উপযোগ কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | উপযোগের উদাহরণ | উপযোগের অর্থ

আপনারা কি জানেন, উপযোগ কাকে বলে? উপযোগ হলো কোনো জিনিসের উপকারিতা বা প্রয়োজনীয়তা। অর্থনীতিতে, এই শব্দটি বিশেষ গুরুত্ব রাখে। এখানে আমরা জানব কিভাবে কিছু জিনিস আমাদের চাহিদা পূরণ করে এবং এর বিভিন্ন প্রকারভেদ কী।

উপযোগ কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | উপযোগের উদাহরণ | উপযোগের অর্থ

 আসুন, আমরা উপযোগের বিষয়টি সহজভাবে বুঝে নেই এবং দেখি এর বাস্তব উদাহরণগুলো কেমন!

উপযোগ কাকে বলে?

উপযোগ হল কোন জিনিসের উপকারিতা বা প্রয়োজনীয়তা। অর্থনীতিতে, উপযোগ শব্দটি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। কোন দ্রব্য মানুষের অভাব পূরণ করতে সক্ষম হলে তাকে উপযোগ বলা হয়।

উপযোগের উদাহরণ

যেমন, কলম আমাদের লেখার জন্য প্রয়োজন, পানি আমাদের পিপাসা মেটায়, খাদ্য আমাদের ক্ষুধা নিবারণ করে এবং পরিবহন আমাদের চলাচলের জন্য প্রয়োজন। তাই কলম, পানি, খাদ্য এবং পরিবহন সবগুলোর মধ্যে উপযোগ আছে। অর্থাৎ, পণ্যদ্রব্য বা সেবার মানুষের অভাব পূরণের ক্ষমতাই উপযোগ।

উপযোগের অর্থ

যে কোনো বস্তু মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারে, সেটি উপযুক্ত। এই শব্দটি 'উপযুক্ততা' থেকে এসেছে। তাই, যে কোনো দ্রব্যের উপযোগ থাকলে তা সম্পদ। যদি কোনো জিনিস মানুষের চাহিদা পূরণ না করে, তাহলে তা সম্পদ নয়।

উদাহরণ দিয়ে বোঝা

ধরি, কোনো খামারের আবর্জনা যদি ব্যবহার না করা হয়, তাহলে তা আবর্জনা। কিন্তু যদি সেটি কাজে লাগে, তবে সেটি সম্পদ হয়ে যায়। যেমন, মুরগির বিষ্ঠা প্রথমে আবর্জনা, কিন্তু যদি তা থেকে জৈব সার তৈরি করা হয়, তাহলে তা জমির জন্য সম্পদ।

উপযোগের প্রকারভেদ

অর্থনীতিতে উপযোগ দুই ধরনের হয়ে থাকে - সংখ্যাগত উপযোগ ও পর্যায়গত উপযোগ।

সংখ্যাগত উপযোগ কি?

যখন দ্রব্যের উপযোগ সংখ্যার মাধ্যমে বুঝানো হয়, তখন সেটিকে সংখ্যাগত উপযোগ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ একটি ফল খেয়ে ১০০ টাকা উপযোগ পায়, তাহলে দ্বিতীয়টি ৯৫ টাকা এবং তৃতীয়টি ৯০ টাকার সমান উপযোগ পেতে পারে। মোট উপযোগ হবে (১০০+৯৫+৯০=২৮৫) টাকা।

গণনা কারী অর্থনীতিবিদগণ

গণিতবিদ Gossen, Jevons, Walras, A. Marshall প্রমুখ সংখ্যাগত উপযোগের ধারণা প্রদান করেছেন।

চাহিদা তত্ত্ব

চাহিদা তত্ত্ব মূলত সংখ্যাগত উপযোগের উপর ভিত্তি করে। একজন ব্যক্তি যতটুকু উপযোগ পাবে, সেই অনুযায়ী মূল্য দিতে চায়। যেমন, আজিম প্রথম কেজি ফল ১০০ টাকায় কিনবে। পরবর্তী কেজিতে তাঁর আগ্রহ কমে যাবে।

পর্যায়গত উপযোগ কি?

যখন ভোক্তার উপযোগকে সংখ্যার মাধ্যমে না বোঝিয়ে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা হয়, তখন সেটাকে পর্যায়গত উপযোগ বলা হয়। যেমন, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্তর ইত্যাদি। অর্থনীতিবিদ Pareto, Hicks, Antonelli, Fisher, Allen প্রমুখ এই ধারণার উন্নয়ন করেছেন।

সংখ্যাগত ও পর্যায়গত উপযোগের পার্থক্য

সংখ্যাগত উপযোগের মাধ্যমে উপযোগকে সংখ্যা দিয়ে বোঝানো হয়, কিন্তু পর্যায়গত উপযোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরের মধ্যে তুলনা করা হয়।

  • ১. সংখ্যাগত উপযোগে উপযোগের পরিমাণ সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়।
  • ২. পর্যায়গত উপযোগে ভোক্তা স্তরের মাধ্যমে উপযোগ তুলনা করে।
  • ৩. সংখ্যাগত উপযোগের ভিত্তি হলো চাহিদা তত্ত্ব।
  • ৪. পর্যায়গত উপযোগের ভিত্তি হলো নিরপেক্ষ রেখা বিশ্লেষণ।
  • ৫. সংখ্যাগত উপযোগে মোট উপযোগ বের করা যায়, কিন্তু পর্যায়গত উপযোগে সম্ভব নয়।
  • ৬. সংখ্যাগত উপযোগ রৈখিক রূপান্তরযোগ্য, কিন্তু পর্যায়গত নয়।

সারাংশ

এই উভয় উপযোগের বিশ্লেষণ ভোক্তার আচরণ বুঝতে সাহায্য করে। অর্থাৎ, সংখ্যাগত ও পর্যায়গত উপযোগ উভয়ই অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উপযোগ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি বুঝতে পারলে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয়তা ভালোভাবে বুঝতে পারব। আরো বিস্তারিত এবং সহজ লেখার জন্য আমার ওয়েবসাইটে আসুন এবং অন্যান্য পোস্টগুলো পড়ুন!

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.