আপনি কি জানেন, একটি কম্পিউটার কেবল স্ক্রিন বা সফটওয়্যার দিয়ে কাজ করে না? কম্পিউটারকে জীবন দানে সাহায্য করে তার ভৌত অংশগুলো, যা আমরা স্পর্শ করতে পারি এবং দেখতে পারি। এগুলোকে আমরা হার্ডওয়্যার বলি। তবে হার্ডওয়্যার কেবল যন্ত্রাংশই নয়, এটি কম্পিউটারকে কাজ করার ক্ষমতা দেয়। এই পোস্টে আমরা হার্ডওয়্যার সম্পর্কে সবকিছু সহজ ভাষায় শিখব। সুতরাং, আসুন ধীরে ধীরে হার্ডওয়ারের জগতে প্রবেশ করি এবং জানি কী কী ধরনের হার্ডওয়্যার আমাদের কম্পিউটারকে সক্ষম করে।
হার্ডওয়্যার কাকে বলে?
একটি কম্পিউটারের সেই সমস্ত ভৌত অংশ বা যন্ত্রাংশকে বোঝায় যা স্পর্শ করা যায় এবং দেখা যায় তাকে হার্ডওয়্যার বলে।
হার্ডওয়্যার হলো কম্পিউটারের ভৌত অংশ বা যন্ত্রপাতি (Physical)। হার্ডওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার কাজ করতে পারে না। হার্ডওয়্যার ব্যবহার করে সফটওয়্যার কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে।
হার্ডওয়্যারের সংজ্ঞা
কম্পিউটার তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশকে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার বলা হয়। হার্ডওয়্যার আমরা দেখতে এবং স্পর্শ করতে পারি। উদাহরণস্বরূপ: কি-বোর্ড, মাউস, মাইক্রোপ্রসেসর, মাদারবোর্ড, ডিস্ক, ডিস্ক ড্রাইভ, মনিটর, প্রিন্টার ইত্যাদি।
হার্ডওয়্যারের আধুনিকীকরণ
সময় অনুসারে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার পরিবর্তিত হচ্ছে। নতুন হার্ডওয়্যার আগের তুলনায় শক্তিশালী এবং ছোট। হার্ডওয়্যারকে কম্পিউটারের দেহ বলা যায়।
কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের প্রকার
কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে প্রধানত নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়:
- ইনপুট হার্ডওয়্যার (Input Hardware)
- প্রসেসিং হার্ডওয়্যার (Processing Hardware)
- স্টোরেজ হার্ডওয়্যার (Storage Hardware)
- আউটপুট হার্ডওয়্যার (Output Hardware)
- কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার (Communication Hardware)
ইনপুট হার্ডওয়্যার
কম্পিউটারকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য যে যন্ত্রপাতি ব্যবহার হয়, তা হলো ইনপুট হার্ডওয়্যার। এগুলো কম্পিউটারে ডেটা দেয় এবং CPU-এর মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত হয়।
উল্লেখযোগ্য ইনপুট হার্ডওয়্যার:
- মাউস (Mouse)
- ডিজিটাইজার (Digitizer)
- লাইটপেন (Lightpen)
- কি-বোর্ড (Keyboard)
- ওএমআর (OMR)
- ওসিআর (OCR)
- এমআইসিআর (MICR)
- স্ক্যানার (Scanner)
প্রসেসিং হার্ডওয়্যার
কম্পিউটার ব্যবহারকারীর চাওয়া ফলাফল পেতে যা কিছু প্রক্রিয়াকরণে সাহায্য করে, তা হলো প্রসেসিং হার্ডওয়্যার। সাধারণত এগুলো কম্পিউটারের সিস্টেম ইউনিটের ভিতরে থাকে।
উল্লেখযোগ্য প্রসেসিং হার্ডওয়্যার:
- মাইক্রোপ্রসেসর (Microprocessor)
- মেমরি (Memory)
- পোর্ট (Port)
- পাওয়ার সাপ্লাই (Power Supply)
- এক্সপানশন স্লট (Expansion Slot)
- রোম চিপ (ROM Chips)
- ভিআরএএম (VRAM)
- বাস (Bus)
- মাদারবোর্ড (Motherboard)
স্টোরেজ হার্ডওয়্যার
প্রক্রিয়াজাতকৃত ডেটা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হার্ডওয়্যার হলো স্টোরেজ হার্ডওয়্যার। এতে ডেটা, তথ্য, নির্দেশাবলি, ছবি, অডিও, ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়।
উল্লেখযোগ্য স্টোরেজ হার্ডওয়্যার:
- হার্ডডিস্ক (Hard Disk)
- চৌম্বক ড্রাম (Magnetic Drum)
- জিপ ড্রাইভ (ZIP Drive)
- ফ্লোপিডিস্ক (Floppy Disk)
- অপটিক্যাল ডিস্ক (Optical Disk)
- সলিড স্টেট ডিভাইস (SSD)
- পেনড্রাইভ (Pendrive)
- ম্যাগনেটিক টেপ (Magnetic Tape)
আউটপুট হার্ডওয়্যার
কম্পিউটারের প্রক্রিয়াজাত ফলাফল প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত হার্ডওয়্যার হলো আউটপুট হার্ডওয়্যার।
উল্লেখযোগ্য আউটপুট হার্ডওয়্যার:
- মনিটর (Monitor)
- ইমেজ সেটার (Image Setter)
- ফিল্ম রেকর্ডার (Film Recorder)
- হেডফোন (Headphone)
- প্রিন্টার (Printer)
- প্লটার (Plotter)
- স্পিকার (Speaker)
- মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর (Multimedia Projector)
কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার
কম্পিউটার বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত অন্য কম্পিউটার বা ডিভাইসের সঙ্গে ডেটা আদান-প্রদানের জন্য যে হার্ডওয়্যার ব্যবহার করে, তা হলো কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার।
উল্লেখযোগ্য কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার:
- মডেম (Modem)
- হাব (Hub)
- রাউটার (Router)
- গেটওয়ে (Gateway)
- নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড (NIC)
- সুইচ (Switch)
- রিপিটার (Repeater)
- ব্রিজ (Bridge)
উপসংহার
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কম্পিউটারের মূল অংশ। ইনপুট, প্রসেসিং, স্টোরেজ, আউটপুট ও কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার একসাথে কাজ করে কম্পিউটারকে কার্যকর করে। আরো বিস্তারিত জানার জন্য StudyTika.com-এ অন্যান্য পোস্টগুলোও পড়ুন।
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার হলো কম্পিউটারের মূল ভিত্তি। ইনপুট, প্রসেসিং, স্টোরেজ, আউটপুট এবং কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার একসাথে কাজ করে কম্পিউটারকে পূর্ণভাবে কার্যকর করে। যদি আপনি আরও বিস্তারিত জানতে চান এবং কম্পিউটার সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে চান, তাহলে অবশ্যই StudyTika.com-এ আমাদের অন্যান্য পোস্টগুলো দেখুন। এখানে প্রতিটি পোস্ট সহজ ও শিক্ষামূলক ভাষায় লেখা, যা আপনাকে নতুন কিছু শেখাবে।