চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্সের মধ্যে পার্থক্য [গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য]

চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্স — নামের মিলের কারণে অনেকেই এই দুই রোগকে একই ভেবে বসেন। তবে প্রকৃতপক্ষে দুটো ভিন্ন রোগ, যাদের উপসর্গ, সংক্রমণের ধরণ এবং চিকিৎসায় রয়েছে বড় ধরনের পার্থক্য। আজ আমরা বিস্তারিতভাবে দেখব চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্সের মধ্যে পার্থক্য, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই এদের আলাদা করতে পারেন।

চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্সের মধ্যে পার্থক্য [গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য]

চিকেন পক্স (Chicken Pox)

চিকেন পক্স বা জলবসন্ত হলো এক ধরনের ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ, যা সাধারণত গরমের সময়ে বেশি দেখা যায়। প্রথমে হালকা জ্বর, শরীরে ব্যথা, মাথা ঝিমঝিম অনুভূতি দেখা দেয়। এরপর শরীরে ছোট ছোট লালচে দানা বা র‌্যাশ দেখা দেয়, যা ধীরে ধীরে পানি ভর্তি ফোসকায় পরিণত হয়।

  • চিকেন পক্স অত্যন্ত ছোঁয়াচে এবং সংস্পর্শে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
  • ১০-১৫ দিনের মধ্যে সেরে যায়, তবে নিয়ম মেনে চলা খুব জরুরি।
  • শিশু ও দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে।
  • পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে নিউমোনিয়া, এনসেফালাইটিস, সেপসিস ইত্যাদি হতে পারে।

মাঙ্কিপক্স (Monkey Pox)

মাঙ্কিপক্স হলো বিরল এক ভাইরাস সংক্রমণ, যা মূলত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় দেখা যায়। তবে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরের ক্ষত, শ্বাসনালি, এমনকি যৌন সংস্পর্শের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।

  • প্রথমে জ্বর, কাঁপুনি, মাথাব্যথা, পেশি ও অস্থিতে ব্যথা দেখা দেয়।
  • বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো লিম্ফ নোড ফুলে ওঠা, যা চিকেন পক্সে হয় না।
  • ইনকিউবেশন পিরিয়ড ৫–২১ দিন এবং রোগ সেরে উঠতে সময় লাগে প্রায় ২–৪ সপ্তাহ।
  • বর্তমানে এ রোগের নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, তবে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

চিকেন পক্স

দ্রুত ছড়ায়, শিশু ও দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্নদের ঝুঁকি বেশি। সাধারণত ১০-১৫ দিনে সেরে যায়। চুলকানি ও ফুসকুড়ি প্রধান উপসর্গ।

মাঙ্কিপক্স

বিরল হলেও বর্তমানে ছড়িয়ে পড়ছে। ইনকিউবেশন পিরিয়ড দীর্ঘ, সারতে লাগে ২–৪ সপ্তাহ। বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া।

চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্সের মধ্যে পার্থক্য

বিষয় চিকেন পক্স মাঙ্কিপক্স
ইনকিউবেশন সময় সাধারণত ৫–৭ দিনের মধ্যে উপসর্গ প্রকাশ পায়। দ্রুত ফুসকুড়ি ও ফোসকা তৈরি হয়। ৫–২১ দিন পর্যন্ত হতে পারে, অনেক সময় উপসর্গ দেরিতে প্রকাশ পায়।
প্রধান উপসর্গ জ্বর, শরীর ব্যথা, চুলকানি, সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি ও ফোসকা। জ্বর, কাঁপুনি, মাথাব্যথা, পেশি ব্যথা, ফুসকুড়ি এবং লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া।
চিকিৎসা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশেষ চিকিৎসা লাগে না, তবে সঠিক যত্নে ১০–১৫ দিনে সেরে যায়। নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং সময় লাগে ২–৪ সপ্তাহ।
গুরুত্বপূর্ণ দিক অত্যন্ত ছোঁয়াচে, শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়, দাগ ফেলে যেতে পারে। তুলনামূলক বিরল হলেও মারাত্মক হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটে।

প্রশ্নোত্তর (FAQ)

চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্স কি একই ধরনের রোগ?

না, দুটি রোগ আলাদা। যদিও ফুসকুড়ি এবং জ্বরের মতো কিছু মিল রয়েছে, তবে মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে লিম্ফ নোড ফুলে যায়, যা চিকেন পক্সে হয় না।

মাঙ্কিপক্স কতটা মারাত্মক?

বিশেষজ্ঞদের মতে, আফ্রিকায় আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ১০ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও তুলনামূলকভাবে বিরল, তবে এটি অবহেলা করার মতো রোগ নয়।

চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্সের মধ্যে অনেক মিল থাকলেও এদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। বিশেষ করে মাঙ্কিপক্সে লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া বিষয়টি এটিকে আলাদা করে চিহ্নিত করে। তাই সঠিক সচেতনতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরি। আরও স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য জানতে ভিজিট করুন studytika.com

SEO কীওয়ার্ড সাজেশন: চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্স পার্থক্য, Chicken Pox vs Monkey Pox, জলবসন্ত ও মাঙ্কিপক্সের পার্থক্য, চিকেন পক্সের লক্ষণ, মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.