অ্যামিলোজ ও অ্যামাইলোপেকটিনের মধ্যে পার্থক্য [গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ]

স্টার্চ বা লিকার প্রধান দুটি উপাদান হলো অ্যামিলোজ এবং অ্যামাইলোপেকটিন। যদিও উভয়ই উদ্ভিদে শক্তি সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়, তাদের গঠন, শোষণ ক্ষমতা এবং ব্যবহারিক বৈশিষ্ট্য কিছুটা ভিন্ন। এই ব্লগপোস্টে আমরা বিস্তারিতভাবে অ্যামিলোজ ও অ্যামাইলোপেকটিনের পার্থক্য ও উদাহরণ তুলে ধরবো।

অ্যামিলোজ ও অ্যামাইলোপেকটিনের মধ্যে পার্থক্য [গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ]

অ্যামিলোজ কি?

অ্যামিলোজ (Amylose) হলো ডি-গ্লুকোজ ইউনিটের একটি সরল চেইন পলিমার। এটি স্টার্চের এক ধরনের পলিস্যাকারাইড যা উদ্ভিদে শক্তি সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অ্যামিলোজ α-1,4-গ্লাইকোসিডিক বন্ধন দ্বারা গঠিত এবং সাধারণত 200 থেকে 1000 গ্লুকোজ এককে নিয়ে তৈরি হয়।

উচ্চ অ্যামিলোজযুক্ত ভাত বা আলু দৃঢ় এবং আলাদা থাকে, যখন কম অ্যামিলোজযুক্ত খাবার নরম এবং স্টিকি হয়। অ্যামিলোজ দ্রবণে আয়োডিন যোগ করলে নীল বা কালো-নীল রঙ দেখায়। এটি অনমনীয় এবং শক্ত, এবং গরম জলে দ্রবণীয় হলেও জেল বা পেস্ট তৈরি করে না।

অ্যামাইলোপেকটিন কি?

অ্যামাইলোপেকটিন (Amylopectin) হলো অত্যন্ত শাখাযুক্ত স্টার্চ পলিমার। এটি α-1,4- এবং α-1,6-গ্লাইকোসিডিক বন্ধনের মাধ্যমে তৈরি এবং প্রতি 20-30 গ্লুকোজ এককে একটি শাখা তৈরি হয়। এটি উদ্ভিদ শক্তির জন্য দ্রবণীয় স্টোরেজ সিস্টেম হিসেবে কাজ করে।

অ্যামাইলোপেকটিন দ্রবণে আয়োডিন যোগ করলে লালচে বাদামী বা পার্পল রঙ দেখায়। এটি নরম এবং গরম জলে দ্রবণীয়, জেল এবং পেস্ট তৈরিতেও সক্ষম। উদাহরণ হিসেবে আলু, ধান, গম, ভুট্টা এবং যবের স্টার্চে ৭৮% পর্যন্ত অ্যামাইলোপেকটিন থাকে।

অ্যামিলোজ

সরল চেইন পলিমার, শক্তি সংরক্ষণের জন্য উদ্ভিদে ব্যবহৃত, গরম জলে দ্রবণীয় তবে জেল তৈরি করে না। আয়োডিনে নীল রঙ প্রদর্শন করে এবং কঠিন ও অনমনীয়।

অ্যামাইলোপেকটিন

উচ্চ শাখাযুক্ত পলিমার, উদ্ভিদে শক্তি সংরক্ষণের জন্য দ্রবণীয়, গরম জলে জেল ও পেস্ট তৈরি করতে পারে, আয়োডিনে লালচে বাদামী রঙ প্রদর্শন করে এবং নরম।

অ্যামিলোজ ও অ্যামাইলোপেকটিনের মধ্যে পার্থক্য

ক্রমিক পার্থক্য অ্যামিলোজ অ্যামাইলোপেকটিন
দ্রবণীয়তা গরম জলে দ্রবণীয় কিন্তু জেল তৈরি করে না গরম জলে দ্রবণীয় এবং জেল বা পেস্ট তৈরি করতে সক্ষম
শোষণ ক্ষমতা দেহে ধীরে শোষিত হয়, সহজে জলে দ্রবীভূত হয় দ্রবণীয় হওয়ায় দ্রুত হজমযোগ্য
শক্তি সংরক্ষণ প্রধান শক্তি সংরক্ষণের মাধ্যম অল্প পরিমাণে শক্তি সংরক্ষণ করে
শাখার গঠন লিনিয়ার, শাখাহীন উচ্চ শাখাযুক্ত, প্রতি 20-30 গ্লুকোজ ইউনিটে শাখা
আয়োডিন প্রতিক্রিয়া নীল বা কালো-নীল রঙ লালচে বাদামী বা পার্পল রঙ

সাধারণ জিজ্ঞাসা

অ্যামিলোজ এবং অ্যামাইলোপেকটিনের প্রধান পার্থক্য কী?

অ্যামিলোজ হলো লিনিয়ার, শক্ত, জেল তৈরি না করা স্টার্চ পলিমার, যেখানে অ্যামাইলোপেকটিন উচ্চ শাখাযুক্ত, নরম এবং গরম জলে জেল বা পেস্ট তৈরি করতে সক্ষম।

উদাহরণস্বরূপ কোন খাবারে এই স্টার্চ পাওয়া যায়?

উদাহরণ হিসেবে, ভাত, আলু, গম, ভুট্টা এবং যবের স্টার্চে অ্যামিলোজ ও অ্যামাইলোপেকটিন উভয় উপাদান থাকে। উচ্চ অ্যামিলোজযুক্ত খাবার দৃঢ় এবং আলাদা থাকে, কম অ্যামিলোজযুক্ত খাবার নরম এবং স্টিকি হয়।

উপসংহারে বলা যায়, অ্যামিলোজ এবং অ্যামাইলোপেকটিন উভয়ই উদ্ভিদে শক্তি সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে তাদের গঠন, শোষণ ক্ষমতা এবং প্রক্রিয়াজাত বৈশিষ্ট্য আলাদা। আরও বিস্তারিত তথ্য এবং স্টার্চ সম্পর্কিত জ্ঞান পেতে ভিজিট করুন studytika.com

SEO কীওয়ার্ড সাজেশন: অ্যামিলোজ ও অ্যামাইলোপেকটিন পার্থক্য, Amylose vs Amylopectin in Bengali, স্টার্চের ধরন, অ্যামিলোজ ব্যবহার, অ্যামাইলোপেকটিন বৈশিষ্ট্য

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.