এই ব্লগপোস্টে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা নিয়ে একটি রচনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি, রচনা পড়ে আপনি উপকৃত হবেন।
বাংলাদেশের জাতীয় ফুল : শাপলা রচনা ১
সূচনা : শাপলা একটি অতি পরিচিত ও সুন্দর ফুল। এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। বিশ্বের প্রতিটি দেশের কিছু প্রতীক থাকে। এগুলো জাতীয় বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়ে থাকে। যেমন-জাতীয় পতাকা, জাতীয় ফুল, জাতীয় ফল, জাতীয় পশু, জাতীয় পাখি প্রভৃতি। তেমনি বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা, এদেশের একটি প্রতীক।
শাপলা কেন জাতীয় ফুল : শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। বাংলাদেশের নদী-নালা, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়, ডোবা-পুকুরের আনাচে-কানাচে শাপলা এত সুন্দরভাবে ফুটে থাকে যে, এর মতো আর কোনো ফুল বাঙালির হৃদয়ের এত কাছে আসে নি। এ কারণেই শাপলাকে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল হিসেবে গৃহীত করা হয়েছে। এছাড়া শাপলা বিশ্বের একমাত্র ফুল যা বাংলাদেশের মতো আর কোনো দেশে দেখা যায় না। শাপলা ফুল থেকে আলুর মতো বড় বড় ফল জন্মায়, যাকে ‘ভাট’ বলা হয়। গ্রামের মানুষ ভাট থেকে খৈ ও মোয়া তৈরি করে।
প্রকারভেদ : রঙের বিবেচনায় শাপলা সাদা, লাল, নীল, হলুদ, কালচে লাল, বেগুণি লাল, রক্ত বেগুণি, নীল বেগুণি প্রভৃতি রঙের হয়ে থাকে। বাংলাদেশে সাদা, লাল ও নীল এই তিন ধরনের শাপলা বেশি দেখা যায়। অন্যান্য রঙের চেয়ে সাদা শাপলাই বেশি পাওয়া যায়। আমাদের জাতীয় ফুলও তাই সাদা শাপলা।
বর্ণনা : শাপলা লতাগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। জলে জন্মে বলে একে জলজ উদ্ভিদও বলা হয়। শাপলা স্রোতবীহিন জলাশয়েই সাধারণত জন্মে। এর মূল থাকে জলাশয়ের নিচে কাদায়। জলাশযের পানি যত বাড়তে থাকে এর ডাটাও তত বাড়তে থাকে। এর থালার মতো মসৃণ পাতাগুলো গোলাকৃতির ও বড় বড়। এগুলো পানির উপর ভাসতে থাকে। এক-একটি গাছে অনেকগুলো পাতা জন্মে। পানির নিচে গাছের গোড়া থেকে নল বের হয়ে তা এক সময় পানির উপর ভেসে ওঠে।
পরিচয় : পানির নিচে মাটি থেকে প্রথমে মূল বা শিকড় জন্মায়। আর সে শিকড় থেকে সরু নলের মতো একটি দণ্ড পানি ভেদ করে উপরে উঠে আসে এবং পানির উপর সে দণ্ডটি থেকে পাতা বের হয়। পাতা বড় ও পুরু হয়ে পানির উপরে ভাসে। আর মূল থেকে একাধিক শাখা বের হয় যা দেখতে অনেকটা ঝাড়ের মতো। একাধিক শাখাই মূলত নল বা ডাটা। এসব নলের মাথায় কলার মৌচার মতো ফুলের কুঁড়ি ফোটে। এ কুঁড়িটি আস্তে আস্তে ফুঁটতে থাকে। এবং দু-একদিনের মধ্যে সম্পূর্ণ ফুটে যায়। ফুলগুলো পাতার মতো পানির উপর ভাসে। শাপলা ফোটে বর্ষাকালে। শাপলা ফুলের মেলায় প্রকৃতিতে অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়। শাপলা পরিপূর্ণভাবে ফোটার সাথে সাথে পাপড়িগুলো ঝড়ে পড়ে এবং নলের আগায় গোলাকার পানিতে ডুবে যায়। পানি বাড়ার সাথে সাথে শাপলার বৃদ্ধি ঘটে। আর পানি কমার সাথে সাথে নিশ্চিহ্ন হতে থাকে। শীত মৌসুমে খাল-বিলে, নদী-নালায় পানি না থাকার কারণে শাপলা মরে যায়। তবে বিচিগুলো সুপ্ত অবস্থায় থাকে। নতুন বর্ষার আগমনে শাপলার শিকড় থেকে আবার চারা গজায়।
