ভূমিকা: বিজ্ঞান আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ব্লগে "মানব কল্যাণে বিজ্ঞান" সম্পর্কে একটি সুন্দর রচনা রয়েছে, যা তোমাদের পড়াশোনায় সহায়ক হবে। পুরো রচনাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ো, আশা করি তোমাদের উপকারে আসবে।
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা
ভূমিকাঃ আজকের সভ্যতা বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিবিদ্যার সভ্যতা। বিজ্ঞান মানুষকে করেছে বিপুল শক্তির অধীশ্বর এবং সভ্যতা দিয়েছে নতুন নতুন উপহার। সভ্য সমাজের সর্বত্রই বিজ্ঞানের গৌরবময়ী উপস্থিতি। নাগরিক সভ্যতার সামান্যতম অংশটিও অবৈজ্ঞানিক নয়। এর রাজপথ, যানবাহন, অট্টালিকা, শিল্প কলকারখানা—সবই বিজ্ঞানের আশীর্বাদ ছাড়া সম্ভব হতো না।
বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কারঃ ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাষ্পশক্তির আবিষ্কারের মাধ্যমে বিজ্ঞানের জয়যাত্রা শুরু হয়। জেমস ওয়াট বাষ্পচালিত ইঞ্জিন উদ্ভাবন করেন, যা শিল্প বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জর্জ স্টিফেনসন রেলগাড়ির উন্নয়ন করেন, যা পরিবহন ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটায়। মাইকেল ফ্যারাডে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথ উন্মোচন করেন, আর টমাস আলভা এডিসন বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করে মানব সভ্যতায় আলোর সূচনা করেন। অধ্যাপক কুরি ও মাদাম কুরি রেডিয়াম আবিষ্কার করে চিকিৎসা ও বিজ্ঞানে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনেন।
রাইট ভ্রাতৃদ্বয় উড়োজাহাজ, আলেকজান্ডার টেলিফোন, জন এল. বেয়ার্ড টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। জগদীশচন্দ্র বসু রেডিও আবিষ্কার করে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন।
মানব কল্যাণে বিজ্ঞানঃ প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান মানুষের অন্যতম সহায়ক। ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত মানুষের প্রতিটি কাজে বিজ্ঞানের অবদান রয়েছে। ঘড়ির এলার্ম, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, বেতার বার্তা, সংবাদপত্র—সবই বিজ্ঞানের সৃষ্টি।
বিজ্ঞান চিকিৎসা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। পেনিসিলিন, ক্লোরামাইসিন, স্টেপটোমাইসিন ইত্যাদি মহৌষধ আবিষ্কারের ফলে কোটি কোটি মানুষ দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে রক্ষা পাচ্ছে। রঞ্জনরশ্মি, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, রেডিয়াম ইত্যাদি চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে।
কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞানঃ কৃষিকাজে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারের ফলে খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ প্রচুর বেড়েছে। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ও সেচ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে চাষাবাদে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।
যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানঃ বিজ্ঞান সময় ও দূরত্বকে জয় করেছে। রেডিও, টেলিভিশন, টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট—এসব আবিষ্কার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। কৃত্রিম উপগ্রহ ও কম্পিউটার যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে।
বিজ্ঞানের ধ্বংসাত্মক ক্রিয়াঃ বিজ্ঞানের ধ্বংসাত্মক শক্তি যেমন কামান, বন্দুক, এটম বোমা, হাইড্রোজেন বোমা ইত্যাদি মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। আইনস্টাইন আক্ষেপ করে বলেছেন, “পৃথিবী এক অনিবার্য ধ্বংসের মুখে এগিয়ে চলেছে।”
উপসংহারঃ সভ্যতার ক্রমোন্নতির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের তুলনা নেই। বিজ্ঞানের কল্যাণমুখিতা যদি ধ্বংসের কাজে প্রয়োগ না করে, মানবসভ্যতার ইতিহাসে অত্যুজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজিত হবে এবং বিজ্ঞানের জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে। এক ইংরেজি মনীষী বলেছেন, “We need science more than ever before.”
এই রচনাটি পড়ে নিশ্চয়ই তোমাদের ভালো লেগেছে। আরও সুন্দর ও দরকারি রচনা পড়তে ভিজিট করো StudyTika.com। এখানে তোমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ রচনা রয়েছে!