বাংলাদেশের জাতীয় পাখি : দোয়েল রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)

 পরিচিতি এই ব্লগে বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল নিয়ে একটি সুন্দর রচনা দেয়া হয়েছে। আশা করি, সবাই এটি পড়ে ভালো লাগবে এবং সহজে বুঝতে পারবে।

বাংলাদেশের জাতীয় পাখি : দোয়েল রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)

বাংলাদেশের জাতীয় পাখি : দোয়েল রচনা ১

ভূমিকা : সজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা চিরসবুজের দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। বাংলার সবুজ প্রকৃতি জুড়ে গাছের ডালে-ডালে, মাঠে-ঘাটে ও নীলাকাশে ডানা মেলে উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজারো রকমের চেনা-অচেনা পাখি। এসবের মধ্যে দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি। 

আকার ও প্রকৃতি : দোয়েল পাখিটি ছোট আকৃতির হলেও তার চঞ্চল ও অস্থির প্রকৃতি তাকে খুবই প্রাণবন্ত করে তোলে। এই পাখিটি লাফিয়ে লাফিয়ে চলার স্বভাবের কারণে স্থির থাকে খুব কম সময়। গলার নিচ থেকে বুক পর্যন্ত থাকা দুধের মতো সাদা পালক দোয়েলের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে। পা দুটি সরু, ঠোঁট সূচালো এবং পাখা ও লেজের মাঝে কিছু সাদা পালক থাকায় এটি দেখতে খুবই মনোমুগ্ধকর লাগে। এই ছোট্ট দোয়েল পাখির অদ্ভুত সৌন্দর্য সহজেই মানুষের মন কেড়ে নেয়।

প্রজননকাল : এপ্রিল থেকে জুলাই মাস দোয়েল পাখির প্রজননকাল। তখন স্ত্রী দোয়েল ৩ থেকে ৫টি ডিম দেয়। ডিমের রং লালচে বাদামি আভা ও ছোপযুক্ত নীলাভ সবুজ হয়ে থাকে। স্ত্রী দোয়েল ডিমে তা দেয় ও বাচ্চা ফোটায়। 

খাদ্য : দোয়েল পাখি সাধারণত ছোট ছোট পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ ধরে ধরে খায় এবং অনেক সময় মাটি হতে ঠোকরিয়ে ঠোকরিয়ে কেঁচো উঠিয়ে খায়। এরা সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে। 

গানের পাখি : সাধারণত দোয়েলকে গায়ক পাখি বলা হয়। এরা গান গায় এবং আস্তে আস্তে শিসও দেয়। প্রজনন ঋতুতে পুরুষ দোয়েল খুব ভোরে ও পড়ন্ত দুপুর বেলায় সুরেলা গলায় খুব জোরে গান গায়। 

বাসস্থান : দোয়েল গাছের ডালে বাসা বাঁধতে পারে না। এরা সাধারণত গাছের ফোকরে কিংবা ফাটলে খড়-কুটো জমা করে বাসা তৈরি করে। এরা জোড়ায় জোড়ায় বাস করে। বাংলাদেশের সর্বত্রই এই পাখি দেখতে পাওয়া যায়। 

জাতীয় পাখি হিসেবে দোয়েল : দোয়েল বাংলাদেশের জাতীয় পাখি হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে কারণ এর শান্ত, নিরীহ এবং সুমধুর কণ্ঠ বাঙালি মননে বিশেষ প্রভাব ফেলে। দোয়েল পাখির কণ্ঠের মাধুর্য পাখিপ্রেমীদের হৃদয় স্পর্শ করে এবং এর সুন্দর, নির্মল স্বভাব মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রশংসিত। এ পাখির সহজাত সৌন্দর্য ও কোমল চরিত্র বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সঙ্গে খাপ খায়, তাই দোয়েলকে জাতীয় পাখি হিসেবে মর্যাদা দেয়া হয়েছে। দোয়েল পাখির প্রতি মানুষের ভালোবাসা এবং পাখিপ্রেমীদের চাহিদা থেকেই এর গুরুত্ব বেড়েছে।

