দোয়া কুনুতঃ বিতর নামাজ রাতের একটি বিশেষ নামাজ যা মুসলমানদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। কিন্তু আপনি কি জানেন, বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে দোয়া কুনুত কেন পড়তে হয়? এই দোয়া কীভাবে পড়তে হবে এবং এর মাধ্যমে কী উপকারিতা পাওয়া যায়? এই পোস্টে, আমরা আলোচনা করবো দোয়া কুনুতের অর্থ, তাৎপর্য এবং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। জানুন, কেন এটি আমাদের জীবন ও ইবাদতের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ।
দোয়া কুনুত আরবি ও উচ্চারণ
আরবি:
اللّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِيْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ، وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ، اللّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ، وَلَكَ نُصَلِّيْ وَنَسْجُدُ، وَإِلَيْكَ نَسْعٰى وَنَحْفِدُ، نَرْجُو رَحْمَتَكَ وَنَخْشٰى عَذَابَكَ، إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা ওয়া নুমিনুবিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনি আলাইকাল খাইর; ওয়া নাশকুরুকা ওয়া লা নাকফুরুকা; ওয়া নাখলাঊ ওয়া নাতরুকু মাইঁইয়াফঝুরুকা; আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না'বুদু; ওয়া লাকা নুসাল্লি ওয়া নাসঝুদু; ওয়া ইলাইকা নাসআ ওয়া নাহফিদু; নারঝু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা আজাবাকা; ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মুলহিক্ব।
রাতের নামাজ বিতর এবং দোয়া কুনুত
বিতর নামাজ রাতের বিশেষ একটি ইবাদত। এটি এশার নামাজের পর থেকে শেষ রাত পর্যন্ত আদায় করা যায়। বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য কোনো সুরা মিলানোর পর দোয়া কুনুত পড়া হয়। এই দোয়াটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। চলুন জেনে নেই কেন এবং কীভাবে দোয়া কুনুত পড়া হয়।
বিষয় | বর্ণনা |
---|---|
দোয়া কুনুতের অর্থ | হে আল্লাহ! আমরা আপনারই সাহায্যপ্রার্থী এবং একমাত্র আপনার কাছেই ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা আপনার প্রতি ঈমান এনেছি এবং আপনার ওপর ভরসা করি। |
দোয়া কুনুতের তাৎপর্য | বিপদ-আপদের সময় এই দোয়াটি বিশেষভাবে পাঠ করা হয়। এটি আমাদের ঈমান ও আল্লাহর প্রতি ভরসা পুনঃপ্রকাশ করে। |
বিকল্প দোয়া কুনুত | رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا, হে আমাদের রব্ব! সরল পথ প্রদর্শনের পর আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনে প্রবৃত্ত করবেন না। |
বিতর নামাজ | বিতর নামাজ রাতের বিশেষ একটি ইবাদত, যা এশার পর থেকে শেষ রাত পর্যন্ত আদায় করা যায়। তৃতীয় রাকাতে দোয়া কুনুত পড়া হয়। |
উপসংহার | দোয়া কুনুত আমাদের ইবাদতের অপরিহার্য অংশ। নিয়মিত পাঠ করে আমরা আল্লাহর রহমত ও শান্তি লাভ করতে পারি। |
কুনুত শব্দের অর্থ ও তাৎপর্য
‘কুনুত’ শব্দটি আরবি ভাষায় বিভিন্ন অর্থ বহন করে। এটি নীরবতা, সালাত, কিয়াম এবং ইবাদতের মতো বিষয়কে নির্দেশ করে। এখানে কুনুত বলতে বোঝানো হয়েছে নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা। বিপদ-আপদের সময় এটি বিশেষভাবে পাঠ করা হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে এই দোয়াটি শিখিয়েছেন।
দোয়া কুনুতের অর্থ
অর্থ: হে আল্লাহ! আমরা আপনারই সাহায্যপ্রার্থী এবং একমাত্র আপনার কাছেই ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা আপনার প্রতি ঈমান এনেছি এবং আপনার ওপর ভরসা করি। আমরা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ এবং আপনার নাফরমানদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করি। হে আল্লাহ! আমরা আপনারই ইবাদত করি, নামাজ পড়ি এবং সিজদা করি। আমরা আপনার দয়া আশা করি এবং আপনার শাস্তিকে ভয় করি। নিঃসন্দেহে আপনার শাস্তি কাফিরদের জন্য নির্ধারিত।
বিকল্প দোয়া কুনুত
দোয়া কুনুত পড়তে না জানলে অন্য যেকোনো দোয়া পড়া যায়। এমনকি কোরআনের দোয়া সংবলিত আয়াতগুলোও পড়া জায়েজ। উদাহরণস্বরূপ:
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
উচ্চারণ: রব্বানা লা-তুযিগ ক্বুলুবানা বা’দা ইজ হাদাইতানা, ওয়াহাব লানা মিন লাদুনকা রাহমাতান, ইন্নাকা আন্তাল ওয়াহ্যাব।
অর্থ: হে আমাদের রব্ব! সরল পথ প্রদর্শনের পর আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনে প্রবৃত্ত করবেন না এবং আমাদের অনুগ্রহ করুন। আপনিই দাতা।
উপসংহার
বিতর নামাজ এবং দোয়া কুনুত আমাদের ইবাদতের এক অপরিহার্য অংশ। নিয়মিত দোয়া কুনুত পাঠ করে আমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে পারি এবং তাঁর দয়া ও রহমত লাভ করতে পারি। দোয়া কুনুতের মাধ্যমে আমাদের হৃদয়ে গভীর আধ্যাত্মিক শান্তি আসে। আমাদের সকলকে দোয়া কুনুতের গুরুত্ব অনুধাবন করে তা নিয়মিত পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন। আরও বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের সাইটের অন্যান্য পোস্টগুলো পড়ুন।