প্রকৃতির মাঝে আমরা প্রতিদিন অসংখ্য উদ্ভিদ দেখি 🌿 — কেউ ফুলে ভরা, কেউ ফলের ভারে নুয়ে পড়া। কিন্তু কখনো কি ভেবেছো, এই উদ্ভিদগুলোর বীজ কেমনভাবে রক্ষা পায়? 🤔 কিছু উদ্ভিদের বীজ ফলের ভেতরে লুকিয়ে থাকে, আবার কিছু খোলা অবস্থায় থাকে। আজকের এই পোস্টে আমরা জানব এমন এক বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ সম্পর্কে, যাদের বীজ থাকে সুরক্ষিত ও আবৃত অবস্থায়। জানলে অবাক হবে, এই উদ্ভিদগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত! 🌸 তাহলে চলো, ধীরে ধীরে জেনে নিই এই চমৎকার বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।
আবৃতবীজী উদ্ভিদ কাকে বলে?
আরো বিস্তারিত বললে, যেসব উদ্ভিদের বীজ ফলের ভেতরে আবৃত থাকে, তাদেরকে আবৃতবীজী উদ্ভিদ বলা হয়। এই উদ্ভিদগুলোকে সপুষ্পক উদ্ভিদও বলা হয়, কারণ এদের ফুল হয়। নিষেকের পর ফুলের ডিম্বাশয় ফলে পরিণত হয় এবং ডিম্বক থেকে বীজ তৈরি হয়। উদাহরণস্বরূপ, আম, কাঁঠাল, লিচু হলো আবৃতবীজী উদ্ভিদ।
আবৃতবীজী উদ্ভিদের সংজ্ঞা
যে সব উদ্ভিদের ফুল হয়, বীজ হয় এবং সেই বীজ ফলের ভিতরে আবৃত থাকে, তাদেরকে আবৃতবীজী উদ্ভিদ বলে। ইংরেজিতে একে বলা হয় Angiosperm।
Angiosperm শব্দের উৎপত্তি
Angiosperm শব্দটি এসেছে দুটি গ্রিক শব্দ থেকে — Angeion অর্থ “পাত্র বা আঁধার” এবং spermos অর্থ “বীজ”। তাই Angiosperm শব্দের অর্থ দাঁড়ায় “আবৃত বীজ”।
আবৃতবীজী উদ্ভিদের প্রধান বৈশিষ্ট্য
- বীজ ও ফল: এদের বীজ ফলের ভিতরে থাকে, অর্থাৎ ফল বীজকে ঢেকে রাখে।
 - ফুল: এরা সপুষ্পক উদ্ভিদ, অর্থাৎ এদের ফুল হয়।
 - ডিম্বাশয়: ফুলে একটি ডিম্বাশয় থাকে এবং এর ভিতরে ডিম্বক বা ovule থাকে।
 - শ্রেণিবিভাগ: আবৃতবীজী উদ্ভিদ দুই প্রকার — 
    
- একবীজপত্রী: যেমন ধান, গম, খেজুর।
 - দ্বিবীজপত্রী: যেমন আম, কাঁঠাল।
 
 
আবৃতবীজী উদ্ভিদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম আবৃতবীজী উদ্ভিদ হলো Wolffia microscopia। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ০.১ মিমি (৩০০-৬০০ মাইক্রোমিটার) এবং ওজন প্রায় ১৫০ মাইক্রোগ্রাম।
সবচেয়ে উঁচু আবৃতবীজী উদ্ভিদ হলো ইউক্যালিপ্টাস (Eucalyptus marginata)। এর উচ্চতা প্রায় ৫০০ ফুট এবং এটি মূলত অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া অঞ্চলে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম আবৃতবীজী উদ্ভিদ হলো Wolffia arrhiza (ডাকউইড)।
বিশ্বে আবৃতবীজী উদ্ভিদের প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ২,৮৭,০০০। আর বাংলাদেশে প্রায় ৫,০০০ প্রজাতি পাওয়া যায়।
আবৃতবীজী উদ্ভিদের উৎপত্তি
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রায় ১৩ কোটি বছর আগে ক্রিটেসিয়াস যুগে আবৃতবীজী উদ্ভিদের উৎপত্তি হয়। গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চল, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রথম এদের আবির্ভাব ঘটে। পরে প্রায় ৪ থেকে ৫ কোটি বছরের মধ্যে এরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
এখন পর্যন্ত আবৃতবীজী উদ্ভিদের কোনো জীবাশ্ম পাওয়া যায়নি।
উপসংহার
আবৃতবীজী উদ্ভিদ হলো পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত ও বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদগোষ্ঠী। এদের ফুল, ফল ও বীজ আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই উদ্ভিদের মাধ্যমে আমরা খাদ্য, ওষুধ, কাঠসহ নানা প্রয়োজনীয় জিনিস পাই। 🌿
এই ধরনের আরও সহজ ভাষায় লেখা শিক্ষামূলক লেখা পড়তে ভিজিট করুন StudyTika.com 🌱
আবৃতবীজী উদ্ভিদ শুধু আমাদের চারপাশে নয়, আমাদের জীবনেও এক বিশাল ভূমিকা রাখে 🌾। এদের ফুল, ফল ও বীজ আমাদের খাদ্য, ওষুধ ও পরিবেশের অপরিহার্য অংশ। আশা করি এই সহজ ভাষার লেখাটি পড়ে তুমি সহজে বিষয়টি বুঝতে পেরেছো 🌼। এমন আরও সহজভাবে লেখা শিক্ষামূলক আর্টিকেল পড়তে এখনই ভিজিট করো StudyTika.com 🌱 — শেখো সহজভাবে, জানো নতুন কিছু প্রতিদিন!