বিশেষণ কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | বিশেষণের গঠন পদ্ধতি | বিশেষণের প্রকারভেদ | বিশেষণের অতিশায়ন

আপনি কি কখনো ভেবেছেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কথাগুলো কত সুন্দরভাবে সাজানো হয়? আমরা যে শব্দগুলো ব্যবহার করি, সেগুলোর মধ্যে অনেকেই আমাদের ভাব, গুণ বা অবস্থা প্রকাশ করে। এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বিশেষণ। এই বিশেষ পদগুলো আমাদের ভাষাকে আরও জীবন্ত ও অর্থবহ করে তোলে। আজকে আমরা সহজ ভাষায় জানব বিশেষণ কাকে বলে, এর ধরন এবং ব্যবহার। কিন্তু সব কিছু একবারে বলব না, পুরো পোস্টটি পড়লে সব রহস্য উদঘাটিত হবে। চলুন, একসাথে শিখি!

বিশেষণ কাকে বলে?(সহজ সংজ্ঞা)

বিশেষণ কাকে বলে?

যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম বা ক্রিয়াপদের অবস্থা, দোষ, গুণ, সংখ্যা, পরিমাণ প্রভৃতি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলা হয়।

উদাহরণ:

চলন্ত গাড়ি,ভাঙা ঘর, অন্ধকার রাত। এখানে ভাঙা, অন্ধকার, চলন্ত শব্দগুলো বিশেষণ।

বিশেষণের গঠন পদ্ধতি

বিশেষণ বিভিন্নভাবে গঠিত হয়:

  • ক্রিয়াজাত: খাবার পানি, অনাগত দিন, হারানো সম্পদ
  • অব্যয়জাত: বড়লোক, আচ্ছা মানুষ, উপরি দেন-পাওনা
  • সর্বনামঙ্গাত: কোথা-কার কে, কবেকার গল্প, স্থায়ী ঠিকানা
  • সমাসসিদ্ধ: আনহারা, চৌচালা ঘর, বেকার
  • অনুকার অন্যয়জাত: টসটসে ফল, তকতকে মেঝে, কলকনে শীত, শনশনে হাওয়া, পিকিধিকি আগুন
  • কৃদন্ত: কৃতী সন্তান, অতীত কাল, জানাশোনা মানুষ, শায়ে-চলা পথ
  • তদ্ধিতান্ত: মেঠো পথ, জাতীয় সম্পদ, নৈতিক বল
  • উপসর্গযুক্ত: অপহৃত সম্পদ, নির্জলা মিথ্যে, নিখুঁত কাজ
  • বিদেশি: লাওয়ারিশ কার, দরপত্তনি তালুক, লাখেরাজ দলিল, নাস্তানাবুদ অবস্থা

বিশেষণের প্রকারভেদ

বিশেষণ প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত:

  1. নাম বিশেষণ
  2. ভাব বিশেষণ

নাম বিশেষণ

যে বিশেষণ সাধারণত কোনো বিশেষ্য বা সর্বনামকে বিশেষিত করে।

বিশেষ্যের বিশেষণ

যে পদ বিশেষ্য পদের গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ প্রকাশ করে। উদাহরণ: মেঘলা দিন, বুদ্ধিমান মানুষ, অসুস্থ লোক।

সর্বনামের বিশেষণ

যে বিশেষণ পদ সর্বনামের গুণ বা প্রকৃতি প্রকাশ করে। উদাহরণ: বোকা তুমি, মূর্খ তুই।

ভাব বিশেষণ

যে পদ সাধারণত বিশেষ্য ও সর্বনাম ছাড়া অন্য কোনো পদকে বিশেষিত করে।

ক্রিয়ার বিশেষণ

যে বিশেষণ পদ ক্রিয়ার গুণ, অবস্থা নির্ণয় করে। উদাহরণ: সে তাড়াতাড়ি লেখে। বাতাস ধীরে বইছে।

বিশেষণের বিশেষণ

যে বিশেষণ পদ অন্য বিশেষণ পদের গুণ বা অবস্থা প্রকাশ করে। উদাহরণ: খুব গরম দুধ, অতি বড়ো নিন্দুক।

অব্যয়ের বিশেষণ

যে পদ অব্যয় পদের গুণ, অবস্থা বা সংখ্যা প্রকাশ করে। উদাহরণ: ঠিক নীচে, শত ধিক।

বাক্যের বিশেষণ

যে বিশেষণ একটি সম্পূর্ণ বাক্যকে বিশেষিত করে। উদাহরণ: দুর্ভাগ্যক্রমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশ সমস্যায়।

বিশেষণের অতিশায়ন

যখন বিশেষণ পদ দুই বা ততোধিক বিশেষ্য পদের মধ্যে তুলনা করে একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ দেখায়। উদাহরণ: পদ্মা দীর্ঘতর, মেঘনা দীর্ঘতম নদী। সূর্য বৃহত্তম, চন্দ্র ক্ষুদ্রতর।

দেখলেন, ভাষা শেখা কত সহজ হতে পারে, শুধু যদি আমরা ধাপে ধাপে শিখি। বিশেষণ আমাদের বাক্যকে আরও প্রাণবন্ত ও অর্থপূর্ণ করে তোলে। আপনি চাইলে আরও অনেক দরকারি বাংলা ব্যাকরণ বিষয়ক তথ্য জানতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইটে। তাই আজই StudyTika.com দেখুন এবং আরও অনেক শিক্ষামূলক পোস্ট পড়ুন। শিক্ষার আনন্দ কখনো থামে না!

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.