ট্রাপিজিয়াম একটি বিশেষ ধরনের চতুর্ভুজ। এর আকৃতি এবং বৈশিষ্ট্যগুলো আমাদের গণিতের বিশ্বে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি কি জানেন, ট্রাপিজিয়াম কীভাবে তৈরি হয়? আসুন, আজ আমরা ট্রাপিজিয়াম নিয়ে কথা বলি এবং এর মজার তথ্য জানি!
ট্রাপিজিয়াম কাকে বলে?
ট্রাপিজিয়াম হলো একটি বিশেষ ধরনের চতুর্ভুজ, যেখানে এক জোড়া বিপরীত বাহু সমান্তরাল থাকে।
যে চতুর্ভুজের দুইটি বাহু পরস্পর সমান্তরাল কিন্তু অপর দুইটি বাহু সমান বা অসামান হয়, তাকে ট্রাপিজিয়াম বলা হয়।
সমান্তরাল বাহুদ্বয়কে ট্রাপিজিয়ামের ভূমি হিসেবে গণ্য করা হয়, এবং তাদের মধ্যে দূরত্বকে ট্রাপিজিয়ামের উচ্চতা বলা হয়।
ট্রাপিজিয়ামের বৈশিষ্ট্য
- ট্রাপিজিয়ামের এক জোড়া বিপরীত বাহুদ্বয় পরস্পর সমান্তরাল।
- সমান্তরাল বাহুদ্বয়ের একটিকে ভূমি বলা হয়।
- সমবাহু ট্রাপিজিয়ামের কর্ণ দুইটি পরস্পর সমান।
- আয়তক্ষেত্র, রম্বস, বর্গক্ষেত্র ও সামান্তরিক এক একটি ট্রাপিজিয়াম।
- অপর বাহু দুইটি পরস্পর সমান্তরাল নয়।
- ট্রাপিজিয়ামের অভ্যন্তরে চারটি কোণের সমষ্টি ৩৬০ ডিগ্রি।
- ট্রাপিজিয়ামের উচ্চতা সমান্তরাল বাহু দুইটির মধ্যে দূরত্ব।
- সমদ্বিবাহ ট্রাপিজিয়ামের তির্যকবাহু দুইটি পরস্পর সমান।
ট্রাপিজিয়ামের প্রকারভেদ
ট্রাপিজিয়ামকে বাহু, কোণ ও বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
- বিষমবাহু ট্রাপিজিয়াম
- সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম
- সমকোণী ট্রাপিজিয়াম
বিষমবাহু ট্রাপিজিয়াম
যে ট্রাপিজিয়ামের চারটি বাহু পরস্পর সমান বা অসামান হয় তাকে বিষমবাহু ট্রাপিজিয়াম বলে। এখানে কোনো বাহু সমান নয় এবং এর কর্ণ দুটিও পরস্পর অসামান।
সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম
যে ট্রাপিজিয়ামের তির্যক বাহু দুইটি পরস্পর সমান, তাকে সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম বলে। এই ধরনের ট্রাপিজিয়ামে ভূমি সংলগ্ন দুইটি কোণ সমান এবং কর্ণ দুটি সমান হয়।
সমকোণী ট্রাপিজিয়াম
যে ট্রাপিজিয়ামের দুইটি কোণ সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রি, তাকে সমকোণী ট্রাপিজিয়াম বলা হয়। এখানে দুইটি কোণ ৯০ ডিগ্রিতে থাকলে উপর দুইটি কোণ পরস্পর সম্পূরক কোণ হিসেবে গণ্য হয়।
ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল
ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল হিসাবের সূত্র হলো: ক্ষেত্রফল = ১/২ x (সমান্তরাল বাহুধরের সমষ্টি) x উচ্চতা
এখানে, ট্রাপিজিয়ামের সমান্তরাল বাহুদ্বয় হলো a ও b এবং এদের মধ্যবর্তী দূরত্ব বা উচ্চতা হলো h। সুতরাং, ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল = ১/২ x (a+b) x h বর্গ একক।
উদাহরণ
ধরুন, ট্রাপিজিয়ামের সমান্তরাল বাহুদ্বয় ১০ মিটার ও ১৫ মিটার এবং এদের মধ্যবর্তী দূরত্ব ৫ মিটার। তাহলে এর ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে হবে।
এখানে,
- a = ১০ মিটার
- b = ১৫ মিটার
- উচ্চতা, h = ৫ মিটার
ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল = ১/২ x (a+b) x h = ১ / ২ x (১০+১৫) x ৫ = ৬২.৫ বর্গমিটার।
ট্রাপিজিয়ামের পরিসীমা
ট্রাপিজিয়ামের পরিসীমা হলো এর চারটি বাহুর যোগফল। পরিসীমা = ১ম বাহু + ২য় বাহু + ৩য় বাহু + ৪র্থ বাহু
সুতরাং, পরিসীমা = A + B + C + D এখানে, A, B, C, D হলো এক একটি বাহুর দৈর্ঘ্য।
উদাহরণ
ধরুন, একটি চতুর্ভুজের চারটি বাহুর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ৫ সে.মি, ৮ সে.মি, ১০ সে.মি এবং ৭ সে.মি। তাহলে ট্রাপিজিয়ামের পরিসীমা নির্ণয় করতে হবে।
এখানে,
- ১ম বাহু, A = ৫ সে.মি
- ২য় বাহু, B = ৮ সে.মি
- ৩য় বাহু, C = ১০ সে.মি
- ৪র্থ বাহু, D = ৭ সে.মি
ট্রাপিজিয়ামের পরিসীমা = A + B + C + D = ৫ + ৮ + ১০ + ৭ = ৩০ সে.মি।
সুতরাং, ট্রাপিজিয়ামের পরিসীমা হলো ৩০ সে.মি।
ট্রাপিজিয়াম সম্পর্কে জানতে পেরে আমরা আনন্দিত। আরও মজাদার লেখা পড়তে স্টাডিটিকা.কমে আসুন। সেখানে আরও অনেক কিছু আপনার জন্য অপেক্ষা করছে!