আপনি কি জানেন, রাসায়নিক যৌগ তৈরি করতে একটি পরমাণু কিভাবে অন্য পরমাণুর সাথে যুক্ত হয়? আজকের এই ব্লগে আমরা জানব যোজনী সম্পর্কে বিস্তারিত। যোজনী কী, এর প্রকারভেদ, এবং কীভাবে এটি পরমাণুর শক্তি এবং বন্ধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে—এসব প্রশ্নের উত্তর পাবেন এখানে। চলুন, যোজনীর রহস্য উদঘাটন করি!
যোজনী কাকে বলে?
যোজনী হল রাসায়নিক যৌগ তৈরি করার সময় একটি পরমাণু অন্য একটি পরমাণুর সাথে ধারণ ক্ষমতার পরিমাপ। সহজ কথায় বলা যায়, একটি পরমাণুর অন্য পরমাণুর সাথে যুক্ত হবার জন্য যে শক্তি প্রয়োজন, সেটাই যোজনী। উদাহরণস্বরূপ, হাইড্রোজেনের যোজনী ১ এবং মিথেনের কার্বনের যোজনী ৪।
যোজনী কত প্রকার ও কি কি?
যোজনী চার প্রকারের হতে পারে। যথা:
- পরিবর্তনশীল যোজনী
- সক্রিয় যোজনী
- সর্বোচ্চ যোজনী
- সুপ্ত যোজনী
যোজ্যতা ইলেকট্রন কাকে বলে
যোজ্যতা ইলেকট্রন হল পরমাণুর রাসায়নিক বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণকারী ইলেকট্রন। এটি সাধারণত কোন পরমাণুর সর্বশেষ শক্তি স্তরের ইলেকট্রনের সংখ্যা দ্বারা নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, পটাশিয়ামের যোজনী ইলেকট্রন একটিমাত্র ইলেকট্রন।
যোজনী মনে রাখার ছন্দ
যোজনী ১
ছন্দ: ফারিয়া করল লেখাপড়া অমানুষ হয়দার সোহেল সিলেটে করল বাড়ি
ফারিয়া = F
করল = Cl
লেখাপড়া = Li
অমানুষ = I
হয়দার = H
সোহেল = Na
সিলেটে = Ag
করল = Cu
বাড়ি = Br
যোজনী ২
ছন্দ: অর্ন্তযামী কেমনে তোমার বল পাব আমি সুলতান মামার কবিতা
অর্ন্ত = O
যামী = Zn
কেমনে = Ca
তোমার = Sn
বল = Be
পাব = Pb
আমি = Fe
সুলতান = S
মামার = Mg
কবিতা = C
যোজনী ৩
ছন্দ: বি এন পি এল ক্রোধে ফিরে
বি = B
এন = N
পি = P
এল = Al
ক্রোধে = Cr
ফিরে = Fe (ফেরাস)
যোজনী ৪
ছন্দ: কাল ছিল যে টিন পাবে সে
কাল = C
ছিল = S
যে = Ge
টিন = P
পাবে = (Missing symbol)
সে = (Missing symbol)
যোজনী ৫
ছন্দ: প্রথা নাই
প্রথা = P
নাই = N
যোজনী বের করার নিয়ম
কোন মৌলের যোজনী নির্ণয় করা সহজ। কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে এটি করা যায়:
- মৌলের সংজ্ঞা দেখে যোজনী নির্ণয়
- অক্সিডেশন টেস্ট ব্যবহার করে
- লুইস স্ট্রাকচার দেখে
- ভ্যালেন্স ইলেকট্রন সংখ্যা দেখে
যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রনের মধ্যে পার্থক্য
যোজনী হল পরমাণুর অন্য একটি পরমাণুর সাথে যুক্ত হবার শক্তি বা সামর্থ্য, আর যোজ্যতা ইলেকট্রন হল সর্বশেষ কক্ষপথের ইলেকট্রন সংখ্যা। একটি মৌলের যোজনী এবং যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন হলেও তারা পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত।
জারণ সংখ্যা কাকে বলে?
জারণ সংখ্যা হল একটি পরমাণু যত ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জন করে আয়ন গঠন করে, সেই সংখ্যা। যেমন, HCl-এ Cl ইলেকট্রন গ্রহণ করে জারণ সংখ্যা -১ এবং H ইলেকট্রন ত্যাগ করে জারণ সংখ্যা +১।
সক্রিয় যোজনী কাকে বলে?
সক্রিয় যোজনী হল যোজনীর একটি প্রকার, যা রাসায়নিক অভিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। যেমন, KMnO4-এ Mn একটি সক্রিয় যোজনী যা অক্সিডাইজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।
সুপ্ত যোজনী কাকে বলে?
সুপ্ত যোজনী হল যোজনীর এমন একটি রূপ, যা সর্বোচ্চ যোজনীর চেয়ে কম। যেমন, O3 যৌগে অক্সিজেনের যোজনী ১, যদিও এর সর্বোচ্চ যোজনী ২।
পরিবর্তনশীল যোজনী কাকে বলে?
পরিবর্তনশীল যোজনী হল যোজনীর এমন একটি রূপ, যা পরিবেশের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। যেমন, সালফারের যোজনী +৬ থেকে +৪-এ পরিবর্তিত হতে পারে।
সর্বোচ্চ যোজনী কাকে বলে?
সর্বোচ্চ যোজনী হল একটি মৌলের সর্বাধিক যোজনী সংখ্যা। এটি মূলত ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যা দ্বারা নির্ধারিত হয়।
আজ আমরা যোজনী এবং এর প্রকারগুলো নিয়ে আলোচনা করলাম। আরও মজার ও শিক্ষামূলক পোস্ট পড়তে Studytika.com-এ ঘুরে আসুন! জ্ঞানার্জনের এই যাত্রায় আপনার পাশে আছি।