এই ব্লগপোস্টে বাংলাদেশে জাতীয় পশু বাঘ নিয়ে একটি রচনা দেওয়া হয়েছে। রচনা পড়ে তোমরা সহজে বুঝতে পারবে।
বাংলাদেশের জাতীয় পশু : বাঘ রচনা ১
ভূমিকা : বাংলাদেশের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এদেশের দক্ষিণে অবস্থিত সুন্দরবনে এর অবস্থান। সেখানকার নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণীর মধ্যে অন্যতম স্তন্যপায়ী প্রাণী বাঘ। রয়েল বেঙ্গল টাইগারই সারা বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয় বহন করে।
আকৃতি ও সৌন্দর্য : বাঘের গায়ের রঙ গাঢ় হলুদ থেকে লালচে হলুদ, তাতে লম্বা কালো ডোরা থাকে যা সাধারণত উঁচু এবং পেছনের দিকে বেশি থাকে। পেটের দিকটা সাদাটে রঙের। হলুদ রঙের লেজে অনেকগুলো কালো ডোরা বা দাগ থাকে এবং লেজের আগা কালো দেখায়। কানের পেছনের অংশ কালো রঙের এবং সেখানে একটি স্পষ্ট সাদা দাগও থাকে। বাঘের মাথাসহ দৈর্ঘ্য সাধারণত ১৪০ থেকে ২৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে এবং উচ্চতা ৯৫ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এদের ওজন সাধারণত ১১৫ থেকে ২৮০ কেজির মধ্যে থাকে।
স্বভাব : বাঘ সাধারণত নিঃসঙ্গ। কখনো কখনো জোড়া বেঁধে থাকে। এরা প্রধানত নিশাচর। এরা গরু, মহিষ, হরিণ, বুনো শূকর, সজারু ইত্যাদি শিকার করে খায়। বড় আকারের একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দৈনিক মাংস চাহিদা গড়ে ৮ থেকে ৯ কেজি। এরা নিজের দ্বিগুণ বড় জন্তু শিকার করতে পারে। বাঘিনী একসঙ্গে ২টি থেকে ৫টি বাচ্চা প্রসব করে। গর্ভকাল ১৪ থেকে ১৫ সপ্তাহ। মায়ের যত্নে বাচ্চারা ৪-৫ মাস লালিত-পালিত হয়। বাচ্চা এক বছরেরও বেশি সময মায়ের সাহচর্যে থাকে।
বাসযোগ্য স্থান : বাংলাদেশের জাতীয় পশু বাঘ সহজেই গরম আবহাওয়ায় খাপখাইয়ে নিতে পারে। এরা উষ্ণমণ্ডলীয় অরণ্য, ম্যানগ্রোভ জলাভূমি, পত্রগোচর বন-সর্বত্রই বসবাস করতে পারে। বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, নেপাল, চীন ও পশ্চিম মায়ানমার এদের আবাসভূমি। একসময় বাংলাদেশের সবগুলো বনেই রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছিল। এখন শুধু সুন্দরবনেই এরা বসবাস করে।
বাঘের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা : বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাওয়া, খাবারের অভাব, অবৈধ শিকার এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বর্তমানে বিপন্ন প্রজাতির মধ্যে পড়েছে। বাংলাদেশের সকল বন্যপ্রাণীর মধ্যে এই বাঘই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। তার মৃত চামড়া অনেক মূল্যবান হওয়ায় অবৈধ শিকার বেড়ে গেছে, যা তার অস্তিত্বকে আরও সংকটাপন্ন করছে। সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দর্শন পেলে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের আনন্দ ও মনে স্বস্তি আসে। এই প্রাণী আমাদের শক্তি, সাহস এবং দেশের সৌন্দর্যের এক অনন্য প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। তাই এর সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের দায়িত্ব।
উপসংহার : বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকার যে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করেছে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রাণীসংরক্ষণের প্রতি জনগণের সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন। অতএব, প্রয়োজন অবৈধ শিকার বন্ধ করা, প্রাণীদের সুরক্ষা ও সংখ্যা বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক পরিবেশকে সংরক্ষণ করা। তবেই আমাদের এই জাতীয় পশুসহ সকল বন্যপ্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশের জাতীয় পশু : বাঘ রচনা ২
