সাইটোপ্লাজম কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | সাইটোপ্লাজমের কাজ | সাইটোপ্লাজমের বৈশিষ্ট্য | সাইটোপ্লাজমের গঠন | সাইটোপ্লাজমের প্রকার

সাইটোপ্লাজম হলো জীবকোষের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা কোষের অভ্যন্তরে বিভিন্ন কার্যকলাপ পরিচালনা করে। এটি নিউক্লিয়াসের বাইরে থাকে এবং কোষের অঙ্গাণুগুলোকে ধারণ করে। সাইটোপ্লাজম ছাড়া কোষের কার্যক্ষমতা অসম্পূর্ণ। আসুন, সাইটোপ্লাজম কী, এর কাজ ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানি।

সাইটোপ্লাজম কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | সাইটোপ্লাজমের কাজ | সাইটোপ্লাজমের বৈশিষ্ট্য | সাইটোপ্লাজমের গঠন | সাইটোপ্লাজমের প্রকার

সাইটোপ্লাজম কাকে বলে?

সাইটোপ্লাজম হচ্ছে প্রোটোপ্লাজমের একটি অংশ অর্থাৎ প্রোটোপ্লাজমের যে অংশে নিউক্লিয়াসহ বিভিন্ন কোষীয় অঙ্গানু ও বস্তু ধারণ করে তাকে সাইটোপ্লাজম বলে।

সাইটোপ্লাজম হল কোষের প্রোটোপ্লাজমের নিউক্লিয়াসের বাইরের প্রধান অংশ, যা স্বচ্ছ, সমসত্ব এবং জেলি সদৃশ একটি পদার্থ। 

সাইটোপ্লাজমের প্রধান কাজ হলো কোষের অঙ্গাণুগুলোকে ধারণ করা এবং এখানে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন হয়, যেমন সালোকসংশ্লেষণ। 

সাইটোপ্লাজমের ক্ষুদ্র অঙ্গাণুর মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিড, কোষগহ্বর এবং মাইটোকন্ড্রিয়া।

সাইটোপ্লাজমের অভ্যন্তরে কোষের বিভিন্ন জৈবিক ক্রিয়াকলাপের সাথে সংশ্লিষ্ট সজীব বস্তুসমূহকে একত্রে সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু বলা হয়। সাইটোপ্লাজমের ৮০ শতাংশই পানি এবং সাধারণত এটি বর্ণহীন।

১৮৬২ সালে বিজ্ঞানী রুডলফ ভন কলিকার প্রথমবারের মতো সাইটোপ্লাজম শব্দটি ব্যবহার করেন। কোষের অধিকাংশ কার্যাবলী সাইটোপ্লাজমেই সম্পাদিত হয়। 

সাইটোপ্লাজমে ক্যালসিয়াম আয়নের আসা-যাওয়া বিপাকক্রিয়ার সংকেত হিসেবে ঘটে। উদ্ভিদ কোষে কোষগহ্বর ঘিরে সাইটোপ্লাজমের নড়াচড়াকে সাইটোপ্লাজমিক স্ট্রীমিং বলা হয়।

সাইটোপ্লাজমের কাজ

  1. বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় বিক্রিয়া বা বিপাক সাইটোপ্লাজমে ঘটে।
  2. প্রোটোজোয়ার (যেমন – অ্যামিবা) গমনে সাহায্য করে।
  3. কোষের গঠন বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  4. বিভিন্ন কোষীয় অঙ্গানুর কাজে সমন্বয় সাধন ঘটায়।

সাইটোপ্লাজমের বৈশিষ্ট্য

সাইটোপ্লাজম হল একটি অর্ধতরল, অর্ধস্বচ্ছ, দানাদার, সমধর্মী এবং কলয়ডাল তরল পদার্থ। এটি জৈব ও অজৈব পদার্থ, পানি, বিভিন্ন এনজাইম এবং অ্যাসিড নিয়ে গঠিত। 

সাইটোপ্লাজমীয় কেন্দ্রস্থ অপেক্ষাকৃত কম ঘন অঞ্চলকে এন্ডোপ্লাজম এবং মাতৃকার অপেক্ষাকৃত ঘন, কম দানাদার বহিঃস্থ শক্ত অঞ্চলকে এক্টোপ্লাজম বলা হয়। সাইটোপ্লাজমের আপেক্ষিক গুরুত্ব পানি অপেক্ষা বেশি।

সাইটোপ্লাজমের গঠন

সাইটোপ্লাজম প্রধানত ৮০% পানি, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, লিপিড এবং নিউক্লিক অ্যাসিড দ্বারা গঠিত।

পানি: সাইটোপ্লাজমের প্রধান উপাদান, যা রাসায়নিক বিক্রিয়া, পুষ্টি পরিবহন এবং বর্জ্য অপসারণের জন্য অপরিহার্য।

প্রোটিন: সাইটোপ্লাজমে বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়তা করে, যেমন এনজাইম, কাঠামোগত উপাদান এবং সংকেত অণু হিসেবে কাজ করা।

কার্বোহাইড্রেট: কোষের শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে।

লিপিড: কোষের ঝিল্লীর প্রধান উপাদান, যা হরমোন ও ভিটামিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অণুগুলির সংগ্রহস্থল।

নিউক্লিক অ্যাসিড: কোষের জিনগত উপাদান এবং প্রোটিন সংশ্লেষণে অত্যাবশ্যক।

সাইটোপ্লাজমের বিভিন্ন উপাদান একে অপরের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে, যা কোষের বিভিন্ন কার্যকারিতা সম্পাদনে সহায়ক।

সাইটোপ্লাজমের প্রকার

সাইটোপ্লাজম দুই ধরনের:

১. এক্টোপ্লাজম: এটি কোষের সাইটোপ্লাজমের স্বচ্ছ অংশ, যা কোষের আবরণীর নিকটে থাকে।

২. এন্ডোপ্লাজম: এটি কোষের দানাদার অংশ, যা এক্টোপ্লাজম দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং এতে বিভিন্ন কোষীয় অঙ্গানু যেমন নিউক্লিয়াস, মাইটোকনড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, গলগি বস্তু, লাইসোসোম, পার অক্সিজেন, রাইবোজোম, সেন্ট্রিওল, মাইক্রোফিলামেন্ট, ইন্টারমিডিয়েট ফিলামেন্ট, মাইক্রো টিবিউল ইত্যাদি থাকে।

এছাড়াও, এন্ডোপ্লাজমে বিভিন্ন কোষীয় বস্তু যেমন বিভিন্ন ধরনের গহ্বর, তৈল বিন্দু, খাদ্য সার ও বর্জ্য পদার্থ রয়েছে।

সাইটোপ্লাজম সম্পর্কে আরও জানতে আপনি পুরো পোস্টটি পড়েছেন। আপনার যদি আরও জানতে ইচ্ছে হয়, তবে আমাদের ওয়েবসাইটে আরও পোস্ট আছে যা আপনার কাজে লাগতে পারে। StudyTika-তে আরও পোস্ট পড়তে ভুলবেন না!

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.