বৃষ্টি ভেজা দিন রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)

 পরিচিতি: এই ব্লগপোস্টে একটি সুন্দর রচনা আছে যার শিরোনাম “বৃষ্টি ভেজা দিন রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)।” আশা করি আপনি এটি পড়ে উপভোগ করবেন।

বৃষ্টি ভেজা দিন রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)

বৃষ্টি ভেজা দিন রচনা ১

ভূমিকা: সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে, বাইরে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। তাই জানালার পাশে চুপচাপ বসে আছি। এভাবে করেই আজকের দিনটি কাটিয়ে দিলাম। আর অনুভব করার চেষ্টা করলাম একটি বৃষ্টিমুখর দিনকে।

বৃষ্টিমুখর দিনের অনুভূতি: এ মুহূর্তে আমি যা অনুভব করছি তা কী কওে প্রকাশ করব? আমিতো কবি নই। যদি কবি হতাম তাহলে এখনই রবীন্দ্রনাথের মতো লিখে ফেলতাম একটি কবিতা : ‘মনে পড়ে মায়ের মুখে শুনেছিলাম গান বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান।’

আজ মনে পড়ছে অনেক কথা ; সেই ছোটবেলার কথা। এই বৃষ্টির দিনে আমার মা আনন্দে গেয়ে উঠত সেই গান –
‘কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা মনে মনে।’

আমরাও কিছু না বুঝে মায়ের সাথে গেয়ে উঠতাম, আর কিছক্ষণ হৈচৈ করার সুযোগ পেতাম। সত্যিই ছেলেবেলার দিনগুলোর কোন তুলনাই হয়না।

রাস্তায় দু’একজন লোক ছাতা নিয়ে আস্তে আস্তে হাঁটছে। সমস্ত আকাশ এমন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে, দেখে মনে হয় এখন সন্ধ্যা। সামনের গাছগুলোকে দেখে মনে হচ্ছে কে যেন খুব যত্ম করে তাদের গোসল করিয়ে দিচ্ছে। আজ আমি সত্যিই অবাক হচ্ছি ; মনে হচ্ছে একেবারে নতুন কিছু দেখছি। নতুন এক দেশ এবং তার প্রকৃতির নতুন আবেশ। রবীন্দ্রনাথতো ঠিকই বলেছেন : ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হইতে দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শিষের ওপর একটি শিশির বিন্দু।’

আজ এই নতুন আবিষ্কারে আমার মনে খুব আনন্দ হচ্ছে। তাই আমার চিৎকার করে গাইতে ইচ্ছে করছে : ‘হৃদয় আমার নাচেরে আজিকে ময়ূরের মতো নাচেরে।’

আমি ঠিক বলতে পারি না এমনই কোন মুহূর্তে কি কবি শেলি তাঁর বিখ্যাত কবিতা  লিখেছেন কিনা। কালিদাস থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত অনেক কবি এই ‘বর্ষা’ নিয়ে সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখেছেন। দেখতে দেখতে আজকের দিনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে আমার মন থেকে এই দিনটি কখনোই শেষ হয়ে যাবে না।

উপসংহার: কবি নজরুলের ‘বর্ষা বিদায়’ কবিতার সাথে সুর মিলিয়ে আমিও বৃষ্টিকে আজকের মতো বিদায় জানাচ্ছি :

‘তুমি চলে যাবে দূরে ভাদরের নদী দুকূল ছাপায়ে কাঁদে ছলছল সুরে।

বৃষ্টি ভেজা দিন রচনা ২

ভূমিকা: 

শ্রাবণ মাসের কোন এক সকালে একটানা যেন বৃষ্টি হচ্ছে। ঘরে আর থাকতে ভালো লাগছে না, কিন্তু সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। তাই বসে আছি জানালার পাশে চুপটি করে। আর দেখছি -

বৃষ্টি এলো ঝমঝমিয়ে

টিনের চালে উঠলো সুর।

মন বসে না কোন কাজে

বৃষ্টির ধারা সুমধুর।

জানালার পাশে চুপটি করে বসে আছি আর ভাবছি লোকালয় ছেড়ে নিভৃত কোন গ্রামে বৃষ্টির দিন উপভোগ করার অভিজ্ঞতার কথা। সারাদিন জানালার পাশে বসে বৃষ্টির সেই অনুভূতির কথা অনুভব করার চেষ্টা করলাম আর এভাবেই দিনটি কাটিয়ে দিলাম।

বর্ষার রূপ:

বাংলাদেশে সাধারণত ছয়টি ঋতু। গ্রীষ্ম ঋতুর পরে আসে বর্ষা ঋতু এদিক থেকে বর্ষা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ঋতু এবং আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাস মিলে হয় বর্ষা ঋতু। বৈশাখ মাসের কাকফাটা দুপুর কে শান্ত করতেই যেন আষাঢ়ের বৃষ্টি এসে হাজির হয়। চারিদিকে বৃষ্টির থৈ থৈ পানি অপার সৌন্দর্য নিয়ে হাজির হয় অপরূপ এই বাংলায়।