ভূমিকা :
বাংলাদেশের বনভূমিতে বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু বাস করে। বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত সুন্দরবন নানান প্রজাতির বন্য প্রাণীর আবাসস্থল। রয়েল বেঙ্গল টাইগার এখানকার বন্য প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম স্তন্যপায়ী প্রাণী। রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের জাতীয় পশু।
আকৃতি ও সৌন্দর্য :
রয়ের বেঙ্গল টাইগারের দৈহিক সৌন্দর্য মনোমুগ্ধকর। এর গায়ের বর্ণ গাঢ় হলুদ থেকে লালচে এবং তাতে লম্বা কালো ডোরা থাকে। এই ডোরা উঁচু এবং পেছন দিকে বেশি। পেটের দিকটা সাদাটে। হলুদ রঙের লেজে অনেকগুলো কালো ডোরাকাটা দাগ আর লেজের আগা কালো।
কানের পেছন দিকটা কালো রঙের তাতে একটি স্পষ্ট সাদা দাগ। মাথাসহ বাঘের দৈর্ঘ্য ১৪০ থেকে ২৮০ সেন্টিমিটার, উচ্চতা ৯৫ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার। এদের ওজন ১১৫ থেকে ২৮০ কেজি। তবে বাঘিনীর আকার তুলনামূলক ছোট হয়।
স্বভাব :
রয়েল বেঙ্গল টাইগার সাধারণত একাকী জীবনযাপন করে, তবে মাঝে মাঝে জোড়া বেঁধে থাকতে দেখা যায়। এরা প্রধানত নিশাচর, অর্থাৎ রাতের বেলা সক্রিয় থাকে। বাঘেরা গরু, মহিষ, হরিণ, বুনো শূকর, সজারু ইত্যাদি বড় জন্তু শিকার করে। একটি বড় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দৈনিক মাংসের চাহিদা গড়পড়তা ৮ থেকে ৯ কেজি। তারা এমনকি নিজের দ্বিগুণ আকারের শিকারও ধরতে সক্ষম। বাঘিনী একবারে সাধারণত ২ থেকে ৫টি বাচ্চা প্রসব করে। গর্ভকাল ১৪ থেকে ১৫ সপ্তাহ। মায়ের যত্নে বাচ্চারা প্রায় ৪-৫ মাস লালিত-পালিত হয় এবং এক বছরেরও বেশি সময় মায়ের সঙ্গে থাকে।
আবাসস্থল :
রয়েল বেঙ্গল টাইগার সহজেই গরম আবহাওয়ায় খাপ খাইয়ে নিতে পারে। উষ্ণমণ্ডলীয় অরণ্য, ম্যানগ্রোভ জলাভূমি, পত্রগোচর বন-সর্বত্রই বসবাস করতে পারে। বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, নেপাল, চীন ও পশ্চিম মিয়ানমার এদের আবাসভূমি। এক সময় বাংলাদেশের সবগুলো বনেই রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছিল। এখন শুধু সুন্দরবনেই এরা বসবাস করে।
গুরুত্ব :
বাংলাদেশের সব বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দর্শন পেলে সুন্দরবনে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের নয়ন সার্থক হয়। এই প্রাণী আমাদের শক্তি ও সৌন্দর্যের প্রতীক। মৃত বাঘের চামড়া অত্যন্ত মূল্যবান। এছাড়া রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কারণে সুন্দরবনের বনজ সম্পদ অনেকাংশে রক্ষা পায়।
উপসংহার :
বনাঞ্চল উজাড়, খাবারের অভাব, অবৈধ শিকার ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে আজ রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ অনেক প্রাণী বিপন্নপ্রায় অবস্থায় পৌঁছেছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকার যে আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করেছে, তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। টাইগারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তার প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ করা অপরিহার্য।
আশা করি রচনাটি তোমাদের ভালো লেগেছে। আরও অনেক সুন্দর রচনা পড়তে চাইলে তোমরা আমার ওয়েবসাইট StudyTika.com এ আসতে পারো।