ধাতু কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | ধাতু চেনার উপায় | ধাতুর বৈশিষ্ট্য

ধাতু হলো বাংলা ভাষার প্রাণ। এটি শব্দ ও বাক্যের মূল অংশ, যা আমাদের ভাষার গঠনকে শক্তিশালী করে। প্রতিটি ক্রিয়ার পিছনে একটি ধাতু থাকে, যা সেই ক্রিয়ার বুনিয়াদি ধারণা দেয়। 

কিন্তু ধাতু আসলে কী? ধাতুর বৈশিষ্ট্য, প্রকারভেদ এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের এই পোস্টটি পড়ুন। আশা করি, আপনি নতুন তথ্য শিখতে আগ্রহী হবেন।

ধাতু কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | ধাতু চেনার উপায় | ধাতুর বৈশিষ্ট্য

ধাতু কাকে বলে?

ক্রিয়ার মূল অংশকে ধাতু বলে।

এককথায় ধাতু হলো সেই শব্দ বা অংশ, যা মূলত কোনো ক্রিয়ার বুনিয়াদি ধারণা প্রদান করে। বাংলা ভাষায় বিভিন্ন ক্রিয়া রয়েছে এবং সেই ক্রিয়াগুলির মূল অংশকে ধাতু বলা হয়।

ধাতু হলো ক্রিয়াপদ বিশ্লেষণের মাধ্যমে পাওয়া প্রথম অংশ। যেমন: কর্, যা, খা, পা, বল্ ইত্যাদি।

ধাতুর প্রধান বৈশিষ্ট্য

ধাতুর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

  • অপরিবর্তনীয়: মূল ধাতুর রূপ কখনও পরিবর্তন হয় না। যেমন, 'খা' ধাতু সবসময় 'খায়', 'খাবে' ইত্যাদির মধ্যে অপরিবর্তিত থাকে।
  • একাধিক রূপে ব্যবহৃত: একই ধাতু বিভিন্ন ক্রিয়া ও বাক্য গঠনে ব্যবহার করা যায়। যেমন, 'বস' ধাতুর ব্যবহার 'বসে', 'বসবে', 'বসায়' ইত্যাদি।

ধাতুর প্রকারভেদ

ধাতু প্রধানত তিনটি প্রকারে বিভক্ত:

  1. মৌলিক ধাতু
  2. সাধিত ধাতু
  3. সংযোগমূলক ধাতু

মৌলিক ধাতু

যে ধাতু বিশ্লেষণ করা যায় না, তাকে মৌলিক ধাতু বলা হয়। যেমন: পা, যা, খা, কর্ ইত্যাদি।

বাংলা ভাষায় মৌলিক ধাতুর তিনটি ধরণ রয়েছে:

  • সংস্কৃত ধাতু
  • বাংলা ধাতু
  • বিদেশাগত ধাতু

সংস্কৃত ধাতু

বাংলা ভাষার তৎসম ক্রিয়াপদগুলোর ধাতুকে সংস্কৃত ধাতু বলা হয়। যেমন: অঙ্কন, দৃশ্য, কর্তব্য ইত্যাদি।

বাংলা ধাতু

যেসব ধাতু প্রাকৃত ভাষা থেকে উদ্ভূত হয়ে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে বাংলা ধাতু বলা হয়। যেমন: আঁকা, দেখা, করা, হাসা ইত্যাদি।

বিদেশাগত ধাতু

বিদেশি ভাষা থেকে নেওয়া ধাতুকে বিদেশাগত ধাতু বলা হয়। যেমন: খাটবে, বিগড়ানো, টানা ইত্যাদি।

সাধিত ধাতু

মৌলিক ধাতুর পরে আ-প্রত্যয় যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে সাধিত ধাতু বলা হয়। যেমন: দেখা, পড়া, বলা ইত্যাদি।

সাধিত ধাতু তিন প্রকার:

  • প্রযোজক ধাতু
  • নাম ধাতু
  • কর্মবাচ্যের ধাতু

প্রযোজক ধাতু

মৌলিক ধাতুর পরে আ-প্রত্যয় যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে প্রযোজক ধাতু বলে। যেমন: পড়া, নাচা ইত্যাদি।

নাম ধাতু

বিশেষ্য বা বিশেষণ থেকে আ-প্রত্যয় যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে নাম ধাতু বলে। যেমন: ঘুমা, ধমকা, হাতা ইত্যাদি।

কর্মবাচ্যের ধাতু

যখন বাক্যে কর্তার চেয়ে কর্মের প্রাধান্য থাকে, তখন তাকে কর্মবাচ্যের ধাতু বলা হয়। যেমন: করা, হারা, খাওয়া ইত্যাদি।

সংযোগমূলক ধাতু

বিশেষ্য বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সাথে মৌলিক ধাতু সংযুক্ত হয়ে যে নতুন ধাতু গঠিত হয়, তাকে সংযোগমূলক ধাতু বলা হয়। যেমন: যোগ কর, সাবধান হও ইত্যাদি।

বাংলা ব্যাকরণে ধাতুর গুরুত্ব

ধাতু বাংলা ভাষায় শব্দ ও বাক্য গঠনের মূল উপাদান। ধাতু থেকেই বিভিন্ন শব্দ ও বাক্য গঠন করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, 'পড়' ধাতু থেকে পড়া, পড়ি, পড়বে ইত্যাদি শব্দ গঠিত হয়।

উপসংহার

বাংলা ভাষায় ধাতুর ভূমিকা অপরিহার্য। ধাতু থেকে শব্দ গঠন হয় এবং সেই শব্দের মাধ্যমেই বাক্যের অর্থ প্রকাশ পায়। ধাতু ছাড়া ভাষার কাঠামো অপ্রতুল হয়ে পড়ে।

আশা করি, আপনি ধাতুর গুরুত্ব এবং প্রকারভেদ সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন। বাংলা ভাষায় ধাতু কিভাবে কাজ করে, তা বোঝার জন্য আমাদের সাইটে আরো পোস্ট পড়ুন। নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আমরা নিয়মিত লিখি। ধন্যবাদ!

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.