বৃষ্টি মুখর দিনের অনুভূতি:

বৃষ্টির দিনের কি যে এক আনন্দময় অনুভূতি তা সব সময় প্রকাশ করে বোঝানো যায় না। আষাঢ় - শ্রাবণ মাস আসলেই হঠাৎ করে ঈশান কোণে মেঘ জমে ওঠে আর হঠাৎ করেই শুরু হয় ঝমঝম বৃষ্টি। আবার কখনো মেঘের আনাগোনা আর এ থেকে শুরু হয়ে যায় বৃষ্টি, কখনো বজ্রপাতসহ বৃষ্টি, আবার কখনো একটানা বৃষ্টি। বৃষ্টির সময় এক ঘর থেকে যেন অন্য ঘরের চালা পর্যন্ত দেখা যায় না আর এজন্যই হয়তো কবিরা বৃষ্টির এই দিনকে ঘিরে বিভিন্ন কবিতা রচনা করতে পারেন।

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এলো বান,

বুড়ো খুকির বিয়ে হবে তিন কন্যা দান।

গ্রামের মেঠো পথ ধরে লোকজন হেঁটে চলে কিন্তু বৃষ্টির দিনে রাস্তা এতটাই কাদাযুক্ত হয় যে মানুষ আর রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটতে পারে না, ছাতা হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে রাস্তার দুপাশ দিয়ে হেঁটে চলে। সমস্ত আকাশ এমন ভাবে মেঘে ছেয়ে যায় যেন এখনই সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। গাছের পাতার দিকে তাকালে মনে হয় কেউ যেন যত্ন করে গাছের পাতাগুলোকে গোসল করিয়ে দিয়েছে আর এগুলো দেখে আমি সত্যিই অবাক হই। 

মনে হয় একেবারে নতুন কিছু দেখছি। এ যেন আমার নতুন অভিজ্ঞতা। শ্রাবণ মাসের দুপুরে যখন অতিশয় গরম পড়ে আর সেই সময় যদি বৃষ্টির ধারা নেমে আসে তখন মনে হয় হইচই করে বৃষ্টিতে ভিজি কারণ এই সময় বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দই যেন আলাদা। বন্ধুদের সাথে যখন বৃষ্টিতে গোসল করি তখন নিজের অজান্তেই গেয়ে ওঠি -

মাঠ - ঘাট সহ সবকিছু বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায় এবং অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য চারপাশে ঘাস জন্মে। ঘাসের ওপর যখন বৃষ্টির পানি পড়ে তখন মনে হয় যেন শিশির বিন্দু পড়ে আছে আর এগুলো দেখে সত্যিই আমি অবাক হয়ে যাই। আমার মনে হয় নতুন এক দেশ এবং তার প্রকৃতির মাঝে আমার নতুন অনুভূতি আর এজন্যই হয়তো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন -

"কোথাও আমার হারিয়ে যেতে নেই মানা"।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

ঘর হইতে দুই পা ফেলিয়া।

একটি ধানের শীষের ওপর

একটি শিশির বিন্দু।

বৃষ্টির দিনের এই নতুন অভিজ্ঞতা আমাকে সত্যিই আনন্দে ভরিয়ে তোলে। মনের অজান্তেই যেন চিৎকার করে গেয়ে উঠি 

" হৃদয় আমার নাচেরে আজিকে ময়ূরের মতো নাচে রে"। 

ময়ূর যেমন বৃষ্টি দেখলেই তার রঙ্গীন পাখাগুলো মেলে ধরে ঠিক তেমনি আমাদের মনের আনন্দ গুলোও বৃষ্টির প্রতিটি ফোটার সঙ্গে মিশে যায়, সত্যি এজন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। গ্রামের মেঠো পথগুলো যখন বৃষ্টির পানিতে কাদায় ভরে ওঠে তখন গ্রামের কিশোরী মেয়েরা নীল শাড়ি পরে খালি পায়ে এদিক ওদিকে ছোটাছুটি করে। কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো যেন প্রকৃতিকে সৌন্দর্যে ভরিয়ে তোলে। এছাড়াও এ সময়ে বিভিন্ন ধরনের ফুল ফুটে যা বাংলার প্রকৃতিকে সাজিয়ে দেয়।

উপসংহার:

বর্ষা বাংলাদেশের মানুষের মনে অনেক বড় স্থান দখল করে আছে কারণ এই সময় বাংলার প্রকৃতি অপরূপ সৌন্দর্যে ভরে ওঠে। পুকুর, ঘাট, নদী, নালা সবকিছু বৃষ্টির পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। গাছে গাছে কদম, কেয়া ফুল ফোটে, নদীতে আসে হাজারো রকমের মাছ, বাংলার প্রকৃতি যেন একাকার হয়ে যায় বর্ষার নিবিড়তায়।

সমাপ্তি: আরও অনেক সুন্দর ও সহজ রচনা পড়তে চান? তাহলে আমার ওয়েবসাইট StudyTika.com-এ এসে দেখুন। নতুন নতুন রচনা নিয়মিত আপডেট হয়।

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.