক্ষেত্রও ত্রিভুজ। ত্রিভুজের তিনটি বাহুকে ত্রিভুজের বাহুর নাম দেওয়া হয়। ত্রিভুজের তিনটি কোণকে ত্রিভুজের কোণের নাম বলা হয়। ত্রিভুজের তিনটি শীর্ষবিন্দুকে ত্রিভুজের শীর্ষবিন্দু বলা হয়। সব ত্রিভুজের তিনটি কোণের যোগফল ১৮০ ডিগ্রি হয়।
ত্রিভুজের প্রকারভেদ
ত্রিভুজকে সাধারণত দুইভাবে ভাগ করা হয়:
১. বাহুর দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে
বাহুর দৈর্ঘ্যের উপর ভিত্তি করে ত্রিভুজকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়:
- সমবাহু ত্রিভুজ
- সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ
- বিষমবাহু ত্রিভুজ
সমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে?
যে ত্রিভুজের তিনটি বাহু সমান, তাকে সমবাহু ত্রিভুজ বলা হয়। সমবাহু ত্রিভুজের তিনটি কোণও সমান। প্রত্যেকটি কোণের মান ৬০ ডিগ্রি। সবসময় সমবাহু ত্রিভুজের কোণের যোগফল ১৮০° হয়।
সমবাহু ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- প্রতিটি বাহু সমান।
- ক্ষেত্রফল = (√3/4)a²
- তিনটি কোণের যোগফল ১৮০ ডিগ্রি।
- প্রতিটি কোণ 60 ডিগ্রি।
- পরিসীমা = 3a
সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে?
যে ত্রিভুজের দুইটি বাহু সমান, তাকে সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ বলা হয়। সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের বিপরীত কোণ দুটি সমান। এই ত্রিভুজের কোন কোণ ৯০ ডিগ্রি হতে পারে না। সবসময় এর তিনটি কোণের যোগফল ১৮০°। সব সমবাহু ত্রিভুজকে সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ বলা হয়, কারণ এর দুইটি বাহু সমান থাকে।
সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- দুটি বাহু সমান।
- ক্ষেত্রফল = (1/2)bh
- তিনটি কোণের যোগফল ১৮০ ডিগ্রি।
- বিপরীত কোণ দুটি সমান।
- পরিসীমা = (a + 2b)
বিষমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে?
যে ত্রিভুজের কোন বাহু সমান নয়, তাকে বিষমবাহু ত্রিভুজ বলা হয়। এর বাহুগুলি ভিন্ন ভিন্ন মাপের এবং কোণও ভিন্ন ভিন্ন। সবসময় এর তিনটি কোণের যোগফল ১৮০° হয়। বিষমবাহু ত্রিভুজকে ইংরেজিতে "scalene triangle" বলা হয়।
বিষমবাহু ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- তিনটি বাহু অসমান।
- তিনটি কোণ অসমান।
- তিনটি কোণের যোগফল ১৮০ ডিগ্রি।
- ক্ষেত্রফল = √(s(s-a)(s-b)(s-c)), যেখানে অর্ধ পরিসীমা, S= (a+b+c)/2
- পরিসীমা = a + b + c
কোণের ভিত্তিতে
ত্রিভুজকে কোণের ভিত্তিতে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:
১. সমকোণী ত্রিভুজ কাকে বলে?
যদি কোন ত্রিভুজের একটি কোণ সমকোণ হয়, তখন তাকে সমকোণী ত্রিভুজ বলা হয়। অর্থাৎ, যে ত্রিভুজের একটি কোণ ৯০ ডিগ্রি হয়, সেটি সমকোণী ত্রিভুজ।
সমকোণী ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- এই ত্রিভুজের একটি কোণ 90 ডিগ্রি হয়।
- পরিসীমা = a + b + c
- ক্ষেত্রফল = (1/2) * লম্ব * ভূমি
- অন্য দুটি কোণ একেকটি সূক্ষ্মকোণ হয়।
- এই ত্রিভুজের সূক্ষ্মকোণ দুটির যোগফল 90° হবে।
২. স্থূলকোণী ত্রিভুজ কাকে বলে?
যদি কোন ত্রিভুজের একটি কোণ স্থূলকোণ হয়, তাকে স্থূলকোণী ত্রিভুজ বলা হয়। অর্থাৎ, যে ত্রিভুজের একটি কোণ 90 ডিগ্রি থেকে বেশি এবং ১৮০ ডিগ্রি থেকে কম, সেটি স্থূলকোণী ত্রিভুজ।
স্থূলকোণী ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্যগুলি
- স্থূলকোণী ত্রিভুজের একটি কোণ 90°-এর বেশি হবে।
- পরিসীমা = a + b + c
- ক্ষেত্রফল = √(s(s-a)(s-b)(s-c))
- সমস্ত কোণের যোগফল 180°-এর বেশি হবে।
৩. সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ কাকে বলে?
যে ত্রিভুজের প্রতিটি কোণ সূক্ষ্মকোণ হয়, তাকে সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ বলা হয়। অর্থাৎ, যে ত্রিভুজের তিনটি কোণই ৯০° এর চেয়ে কম, সেটি সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ।
সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্য
- পরিসীমা = a + b + c
- ক্ষেত্রফল = √(s(s-a)(s-b)(s-c))
- এগুলোর তিনটি কোণের যোগফল 180°।
- বাহুর দৈর্ঘ্য অনুযায়ী কোণের মানের অনুপাত থাকে।