শাপলা ফুলের রূপ : শাপলা সাধারণত বর্ষাকালে ফোটে, যখন বাংলাদেশের মাঠ-ঘাট, খাল-বিল, হাওড়-বাওড় শাপলার গায়ে ঢেকে যায়। চারদিকে বিস্তৃত জলাশয়ে শাপলা ফুলের সমারোহ এক অনন্য সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে। জোৎস্নার রাতে স্নিগ্ধ আলো আর মৃদুমন্দ বাতাসের দোলায় টলমল পানিতে শাপলার হাসি সত্যিই মনোমুগ্ধকর হয়। তখন মনে হয় যেন আকাশের অসংখ্য তারা পানিতে নেমে এসে হাসির ফোয়ারা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই অপরূপ দৃশ্য কখনোই ভুলে যাওয়া যায় না।
উপকারিতা : শাপলা সৌন্দর্য্য বাড়ায় ও শোভা বৃদ্ধি করে। গ্রাম-বাংলায় শিশু-কিশোররা শাপলা ফুল হাতে নিয়ে আনন্দ উপভোগ করে। তারা শাপলার নল দিয়ে মালা গাঁথে। এর নল বা ডাটা তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়। তাছাড়া শাপলা থেকে যে শালুক হয় তা শুকিয়ে খাওয়া যায়।
অপকারিতা : শাপলা অনেক সময় ধানক্ষেতে জন্মায়। শাপলা ধানক্ষেতের ক্ষতি করে। ধানের চারার সঙ্গে শাপলার চারা বাড়লে ধানগাছ আর বাড়তে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে কৃষকদের এই অপরূপ সৌন্দর্য্যে ভরা শাপলা ফুলকে কেটে ফেলতে হয়।
উপসংহার : বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলই জলজ অঞ্চল। বর্ষাকালে তার সম্পূর্ণ রূপ আমরা দেখতে পাই। আর শাপলা জলজ ফুল হিসেবে প্রকৃতির শোভা বর্ধন করে। শাপলা বিনা যত্নে ও বিনা পরিশ্রমেই জন্মে এবং বাংলাদেশে অপরূপ শোভা বর্ধন করে চলেছে। তাই শাপলাকে জাতীয় ফুল হিসেবে বিবেচনা সার্থক ও সঠিক হয়েছে বলে আমার ধারণা।
বাংলাদেশের জাতীয় ফুল : শাপলা রচনা ২
সূচনা : শাপলা একটি অতি পরিচিত এবং সুন্দর ফুল। এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। বিশ্বের প্রতিটি দেশের কিছু প্রতীক থাকে। এগুলো জাতীয় বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়ে থাকে। যেমন- জাতীয় পতাকা, জাতীয় ফুল, জাতীয় ফল, জাতীয় পশু, জাতীয় পাখি প্রভৃতি। তেমনি বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা।
শাপলা কেন জাতীয় ফুল : শাপলা বাংলাদেশের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাঁওড়, ডোবা-পুকুর প্রভৃতির আনাচে-কানাচে এত বেশি ফুটে থাকে যে, এ ফুলের মতো আর কোনো ফুল বাঙালিদের সান্নিধ্যে আসতে পারেনি। সেজন্যই শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল। তা ছাড়া শাপলাই একমাত্র ফুল যা বিশ্বের আর কোনো দেশে আমাদের দেশের মতো দেখা যায় না।
বর্ণনা : শাপলা লতাগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। জলে জন্মে বলে একে জলজ উদ্ভিদও বলা হয়ে থাকে। শাপলা স্রোতবিহীন জলাশয়েই সাধারণত জম্নে থাকে। এর মূল থাকে জলাশয়ের নিচে- কাদায়। জলাশয়ের পানি যতই বাড়তে থাকে এর ডাঁটাও তত বাড়ে। এর পাতা গোলাকৃতির ও বড় বড়। থালার মতেরা মসৃণ পাতাগুলো পানির উপর ভাসতে থাকে। এক-একটি গাছে অনেকগুলো পাতা জন্মে থাকে। পানির নিচে গাছের গোড়া থেকে নল বের হয়ে এবং তা বৃদ্ধি পেয়ে এক সময় পানির উপর ভেসে ওঠে। কুঁড়ি অবস্থায় শাপলা দেখতে অনেকটা কলার মোচার মতো। প্রথমে এ কুঁড়িটি আস্তে আস্তে ফুটতে থাকে এবং দুএকদিনের মধ্যেই তা সম্পূর্ণ ফুটে যায়।
শাপলা ফুলের রং বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কোনোটা সাদা, কোনোটা লাল আবার কোনোটা বেগুনি রঙেরও হয়ে থাকে। তবে সাদা রঙের ফুলই আমাদের দেশের জাতীয় প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শাপলা ফুল থেকে আলুর মতো বড় বড় ফল হয়। একে আমরা ”ভাট” বলে থাকি। গ্রামের মানুষ এ ভাট থেকে খৈ ও মোয়া তৈরি করে।
