অর্থনীতি কাকে বলে? (সহজ ভাবে) | অর্থনীতি কত প্রকার? | অর্থনীতির জনক কে?

অর্থনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আমাদের জীবনের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করব, অর্থনীতি কাকে বলে এবং এর মূলনীতি কী। অর্থনীতির ধারণাগুলি বুঝতে পারলে আপনি জীবনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে সঠিক পথ বেছে নিতে পারবেন। 

অর্থনীতি কাকে বলে?

অর্থনীতি হল একটি সামাজিক বিজ্ঞান যা মানুষের অসীম অভাব এবং সীমিত সম্পদের মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরি করে। অর্থনীতির উদ্দেশ্য হল মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য সীমিত সম্পদকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা। এইভাবে মানুষের অভাব দূর করা সম্ভব।

অর্থনীতি হলো মানুষের প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণ করার জন্য সম্পদ উৎপাদন, বিতরণ ও ব্যবহার করার প্রক্রিয়া। এটি উৎপাদন, ব্যয়, সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করে। সহজ কথায়, অর্থনীতি আমাদের জীবনের দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং আমাদের সম্পদের ব্যবহারকে বোঝায়।

অর্থনীতির ইংরেজি শব্দ হল ‘Economics’, যা এসেছে গ্রিক শব্দ ‘Oikonomia’ থেকে। অর্থনীতি হল মানুষের চাহিদা এবং সম্পদের মধ্যে ভারসাম্য রাখার একটি বিজ্ঞান।

অর্থনীতির সংজ্ঞা

অর্থনীতির সংজ্ঞায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা রয়েছে:

  1. অসীম অভাব: মানুষের চাহিদা সর্বদা অসীম থাকে, কিন্তু সম্পদ সীমিত থাকে।
  2. বিকল্প ব্যবহারযোগ্য সম্পদ: সম্পদগুলি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়।

অর্থনীতি এই দুই ধারণার উপর ভিত্তি করে কাজ করে। অর্থনীতিবিদরা মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য সীমিত সম্পদকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার উপায় খোঁজার চেষ্টা করেন।

অর্থনীতি কত প্রকার?

আধুনিক অর্থনীতিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

  1. ব্যষ্টিক অর্থনীতি: ব্যষ্টিক মানে ক্ষুদ্র। অর্থনীতির এই শাখায় মানুষের ব্যক্তিগত আচরণ এবং প্রতিষ্ঠানের কাজ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
  2. সামষ্টিক অর্থনীতি: সামষ্টিক মানে বৃহৎ। এই শাখায় জাতীয় এবং আঞ্চলিক অর্থনীতির সামগ্রিক কাজের দক্ষতা নিয়ে আলোচনা হয়।

অর্থনীতির জনক কে?

এ্যাডাম স্মিথ-কে ‘অর্থনীতির জনক’ বলা হয়। কারণ তিনি অর্থনীতিকে একটি স্বতন্ত্র বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। আগে অর্থনীতিকে রাজনীতির একটি অংশ হিসেবে ভাবা হতো। এ্যাডাম স্মিথের বিখ্যাত বই “An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations” ১৭৭৬ সালে রচিত হয়। এখানে বলা হয়েছে, “Economics is Science of wealth”।

অর্থনীতির (১০)দশটি নীতি

অর্থনীতি একটি জটিল বিষয়। তবে এর কিছু মৌলিক নীতি আছে, যেগুলো বোঝা সহজ। এই নীতিগুলো মোট দশটি ভাগে ভাগ করা যায়:

  1. আদান-প্রদানের নীতি: মানুষের মধ্যে আদান-প্রদান একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আমরা যখন কিছু পাই, তখন অন্য কিছু ছাড়তে হয়।
  2. সুযোগ খরচের নীতি: যখন একটি সুযোগ গ্রহণ করি, তখন অন্য একটি সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
  3. প্রান্তিক চিন্তাভাবনার নীতি: মানুষ সর্বদা ভালো সিদ্ধান্ত নিতে চায়। এই সময় প্রান্তিক সুবিধা এবং খরচ বিবেচনা করে।
  4. প্রণোদনা প্রতিক্রিয়ার নীতি: মানুষ প্রণোদনার দ্বারা প্রভাবিত হয়। পুরস্কার পেলে মানুষ আরও কিছু করে এবং শাস্তি পেলে কম করে।
  5. বাণিজ্যের সুবিধার নীতি: বাণিজ্য দুই পক্ষের জন্য লাভজনক।
  6. বাজার ব্যবস্থার নীতি: বাজার ব্যবস্থা অর্থনৈতিক কার্যক্রম সংগঠিত করতে সাহায্য করে।
  7. সরকারের নীতি: সরকার বাজার ব্যবস্থার কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে।
  8. উৎপাদনশীলতার নীতি: মানুষের জীবনযাত্রার মান নির্ভর করে দ্রব্য এবং সেবা উৎপাদনের সক্ষমতার উপর।
  9. মুদ্রার সরবরাহের নীতি: সরকার অতিরিক্ত মুদ্রা ছাপালে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়।
  10. মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্বের নীতি: সমাজে সল্প মেয়াদে মূল্যস্ফীতি এবং বেকারত্বের মধ্যে সম্পর্ক থাকে।
আশা করি, আপনি অর্থনীতির মৌলিক ধারণাগুলি বুঝতে পেরেছেন। এটি আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আরও তথ্য ও শিক্ষামূলক বিষয়বস্তু পেতে আমাদের অন্যান্য পোস্টগুলি পড়ুন। আপনার জ্ঞানকে বিস্তৃত করতে আমাদের সাথে থাকুন!

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.