পোষ মানে : শান্ত প্রকৃতির দোয়েল পাখি পোষ মানে। পোষা পুরুষ দোয়েল শিকার ধরতে খুবই পটু। শিকারী যখন খাঁচা থেকে এনে মুক্ত করে সুবিধাজনক স্থানে ছেড়ে দেয় তখন সে শাখায় বসে শিস দেয়। আর তখনি বন্য দোয়েল তার নিকট ছুটে আসে। তখনি শুরু হয় তুমুল লড়াই। এক পর্যায়ে বন্য দোয়েলটি শিকারির ফাঁদে পড়ে যায়। 

উপসংহার : প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় প্রতিটি পাখিরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দোয়েলও ভারসাম্যপূর্ণ এই প্রাকৃতিক পরিবেশের একটি অন্যতম সদস্য। বাংলার সবুজ-শ্যামল প্রকৃতির সাথে এ পাখিটি মিশে আছে। এর সুললিত মিষ্টি সুরের গান আমাদের সবাইকে মোহিত করে, আমরা মোহাবিষ্ট হই। তাই দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি।

বাংলাদেশের জাতীয় পাখি : দোয়েল রচনা ২

সূচনা :

আকারে ছোট হলেও দোয়েল পাখি দেখতে খুবই সুন্দর ও আকর্ষণীয়। তাই বাংলাদেশে অসংখ্য পাখির মধ্যে দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখির মর্যাদা পেয়েছে।

স্বভাব :

দোয়েল ছোট পাখি। এরা খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। এরা দিনে কয়েকবার গোসল করে থাকে। লেজ প্রায় সব সময়ই উঁচু থাকে। এরা যখন গান গায় তখন এদের লেজ থাকে ঝুলানো আর লেজের পাখনাগুলো থাকে কিছুটা প্রসারিত।

গানের পাখি :

আকারে ছোট হলেও দোয়েল পাখির গান বড় মিষ্টি। এদের গান শুনলে মন আনন্দে মেতে ওঠে, প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এ মনমাতানো প্রাণজুড়ানো গানের জন্যই দোয়েলকে বলা হয় গানের পাখি। এরা বসন্তকালে বেশ আনন্দে মেতে ওঠে। গরমের দিনে এরা বাড়িঘরের আশেপাশে বসে মনের সুখে গান গায়। দোয়েল পাখি অন্য পাখির গানও অনুকরণ করে।

খাদ্য :

বিভিন্ন প্রকার কীটপতঙ্গই দোয়েল পাখির প্রধান খাদ্য। তাছাড়া নরম মাটিতে ঠোঁট দিয়ে খুঁচিয়ে কেঁচো উঠিয়ে এরা আহার করে থাকে । কীটপতঙ্গের মধ্যে তেলাপোকা দোয়েল পাখির সবচেয়ে প্রিয় খাবার ।

বাসস্থান :

দোয়েল পাখি সাধারণত অগভীর জঙ্গলে একাকী বা জোড়ায় থাকতে পছন্দ করে। মানুষের কাছাকাছি এলাকায় এরা বেশি থাকে, কারণ সেখানে নিরাপদ ও খাদ্যের সহজলভ্যতা থাকে। দোয়েল ভালোভাবে শক্ত কোনো বাসা বাঁধতে পারে না, তাই তারা সাধারণত গাছের গুঁড়ির ফাঁক বা ছোটখাটো খোপে বাসা বানায়। এছাড়া তারা পরিত্যক্ত লাইটপোষ্টের মাথায় ঘাস, শিকড়, চুল ইত্যাদি দিয়ে নিজেদের বাসা তৈরি করে, যা তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে।

উপসংহার :

বাংলার সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে এ গানের পাখিটি যেন অভিন্ন হয়ে আছে। এজন্যই দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি ।

 আশা করি রচনাটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমার ওয়েবসাইট StudyTika.com-এ আরও অনেক রচনা পড়তে পারেন। ধন্যবাদ।

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.