সমাস কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | সমাসের বিভিন্ন সংজ্ঞা | সমাসের প্রকারভেদ

প্রিয় পাঠক, আজ আমরা আলোচনা করব সমাসের বিষয়ে। সমাস মানে হলো দুটি বা তার বেশি শব্দ একসাথে মিলিয়ে নতুন একটি শব্দ তৈরি করা। এটি আমাদের ভাষাকে সমৃদ্ধ করে এবং বাক্যে অর্থকে সহজ করে তোলে। 

উদাহরণ হিসেবে, "বটের তলা" থেকে "বটতলা" কীভাবে তৈরি হয়, সেটাই আমরা জানবো। আশা করি, তোমরা পুরো পোস্টটি পড়বে এবং সমাস সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী হবে।

সমাস কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | সমাসের বিভিন্ন সংজ্ঞা | সমাসের প্রকারভেদ

সমাস কাকে বলে?

দুই বা তার বেশি শব্দ একসঙ্গে মিলিত হয়ে নতুন একটি শব্দ তৈরি করাকে সমাস বলে। 

সমাস মানে হলো শব্দগুলোকে সংক্ষেপে একসাথে আনা। যখন কিছু শব্দের অর্থ একসাথে মিলে নতুন অর্থ তৈরি হয়, তখন তাকে সমাস বলা হয়। বাক্যে শব্দগুলোকে সংক্ষেপে ব্যবহার করার জন্য সমাস তৈরি হয়। সমাসের মাধ্যমে নতুন নতুন অর্থবোধক শব্দ তৈরি হয়।

সমাসের বিভিন্ন সংজ্ঞা

ভাষা বিশারদরা সমাসের অনেক ধরনের সংজ্ঞা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকটি হলো:
১. পরস্পর সম্পর্কিত দুই বা তার বেশি শব্দ একত্রে মিলে সমাস তৈরি করে।
২. পরস্পর একে অপরের সাথে যুক্ত হওয়া শব্দগুলো মিলে একটি নতুন শব্দ তৈরি করে।
যেমন: 'বটের তলা' থেকে 'বটতলা', 'এক দিকে চোখ যার' থেকে 'একচোখা', 'সিদ্ধ যে আলু' থেকে 'আলুসিদ্ধ'।

সমাসের প্রকারভেদ

সমাসকে ছয়টি প্রকারে ভাগ করা যায়:
১. দ্বন্দ্ব সমাস
২. দ্বিগু সমাস
৩. কর্মধারয় সমাস
৪. তৎপুরুষ সমাস
৫. অব্যয়ীভাব সমাস
৬. বহুব্রীহি সমাস।

দ্বন্দ্ব সমাস

যে সমাসে দুই বা তার বেশি শব্দ মিলে একটি শব্দ তৈরি হয় এবং মূল শব্দের অর্থ প্রধান থাকে, সেটি দ্বন্দ্ব সমাস। যেমন: 'মা ও বাবা' থেকে 'মা-বাবা', 'দা ও কুমড়া' থেকে 'দা-কুমড়া', 'জন্ম ও মৃত্যু' থেকে 'জন্ম-মৃত্যু'।

দ্বিগু সমাস

যেখানে প্রথম শব্দে সংখ্যা থাকে এবং এটি বিশেষ্য শব্দের সাথে মিলে নতুন সমাস তৈরি করে, সেটি দ্বিগু সমাস। যেমন: 'চৌ রাস্তা' থেকে 'চৌরাস্তা', 'তিন মাথা' থেকে 'তেমাথা', 'সপ্ত অহর' থেকে 'সপ্তাহ'।

কর্মধারয় সমাস

যেখানে বিশেষণ শব্দ এবং বিশেষ্য শব্দ মিলে একটি নতুন শব্দ তৈরি করে এবং বিশেষ্য শব্দের অর্থ প্রধান থাকে, সেটি কর্মধারয় সমাস। যেমন: 'যিনি দাদা তিনি সাহেব' থেকে 'দাদা-সাহেব', 'মহান যে নবী' থেকে 'মহানবী', 'সিংহ চিহ্নিত আসন' থেকে 'সিংহাসন'।

তৎপুরুষ সমাস

যেখানে প্রথম শব্দের কিছু অংশ বাদ দিয়ে নতুন শব্দ তৈরি হয় এবং পরবর্তী শব্দের অর্থ প্রধান থাকে, সেটি তৎপুরুষ সমাস। যেমন: 'মধু দিয়ে মাখা' থেকে 'মধুমাখা', 'মেঘ থেকে মুক্ত' থেকে 'মেঘমুক্ত'।

অব্যয়ীভাব সমাস

যেখানে প্রথম শব্দ অব্যয় থাকে এবং এই শব্দের অর্থ প্রধান হয়, সেটি অব্যয়ীভাব সমাস। যেমন: 'কূলের সমীপে' থেকে 'উপকূল', 'গ্রহের ক্ষুদ্র' থেকে 'উপগ্রহ', 'মরণ পর্যন্ত' থেকে 'আমরণ'।

বহুব্রীহি সমাস

যে সমাসে প্রথম শব্দের কোনো অর্থ বোঝায় না এবং তৃতীয় একটি অর্থ প্রকাশ করে, সেটি বহুব্রীহি সমাস। যেমন: 'আশিতে বিষ যার' থেকে 'আশীবিষ', 'নীল কণ্ঠ যার' থেকে 'নীলকণ্ঠ', 'ঘরের দিকে মুখ যার' থেকে 'ঘরমুখো'।

আশা করি, তোমরা সমাসের নানা দিক সম্পর্কে অনেক কিছু শিখেছো। এই ধরনের আরও পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটে আসা না ভুলবে। এখানে আরও অনেক নতুন তথ্য এবং শেখার সুযোগ রয়েছে। ধন্যবাদ!

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.