টিস্যু কাকে বলে: স্বাগতম! আজ আমরা "টিস্যু বা কলা কাকে বলে?" এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। আপনি কি জানেন, আমাদের দেহের বিভিন্ন অংশ কীভাবে কাজ করে? আজকের পোস্টে, আমরা জানব টিস্যু কী, এটি কীভাবে তৈরি হয় এবং এটি আমাদের দেহে কিভাবে কাজ করে। সহজভাবে বললে, আমরা শিখব কোষগুলো একসাথে হয়ে টিস্যু তৈরি করে। চলুন, আমরা টিস্যুর এই বিষয়গুলো সহজে বুঝে নেই!
টিস্যু বা কলা কাকে বলে?
একই উৎস থেকে উৎপন্ন হওয়া কতগুলো কোষ যদি কোনো নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করে থাকে, তবে তাকে টিস্যু বলে।
যে টিস্যু আমাদের দেহের খোলা অংশগুলো ঢেকে রাখে এবং দেহের ভিতরের আবরণ তৈরি করে, তাকে আবরণী টিস্যু বলা হয়।
প্রতিটি জীবদেহ অনেক ধরনের কোষ দ্বারা তৈরি। এসব কোষের কাজ আলাদা আলাদা। কাজের কারণে কোষগুলো বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে।
তবে, একই আকৃতি ও একই কাজের কিছু কোষ একত্রে হলে তাদেরকে টিস্যু বলা হয়।
অর্থাৎ, একই ধরনের কাজ করার জন্য যদি কিছু কোষ একই স্থান থেকে জন্ম নেয় এবং একত্রে থাকে, তখন তাদের টিস্যু বলা হয়।
এমন টিস্যু উদ্ভিদ ও প্রাণীর উভয়ের মধ্যে দেখা যায়।
উদ্ভিদ টিস্যু কত প্রকার ও কি কি?
উদ্ভিদ টিস্যু প্রধানত দু'প্রকার।:
- ভাজক টিস্যু
- স্থায়ী টিস্যু
ভাজক টিস্যু কাকে বলে?
যে টিস্যু বিভাজনে সক্ষম কোষ দ্বারা গঠিত, তাকে ভাজক টিস্যু বলা হয়। ভাজক টিস্যুর কোষগুলোকে ভাজক কোষ বলা হয়।
গঠন
ভাজক টিস্যু সাধারণত আয়তাকার, খুব ক্ষুদ্র, ডিম্বাকার বা বহুভুজাকার হয়ে থাকে। এদের কোষে বেশি পরিমাণ সাইটোপ্লাজম থাকে এবং এতে কোনো গহ্বর থাকে না অথবা খুবই ছোট। এদের নিউক্লিয়াস বড় এবং কোষের প্রাচীর পাতলা হয়। দুইটি কোষের মধ্যে আন্তকোষীয় ফাঁক থাকে না।
ভাজক টিস্যুর অবস্থান
সাধারণত উদ্ভিদ দেহের যে স্থানে উদ্ভিদ বৃদ্ধি পায়, যেমন মূল, কান্ড ও পাতার অগ্রভাগে থাকে।
ভাজক টিস্যুর কাজ
- ভাজক টিস্যুর বিভাজনের কারণে উদ্ভিদের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ এরা লম্বা হয় এবং এদের ব্যাসও বাড়ে।
- ভাজক টিস্যু থেকে স্থায়ী টিস্যু তৈরি হয়।
ভাজক টিস্যুর শ্রেণীবিভাগ
উৎপত্তি, অবস্থান, কাজ, বিভাজন ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে ভাজক টিস্যু বিভিন্নভাবে ভাগ করা হয়।
উৎপত্তি অনুসারে ভাজক টিস্যুর প্রকারভেদ
উৎপত্তি অনুসারে ভাজক টিস্যু দুই প্রকার:
- প্রাথমিক ভাজক টিস্যু
- সেকেন্ডারী ভাজক টিস্যু
প্রাথমিক ভাজক টিস্যু
যে ভাজক টিস্যু উদ্ভিদের প্রভাবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে প্রাথমিক ভাজক টিস্যু বলে। উদ্ভিদের মূল, কান্ড ও পাতায় এই টিস্যু থাকে। এদের বিভাজনের ফলে উদ্ভিদ দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়।
সেকেন্ডারী ভাজক টিস্যু
সাধারণত স্থায়ী টিস্যু বিভাজন ক্ষমতাহীন। তবে কিছু স্থায়ী টিস্যুর কোষ বিভাজন করে যে ভাজক টিস্যু তৈরি হয়, তাকে সেকেন্ডারী ভাজক টিস্যু বলা হয়।
অবস্থান অনুসারে ভাজক টিস্যুর প্রকারভেদ
অবস্থান অনুসারে প্রাথমিক ভাজক টিস্যুকে তিনভাগে ভাগ করা হয়:
- শীর্ষস্থ ভাজক টিস্যু
- ইন্টারক্যালারী বা নিবেশিত ভাজক টিস্যু
- পার্শ্বীয় ভাজক টিস্যু
শীর্ষস্থ ভাজক টিস্যু
যে ভাজক টিস্যু উদ্ভিদের মূল, কান্ড বা শাখার শীর্ষে থাকে, তাদের শীর্ষস্থ ভাজক টিস্যু বলা হয়।
ইন্টারক্যালারী বা নিবেশিত ভাজক টিস্যু
যে ভাজক টিস্যু দুটি স্থায়ী টিস্যুর মাঝখানে থাকে, তাকে ইন্টারক্যালারী বা নিবেশিত ভাজক টিস্যু বলা হয়।
পার্শ্বীয় ভাজক টিস্যু
যে ভাজক টিস্যু উদ্ভিদের মূল বা কান্ডের পার্শ্ব বরাবর লম্বাভাবে থাকে, তাদের পার্শ্বীয় ভাজক টিস্যু বলা হয়।
স্থায়ী টিস্যু কাকে বলে
ভাজক টিস্যু থেকে তৈরি যে টিস্যু বিভাজনে অক্ষম, তাদের স্থায়ী টিস্যু বলা হয়।
সরল টিস্যু
যে স্থায়ী টিস্যু একই প্রকার কোষ দ্বারা তৈরি এবং একই কাজ সম্পন্ন করে, তাকে সরল টিস্যু বলা হয়।
জটিল টিস্যু
এ টিস্যুর কাজ হলো মাটি থেকে পানি ও লবণ নিয়ে আসা এবং পাতায় খাদ্য তৈরি করা।
ক্ষরণকারী টিস্যু
উদ্ভিদে বিশেষ কাজ করার জন্য কিছু টিস্যু থাকে, যেগুলো থেকে নানা রকম উৎসেচক ও বর্জ্য পদার্থ নিঃসৃত হয়।
এটি ছিল টিস্যুর বিষয়ে আমাদের সহজ আলোচনা। আশা করি, আপনি ভালো কিছু শিখেছেন! আমাদের আরও পোস্ট পড়তে ভুলবেন না। আমাদের ওয়েবসাইটে আরও অনেক মজার বিষয় আছে, সেগুলোও দেখে নিন। ধন্যবাদ!