শাপলা ফুলের রূপ : শাপলা সাধারণত বর্ষাকালে ফোটে। এই সময় বাংলাদেশে মাঠ-ঘাট, নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-দিঘি প্রভৃতি জলাশয় পানিতে পূর্ণ হয় এবং চারদিকে শাপলা ফুলের ছড়াছড়ি হয়। বিস্তীর্ণ জলাশয়ে যখন শাপলা ফুল ফোটে, তখন সেই দৃশ্য এক অপূর্ব সৌন্দর্যের জন্ম দেয়। জোছনারাতের নরম আলোয় শাপলার হাসি ও মৃদু বাতাসের দোলায় টলমল পানিতে তার ছায়া সত্যিই মনোমুগ্ধকর হয়। এমন সময় মনে হয় যেন আকাশের অসংখ্য তারা জলাশয়ে নেমে এসে হাসির ঝর্ণা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই মনোরম দৃশ্য কখনোই ভুলে যাওয়া যায় না।
উপসংহার : শাপলার ডাঁটা অনেকে তরকারি হিসেবে খায়। লাল রঙের শাপলা ফুল ঔষধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। গ্রামবাংলার ছেলেমেয়েরা শাপলা ফুলের মালা গাঁথে। অনেক বিদেশি পর্যটক শাপলা ফুলের রূপ দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। শাপলা বিনা যত্নে ও বিনা পরিশ্রমেই জন্মে এবং বাংলাদেশের অপরূপ শোভা বর্ধন করে চলেছে। তাই শাপলাকে জাতীয় ফুল বিবেচনা সার্থক ও সঠিক হয়েছে বলে আমার ধারণা।
বাংলাদেশের জাতীয় ফুল : শাপলা রচনা ৩
সূচনা :
নদীমাতৃক বাংলাদেশে অসংখ্য ফুল জন্মে। এর মধ্যে শাপলা সবচেয়ে পরিচিত ফুল। আমাদের দেশে সারাবছর প্রচুর শাপলা ফোটে। এটি আমাদের জাতীয় ফুল।
প্রাপ্তিস্থান ও সময়:
শাপলা একপ্রকার জলজ ফুল। বর্ষায় ডুবে যাওয়া জমিতে এবং খাল-বিল-পুকুরে শাপলা জন্মায়। এর মূল থাকে মাটির নিচে। বর্ষার পানির স্পর্শ পেয়ে এর ডাঁটা বের হয়। কোনো যত্ন ছাড়াই শাপলা ফুল প্রকৃতিকে শোভাময় করে তোলে। এর সৌন্দর্য মন ভরিয়ে দেয়।
বর্ণনা :
আমাদের দেশে তিন রকমের শাপলা জন্মে থাকে। যেমন- সাদা, লাল ও নীল । তবে সাদা শাপলাই বেশি দেখা যায়। সেজন্য সাদা শাপলাই আমাদের জাতীয় ফুল। বর্ষাকালে খাল-বিল, পুকুর- ডোবায় শতশত শাপলা ফুটলে মনে হয় যেন তারার মেলা বসেছে। এর সৌন্দর্য তুলনাহীন।
উপকারিতা ও ব্যবহার :
প্রাচীনকাল থেকে শাপলা ফুল বিভিন্ন প্রার্থনা ও বাগান সজ্জার কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। উৎসব এবং আয়োজনে শাপলা ফুলকে সাজসজ্জার জন্য বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। শাপলার ডাঁটা তরকারি হিসেবে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। মাটির নিচে শাপলার গোলাকার মূলকে শালুক বলা হয়, যা সিদ্ধ বা ভাজা করে খাওয়া হয় এবং এটি খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এছাড়াও শাপলা ফুলের গোড়ায় থাকা ‘ঢ্যাপ’ থেকে খই তৈরি করা হয়।
শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল হিসেবে পরিচিত এবং এটি দেশের জনগণের প্রতীক। বাংলাদেশের মুদ্রা, টাকায় এবং বিভিন্ন দলিলপত্রে জাতীয় ফুল শাপলার ছবি বা জলছাপ ব্যবহার করা হয়।
উপসংহার :
বর্ষাকালে শাপলার শোভা আমাদের মুগ্ধ করে। এর চেয়ে সুন্দর ও সুরভিত ফুল বাংলাদেশে অনেক রয়েছে। তবে শাপলার নির্মল শুভ্র রূপ আমাদের মনে প্রশান্তি এনে দেয়। জাতীয় প্রতীক হিসেবে এর রয়েছে বিশেষ মর্যাদা ।
আমাদের ওয়েবসাইট studytika.com-এ আরও অনেক সুন্দর ও সহজ রচনা আছে। সেগুলোও পড়ুন এবং আপনার জ্ঞান বাড়ান।