ভাবসম্প্রসারণঃ সৎ ঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ, সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

 ✦ ভূমিকা: এই ব্লগপোস্টে রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ — “সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ”। এটি খুব সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে, যেন Class 6 থেকে শুরু করে ‍SSC ও HSC পর্যন্ত সবাই সহজে বুঝতে পারে। পুরো ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে দেখুন, নিশ্চয়ই আপনার উপকারে আসবে।

ভাবসম্প্রসারণঃ সৎ ঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ, সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

সৎ ঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ, সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে

মূলভাব : সামাজিক জীব হিসেবে মানুষকে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সান্নিধ্যে আসতে হয়। ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির চিন্তা, বিশ্বাস প্রবণতা তার ব্যক্তিত্বে প্রভাব ফেলে। সৎ সঙ্গ তাকে জীবনের পরিপূর্ণতার দিকে নিয়ে যায়, অপরপক্ষে অসৎ সঙ্গ তার সুনাম, সাফল্যকে ধ্বংস করে।

সম্প্রসারিত ভাব : ব্যক্তি তার মানসিক ও সামাজিক অভাব পূরণ করার জন্য সঙ্গী সাথীদের সাথে চলাফেরা ও উঠা বসা করে। সঙ্গীদের চরিত্র যদি পবিত্র ও সুন্দর হয় তাহলে তাদের সঙ্গই সৎসঙ্গ। এ ধরনের সঙ্গীর আদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যক্তির নিজস্ব চরিত্র বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায়। ব্যক্তির পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্বের উপর তার নিজের পুরোপুরি দখল সচরাচর থাকে না, সঙ্গ চরিত্র দ্বারা তা অনেকাংশে প্রভাবিত হয়। সৎ সঙ্গের প্রভাবে ব্যক্তির নির্মল চরিত্র নির্মল থাকে এবং তা আরও বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায়। অধিকন্তু সৎ সঙ্গের প্রভাবে অনেক কলুষিত চরিত্রের ব্যক্তিও অনুকরণ ও অনুসরণের পথ অবলম্বন করে নিজের চরিত্রকে নির্মল ও আকর্ষণীয় করে তোলার সুযোগ পায়। শিশুকাল মানব ব্যক্তিত্ব এবং চরিত্রের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে। শিশু তার সঙ্গী ও আশেপাশের পরিবেশকে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখে এবং অনুকরণ করে। তাই শৈশবে যদি শিশুকে ভালো সঙ্গ দেওয়া হয়, তাহলে তার চরিত্র গঠনের জন্য তা একটি বড় সুযোগ হয়ে দাঁড়ায় যা পুরো জীবনের জন্য প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে, অসৎ সঙ্গের ক্ষতি খুব ভয়ানক। যেমন কথা আছে, ‘সঙ্গদোষে কি না হয়’। যদি সঙ্গী অসৎ, নিয়মভঙ্গকারী এবং অনৈতিক হয়, তাহলে তার খারাপ আচরণ শিশুর চরিত্রেও সহজেই প্রতিফলিত হতে পারে। সঙ্গের খারাপ প্রভাব দিয়ে একজন ভালো মানুষও ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে, আর একজন অসৎ মানুষ আরও বেশি কুপ্রভাবের শিকার হয়ে চরিত্রহীন হয়ে পড়তে পারে। একটি ল্যাটিন প্রবাদও এ কথার প্রমাণ দেয়, ‘তুমি যদি খোঁড়াদের সঙ্গে থাকো, তাহলে তুমিও খোঁড়াতে শিখবে।

নিশ্চয়ই এটা একটা অনিবার্য এবং দুঃখজনক পরিণতি।

এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো

মানুষ একাকি বাস করতে পারে না। সে সমাজবদ্ধ হয়ে চলতে ও থাকতে ভালোবাসে। সকলের কাজ-কর্ম, আচার আচরণ, স্বভাব-চরিত্র সব কিছুই সে দেখে, শেখে ও অনুকরণ করে। এভাবে সে যে ধরনের সমাজ ও লোকের মধ্যে বাস করে তার নিজের প্রকৃতিও সেরূপ হয়। আমাদের সমাজে সংসর্গের প্রভাবই সর্বপেক্ষা বেশি। আমি যদি সৎ লোকের সংসর্গে থাকি, তবে তাদের সং স্বভাব ও সৎ কাজ-কর্মের প্রভাব আমার উপর পড়বে এবং আমার স্বভাবও সৎ হয়ে উঠবে। এমন কি অসৎ ব্যক্তিও সৎ সংসর্গে থাকতে থাকতে সৎ হয়ে যায়। জগতে অনেক দৃষ্টান্ত আছে যাতে দেখা যায়, সৎ সংসর্গে দস্যু তার দস্যুবৃত্তি ত্যাগ করেছে। আবার অনেকে ঈশ্বরের একনিষ্ঠ ভক্ত হয়েছে। সৎ সংসর্গের কারণে মানুষের চরিত্রের সুন্দর ও মহৎ দিকগুলো বিকশিত হয় এবং জীবন পূর্ণতা লাভ করে। মনের সমস্ত অশুদ্ধতা মুছে যায়। কিন্তু অসৎ সংসর্গে মানুষ অবনতি ঘটে। তার ন্যায় ও অন্যায়ের বিচারবোধ কমে যায়, এবং ধীরে ধীরে সে দুষ্ট পাথরের মতো শয়তানের পথ ধরে এগিয়ে যায়। অকারণে খারাপ কাজ করতে ও খারাপ চিন্তা করতে করতে মানুষ নিজের ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়। যেমন লোহা সাধারণত পানিতে ভাসে না, কিন্তু যদি কোনো বস্তুতে লোহা জোড়া পড়ে এবং সেই বস্তু পানিতে ভাসে, তাহলে লোহাও পানিতে ভাসে কারণ তার সঙ্গ তাকে প্রভাবিত করেছে। তাই সঙ্গ মানুষের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ; সৎ সঙ্গ মানুষের কল্যাণ করে, আর অসৎ সঙ্গ তাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।

✦ উপসংহার: আপনি যদি এমন আরও সহজ ও সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ পড়তে চান, তাহলে ঘুরে আসুন আমার ওয়েবসাইটে — StudyTika.com। এখানে ক্লাস ৬ থেকে এইচএসসি পর্যন্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ দেওয়া আছে। আরও পড়ুন, আরও শিখুন।

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.