অবস্থান্তর মৌল কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | d ব্লক মৌলকে অবস্থান্তর ধাতু বলা হয় কেন?

বিজ্ঞান ও রসায়নের জগতের অজানা অধ্যায়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে অবস্থান্তর মৌল। কিন্তু, অবস্থান্তর মৌল কি? এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ? চলুন, আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি এবং বুঝি কেন এই মৌলগুলো আমাদের চারপাশের জগতের জন্য এত প্রয়োজনীয়। এই পোস্টে আমরা অবস্থান্তর মৌলগুলোর বিভিন্ন দিক, বৈশিষ্ট্য এবং তাদের গুরুত্ব সম্পর্কে জানবো।

অবস্থান্তর মৌল কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | d ব্লক মৌলকে অবস্থান্তর ধাতু বলা হয় কেন?

অবস্থান্তর মৌল কাকে বলে?

যে সব মৌলের d অরবিটাল আংশিক পূর্ণ থাকে অর্থ্যাৎ ইলেকট্রন সংখ্যা (১-৯) হয় (৫ ব্যাতিত) তাদের অবস্থান্তর মৌল বলে।

অবস্থান্তর মৌল হল এমন মৌল যেগুলোর d অরবিটাল আংশিক পূর্ণ থাকে। এই মৌলগুলো ধাতু। তাই এগুলোকে অবস্থান্তর ধাতু বলা হয়। 

অবস্থান্তর ধাতুগুলো পর্যায় সারণির ৩ থেকে ১২ নম্বর কলামে পাওয়া যায়।

IUPAC অনুযায়ী, অবস্থান্তর ধাতু হল এমন একটি উপাদান যার অণুতে অসম্পূর্ণ d উপস্তর থাকে। অর্থাৎ, এই মৌলের ক্যাটায়নে d-উপস্তর অসম্পূর্ণ থাকে।

এখন, একটি মৌল অবস্থান্তর ধাতু হবে যদি:

  • এটি d-ব্লক বা গ্রুপ ৩ থেকে ১২ এর মধ্যে থাকে এবং
  • সুস্থিত আয়নিত অবস্থায় d-উপশক্তিস্তর আংশিক পূর্ণ থাকে।

সুস্থিত ক্যাটায়ন মানে হলো, মৌলটি যখন ইলেকট্রন দেয়, তখন যা থাকে তার ইলেকট্রন বিন্যাস। আর আংশিক d-উপশক্তিস্তর বলতে বোঝানো হচ্ছে, এতে ১০টির কম ইলেকট্রন থাকতে হবে। তবে, কমপক্ষে ১টি ইলেকট্রন থাকা উচিত।

d ব্লক মৌলকে অবস্থান্তর ধাতু বলা হয় কেন?

যদি আমরা পর্যায় সারণির দিকে নজর দিই, তাহলে দেখা যায় d ব্লক মৌলগুলোর একপাশে ধাতু রয়েছে, আর অন্যদিকে অধাতু। মৌলগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন বাম থেকে ডান দিকে গেলে তাদের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়।

যদি বামের ধাতব বৈশিষ্ট্য থেকে ধীরে ধীরে ডানের অধাতব বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তিত হয়, তবে d-ব্লকে অবস্থানরত মৌলগুলোর মধ্য দিয়ে এই পরিবর্তন ঘটে।

উদাহরণ হিসেবে, ধাতুগুলো সাধারণত সক্রিয়, তড়িৎ ধনাত্মক এবং আয়নিক যৌগ তৈরি করে। অন্যদিকে অধাতুগুলো একদম নিস্ক্রিয় হয় এবং ঋণাত্মক যৌগ তৈরি করে। d ব্লক মৌলগুলো ধাতু এবং অধাতুর মধ্যবর্তী বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে।

যদিও d-ব্লক মৌলগুলো অবস্থান্তর ধাতু হিসেবে পরিচিত, কিন্তু সব d-ব্লক মৌল অবস্থান্তর ধাতু নয়। যেমন, Zn, Cd, Hg। এদের ক্যাটায়ন অবস্থায় d-উপশক্তিস্তর পূর্ণ থাকে।

অবস্থান্তর মৌলসমূহের বৈশিষ্ট্য

অবস্থান্তর মৌলগুলো সাধারণত ধাতব প্রকৃতির। সুতরাং, এগুলো তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী। বেশিরভাগ অবস্থান্তর মৌলের যোজনী স্তরে অযুগ্ম ইলেকট্রন থাকে, তাই এরা চুম্বক আকর্ষণ করে।

অবস্থান্তর মৌলগুলো রঙিন যৌগ গঠন করে। এদের d অরবিটালে অযুগ্ম ইলেকট্রন থাকে, যা এই রঙিন যৌগ তৈরি করতে সাহায্য করে।

অবস্থান্তর মৌলসমূহ পরিবর্তনশীল যোজত্যা প্রদর্শন করে এবং জটিল যৌগ গঠন করতে সক্ষম। কারণ তাদের আয়নের বহি স্তরের d অরবিটালে ফাঁকা থাকে এবং একাধিক লিগান্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জটিল যৌগ গঠন করে।

এছাড়া, d ব্লক মৌলগুলো বিভিন্ন জারণ অবস্থায় যায়, কারণ তাদের d অরবিটাল ও s অরবিটালের শক্তি প্রায় সমান।

অবস্থান্তর মৌলগুলোর বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে আপনি নিশ্চয়ই বিস্মিত হয়েছেন। আশা করছি, এই ব্লগ পোস্টটি আপনাদের কাছে তথ্যপূর্ণ ও উপকারী মনে হয়েছে। আরও আকর্ষণীয় বিষয় ও তথ্য জানার জন্য দয়া করে আমাদের ওয়েবসাইটে আরও পোস্ট পড়ুন। আপনার জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করতে আমরা সব সময় প্রস্তুত!

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.