সমাজবিজ্ঞান কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা | সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়

প্রিয় পাঠক, আজ আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি—সমাজবিজ্ঞান। সমাজবিজ্ঞান আমাদের সমাজের গঠন, সম্পর্ক এবং পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করে। এটি এমন একটি বিজ্ঞান, যা আমাদের চারপাশের মানুষ ও তাদের আচরণের মূলে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। 

সমাজবিজ্ঞানের অধ্যয়ন করলে আমরা বুঝতে পারি কিভাবে মানুষ একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে এবং কিভাবে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা যায়। চলুন, সমাজবিজ্ঞানের জগতে প্রবেশ করি এবং এর অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো আবিষ্কার করি!

সমাজবিজ্ঞান কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা | সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়

সমাজবিজ্ঞান কাকে বলে?

সমাজবিজ্ঞানের ইংরেজি শব্দ 'Sociology' এসেছে ল্যাটিন শব্দ 'Societus' থেকে। 'Societus' মানে সমাজ এবং 'Logos' মানে বিজ্ঞান বা জ্ঞান। অর্থাৎ সমাজবিজ্ঞান বলতে সমাজ সম্পর্কিত বিজ্ঞান বোঝায়।

ফ্রান্সের দার্শনিক Auguste Comte 1837 সালে 'Sociology' শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। তাই Auguste Comte-কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। এছাড়াও, স্পেনসার, এমিল দুর্খেইম, এবং ম্যাক্স ওয়েবার সমাজবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।

সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা

বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী সমাজবিজ্ঞানকে ভিন্ন ভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। নিচে কিছু সংজ্ঞা দেওয়া হলো:

  • Auguste Comte: সমাজবিজ্ঞান একটি ইতিবাচক বিজ্ঞান।
  • Ogburn and Nimkoff: সমাজবিজ্ঞান সামাজিক জীবনধারাকে অধ্যয়ন করে।
  • Max Weber: সমাজবিজ্ঞান সামাজিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করে।
  • Park: সমাজবিজ্ঞান মানবগোষ্ঠীর আচরণের বিজ্ঞান।

সংক্ষেপে, সমাজবিজ্ঞান এমন একটি বিজ্ঞান যা সমাজের বিভিন্ন দিক এবং মানুষের জীবনধারা নিয়ে গবেষণা করে।

সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়

সমাজবিজ্ঞান হল সমাজ সম্পর্কিত বিজ্ঞান। এটি সমাজের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী এই বিষয়গুলো ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করেছেন।

১. সমাজ বা দলের বৈজ্ঞানিক আলোচনা

সমাজবিজ্ঞান সমাজ কিভাবে সৃষ্টি হয় এবং গোষ্ঠীগুলোর কার্যাবলী কিভাবে পরিচালিত হয় তা বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে আলোচনা করে।

২. পারস্পরিক সম্পর্ক

সমাজবিজ্ঞানে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক কিভাবে গড়ে ওঠে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরিবার, বন্ধুত্ব ইত্যাদি সম্পর্ক কীভাবে তৈরি হয় এবং তারা কিভাবে কাজ করে তা সমাজবিজ্ঞানের বিষয়।

৩. সামাজিক সমস্যা

সমাজের নানা সমস্যা যেমন দারিদ্র্য, বেকারত্ব, এবং জাতিগত সমস্যা সমাজবিজ্ঞানে আলোচিত হয়। এই সমস্যাগুলোর কারণ ও সমাধান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

৪. সামাজিক কাঠামো

প্রত্যেক সমাজের একটি নির্দিষ্ট কাঠামো থাকে। সমাজবিজ্ঞানে এই কাঠামো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়, যা সমাজের গঠন ও কার্যক্রম বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৫. সামাজিক পরিবর্তন

সমাজবিজ্ঞানে সমাজের পরিবর্তনশীলতা নিয়েও আলোচনা করা হয়। প্রাচীন থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত সমাজ কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং বর্তমানে কিভাবে পরিবর্তন হচ্ছে তা সমাজবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

৬. সামাজিক স্তরবিন্যাস এবং গতিশীলতা

সমাজে বিভিন্ন স্তরবিন্যাস থাকে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর অবস্থান ও সামাজিক পরিবর্তন নিয়ে সমাজবিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়। ব্যক্তি প্রচেষ্টার মাধ্যমে সামাজিক মর্যাদা পরিবর্তিত হতে পারে, যা সমাজের গতিশীলতার অংশ।

এখন আমরা বুঝতে পারি সমাজবিজ্ঞান আমাদের সমাজের নানা দিক ও সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করে। এটি আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। আশা করি, আপনি সমাজবিজ্ঞানের এই ধারণাগুলো থেকে নতুন কিছু শিখেছেন। আমাদের ওয়েবসাইটে আরও তথ্যপূর্ণ পোস্ট পড়তে ভুলবেন না!

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.