তাপ সঞ্চালন কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | তাপ সঞ্চালনের প্রকারভেদ | তাপ সঞ্চালনের কয়টি প্রক্রিয়া ও কি কি

তাপ সঞ্চালন কাকে বলে: তাপ সঞ্চালনের ধারণাটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কি জানেন, গরম কোনো বস্তু শীতল বস্তুতে তাপ স্থানান্তর করে? অথবা সূর্যের তাপ কীভাবে আমাদের কাছে পৌঁছে? এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে, তাপ সঞ্চালনের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা সহজভাবে তাপ সঞ্চালনের মূল ধারণা এবং তার প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করব। আরও এমন শিক্ষামূলক পোস্ট পড়তে, অবশ্যই আমাদের সাইট studytika.com এ ঘুরে আসুন।

তাপ সঞ্চালন কাকে বলে?

যখন দুটি বস্তু একসাথে থাকে এবং তাদের মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য থাকে, তখন উষ্ণ বস্তু থেকে শীতল বস্তুতে তাপ যায়। একইভাবে, একটি বস্তুর বিভিন্ন অংশে তাপমাত্রার পার্থক্য থাকলেও উষ্ণ অংশ থেকে শীতল অংশে তাপ সঞ্চালিত হয়। তাপের এই চলাচলকেই বলা হয় তাপ সঞ্চালন

তাপ সঞ্চালনের প্রকারভেদ

তাপ সঞ্চালন তিনটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়:

  • পরিবহণ (Conduction)
  • পরিচলন (Convection)
  • বিকিরণ (Radiation)

পরিবহণ কাকে বলে?

যখন তাপ কোনাে পদার্থের এক অংশ থেকে অন্য অংশে স্থানান্তরিত হয়, কিন্তু পদার্থের কণা স্থান পরিবর্তন করে না, তখন সেই প্রক্রিয়াকে পরিবহণ বলা হয়। সাধারণত, কঠিন পদার্থে এই প্রক্রিয়া ঘটে।

পরিচলন কাকে বলে?

পরিচলন হল সেই প্রক্রিয়া যেখানে পদার্থের উত্তপ্ত কণাগুলি নিজেরা তাপ নিয়ে শীতল স্থানে চলে যায়। তরল এবং গ্যাসে পরিচলনের মাধ্যমে তাপ সঞ্চালন ঘটে।

বিকিরণ কাকে বলে?

বিকিরণ হল সেই প্রক্রিয়া যেখানে তাপ কোনাে মাধ্যম ছাড়াই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সঞ্চালিত হয়। সূর্যের তাপ পৃথিবীতে এই পদ্ধতিতে আসে।

তিন প্রকার তাপ সঞ্চালনের পার্থক্য

  • পরিবহণ ও পরিচলনের জন্য মাধ্যম দরকার, কিন্তু বিকিরণের জন্য মাধ্যম দরকার হয় না।
  • পরিবহণে কণাগুলি স্থান পরিবর্তন করে না, পরিচলনে করে, আর বিকিরণে কণার স্থানচ্যুতি প্রয়োজন হয় না।
  • পরিবহণ ও পরিচলনে তাপ বাঁকা বা সোজা পথে যেতে পারে, কিন্তু বিকিরণে সবসময় সরলরেখায় যায়।
  • পরিবহণ ও পরিচলনে মাধ্যম উত্তপ্ত হয়, কিন্তু বিকিরণে হয় না।
  • পরিবহণ ও পরিচলন ধীর, কিন্তু বিকিরণ দ্রুত।

তাপ পরিবাহিতা কাকে বলে?

পদার্থের তাপ সঞ্চালনের ক্ষমতাকে তাপ পরিবাহিতা বলে। ধাতুর তাপ পরিবাহিতা বেশি, আর কাঠ বা প্লাস্টিকের মতো পদার্থের কম। তাপ পরিবাহিতা অনুযায়ী পদার্থ দুই ভাগে বিভক্ত:

  • তাপ পরিবাহী (Thermal Conductor) যেমন তামা,লোহা।
  • তাপ কুপরিবাহী (Thermal Insulator) যেমন উল, কাঠ, কাগজ।

তাপ পরিবাহিতার উদাহরণ

  • কেটলির হাতলে বেত পেঁচানো থাকে যাতে তাপ না লাগে কারণ বেত তাপ কুপরিবাহী।
  • তামা বা অ্যালুমিনিয়াম থেকে রান্নার বাসন তৈরি করা হয় কারণ এগুলো তাপের সুপরিবাহী।
  • উল বা পশমের কাপড় শীতকালে গরম রাখে কারণ এগুলো তাপ কুপরিবাহী।

উপসংহার

তাপ সঞ্চালন সম্পর্কে এই আলোচনা শেষ হলো। যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন!

তাপ সঞ্চালনের বিভিন্ন পদ্ধতি এবং তাদের পার্থক্যগুলো আজ আমরা খুব সহজ ভাষায় বুঝলাম। তাপ সঞ্চালনের এই প্রক্রিয়াগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আশা করি, এই পোস্টটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, কমেন্ট করতে ভুলবেন না! আরও বিস্তারিত জানতে এবং নতুন নতুন বিষয় পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট studytika.com এ অন্যান্য পোস্টগুলো পড়ুন।

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.