অ্যাডভোকেট ও ব্যারিস্টার এর মধ্যে পার্থক্য [গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য]

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে আইন পেশায় বিভিন্ন উপাধি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে অ্যাডভোকেট এবং ব্যারিস্টার শব্দ দুটি বহুল ব্যবহৃত। তবে অনেকেই এই দুটি পেশাগত উপাধির পার্থক্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেন না। ফলে সাধারণ মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আজকের এই প্রিমিয়াম ব্লগপোস্টে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব অ্যাডভোকেট ও ব্যারিস্টার এর মধ্যে পার্থক্য, তাদের ভূমিকা, দায়িত্ব এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর গুরুত্ব নিয়ে।

অ্যাডভোকেট ও ব্যারিস্টার এর মধ্যে পার্থক্য [গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য]

অ্যাডভোকেট কে?

অ্যাডভোকেট হলেন একজন আইনজীবী যিনি আদালতে তার মক্কেলের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করেন। তিনি আদালতে যুক্তি উপস্থাপন, আইনি নথি দাখিল এবং তার ক্লায়েন্টের অধিকার সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রচেষ্টা চালান। বাংলাদেশের আইনে যারা প্র্যাকটিস করেন তাদের জন্য একমাত্র স্বীকৃত উপাধি হলো অ্যাডভোকেট

  • অ্যাডভোকেটরা সরাসরি মক্কেলের সাথে কাজ করেন এবং তাদের মামলার দায়িত্ব নেন।
  • তারা দেওয়ানি, ফৌজদারি, পারিবারিকসহ বিভিন্ন ধরণের মামলায় আদালতে প্র্যাকটিস করতে পারেন।
  • বাংলাদেশে একজন ব্যারিস্টার হলেও আদালতে প্র্যাকটিস করার জন্য অ্যাডভোকেটশীপ নিতে হয়।

ব্যারিস্টার কে?

ব্যারিস্টার হলেন কমন ল’ (Common Law) বিচারব্যবস্থার একজন আইনজীবী, যাদের মূলত উচ্চ আদালতে মামলা পরিচালনা, আইনি গবেষণা এবং পরামর্শ প্রদানের জন্য বিশেষায়িত করা হয়। ব্যারিস্টাররা সাধারণত যুক্তরাজ্য ও কমনওয়েলথ দেশগুলোতে বেশি পরিচিত।

  • তারা সাধারণত উচ্চ আদালত ও ট্রাইব্যুনালে আইনি যুক্তি উপস্থাপন করেন।
  • ব্যারিস্টাররা প্রায়ই আইনি গবেষণা, খসড়া তৈরি এবং জটিল মামলার কৌশল নির্ধারণে বিশেষজ্ঞ হন।
  • বাংলাদেশে ব্যারিস্টার একটি সামাজিক উপাধি হিসেবে বিবেচিত হলেও, আদালতে কাজ করার জন্য অ্যাডভোকেটশীপ আবশ্যক।

দ্রুত সারসংক্ষেপ

অ্যাডভোকেট

আদালতে মক্কেলের স্বার্থ রক্ষাকারী আইনজীবী। বাংলাদেশে আইন পেশার একমাত্র অফিসিয়াল উপাধি। সরাসরি মক্কেলের সাথে কাজ করেন।

ব্যারিস্টার

কমন ল’ বিচারব্যবস্থার আইনজীবী। উচ্চ আদালত ও জটিল মামলায় বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশে সামাজিক উপাধি হিসেবে প্রচলিত।

অ্যাডভোকেট ও ব্যারিস্টারের মধ্যে তুলনা

বিষয় অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার
সংজ্ঞা যিনি আদালতে তার মক্কেলের স্বার্থ রক্ষার্থে মামলা পরিচালনা করেন এবং সরাসরি ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ রাখেন। কমন ল’ ভিত্তিক দেশে উচ্চ আদালতে বিশেষায়িত আইনজীবী, যিনি জটিল আইনি যুক্তি ও গবেষণায় দক্ষ।
কাজের ক্ষেত্র দেওয়ানি, ফৌজদারি, পারিবারিকসহ প্রায় সব ধরনের মামলা। মূলত উচ্চ আদালত, আন্তর্জাতিক আইন এবং জটিল মামলার কৌশলগত দিক।
বাংলাদেশে অবস্থা একমাত্র স্বীকৃত উপাধি, আদালতে প্র্যাকটিসের জন্য বাধ্যতামূলক। শুধু একটি সামাজিক উপাধি, আদালতে কাজ করতে হলে অ্যাডভোকেটশীপ নিতে হয়।

প্রশ্নোত্তর

বাংলাদেশে কি ব্যারিস্টাররা সরাসরি আদালতে মামলা পরিচালনা করতে পারেন?
না, বাংলাদেশে ব্যারিস্টার হলেও আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য অবশ্যই অ্যাডভোকেটশীপ নিতে হয়।
অ্যাডভোকেট আর ব্যারিস্টারের মধ্যে কে বেশি যোগ্য?
যোগ্যতা নির্ভর করে অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও মামলার ধরন অনুযায়ী। একজন দক্ষ অ্যাডভোকেট বা ব্যারিস্টার—যে-ই হোন না কেন—ভালো আইনজীবী হিসেবে পরিচিতি পান।

সবশেষে বলা যায়, অ্যাডভোকেট ও ব্যারিস্টার উভয়ই আইন পেশার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আদালতে কাজ করার জন্য অ্যাডভোকেটশীপই মূল উপাধি। ব্যারিস্টার একটি সম্মানজনক ডিগ্রি বা উপাধি হলেও সরাসরি আদালতে তার কার্যকারিতা নেই। আইন পেশায় সফল হতে হলে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং সততাই আসল মূলধন।

এ ধরনের আরও শিক্ষামূলক ও তথ্যবহুল পার্থক্য বিষয়ক ব্লগ পড়তে ভিজিট করুন studytika.com

SEO কীওয়ার্ড সাজেশন:
অ্যাডভোকেট ও ব্যারিস্টারের পার্থক্য, অ্যাডভোকেট কাকে বলে, ব্যারিস্টার কাকে বলে, বাংলাদেশে অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশে ব্যারিস্টার, আইন পেশার উপাধি পার্থক্য

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.