বর্ষাকাল রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)

 ভূমিকা: এই ব্লগপোস্টে “বর্ষাকাল রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)” দেয়া হয়েছে। সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে যেন সবাই সহজে পড়তে পারে। নিচে পুরো রচনাটি পড়ুন।

বর্ষাকাল রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)

বর্ষাকাল রচনা ১

ভূমিকা:  বাংলাদেশে ছয়টি ঋতু রয়েছে। বর্ষাকাল হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় ঋতু। বসন্তকে ঋতুরাজ বলা হলেও রুপের ও সৌন্দর্যের দিক দিয়ে বর্ষাকালই শ্রেষ্ঠ।

বর্ষার সময়: বাংলায় “আষাঢ় ও শ্রাবণ” মাসকে বর্ষাকাল বলা হয়। তবে কখনো কখনো এই ঋতু একটু আগে শুরু হয় এবং দেরিতে শেষ হয়। কিছু সময়ে বর্ষা জ্যৈষ্ঠ মাসে শুরু হয়ে আশ্বিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

বর্ষার আগমন:

“আমি বর্ষা, আসিলাম গ্রীষ্মের প্রদাহ শেষ করি, মায়ার কাজল চোখে, মমতার বর্মপুট ভরি।”

গ্রীষ্মের দিনগুলোতে মানুষ যখন অসহ্য গরমে ছটফঠ করতে থাকে তখন বর্ষা আসে প্রবল গর্জনের মাধ্যমে। প্রকৃতি যেন নিজের বুক জুড়ানোর জন্য বর্ষাকে আহব্বান করে। বাংলার আকাশ ও বাতাস এক নতুন খেলায় মেতে উঠে। মানুষের মনে আসে আনন্দের জোয়ার।

বর্ষার কারন:  মৌসুমী বায়ুর ফলে বর্ষাকাল সংঘটিত হয়। বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত দক্ষিণ - পশ্চিম মৌসুমী বায়ু অনেক বাষ্প বয়ে আনে। এটি প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটায়। যার ফলে বাংলাদেশে বর্ষা শুরু হয়।

বর্ষার রূপ:  বর্ষাকালে নদী-নালা ও খাল-বিল পানিতে ভরে যায়। আকাশ থাকে ঘন মেঘে আচ্ছন্ন। অনেক সময় দিনের পর দিন আকাশে সূর্যের মুখ দেখা যায় না। সারা দিন মুষলধারায় বৃষ্টিপাত হয়। আকাশে কালো মেঘ দেখে ময়ূর পেখম তোলে। এমন দিনে ঘরের বাইরে যাওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে কবি উলেখ করেন -

“নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহিরে। ওগো আজ তোরা যাস্নে ঘরের বাইরে।”

বর্ষার প্রাকৃতিক দৃশ্য: 

“বরষা। ওই এল বরষা অঝোর ধারায় জল ঝরঝরি অবিরল ধূসর নীরস ধরা হল সরসা।”

বর্ষা প্রকৃতিকে নতুন সাজে সাজায়। বৃষ্টির ফলে সতেজ হয়ে উঠে গাছপালা। এ সময় নানা ধরনের ফুল ফোটে। প্রকৃতিতে ফিরে আসে সজীবতা। কদম, কেয়া, জুঁই, গন্ধরাজ, হাসনাহেনার, গন্ধ এ ঋতুকে বিমোহিত করে তোলে। গাছে গাছে সবুজ পাতা দেখা যায়। সব মিলিয়ে প্রকৃতি নতুন রূপ ধারন করে।

মানব মনে বর্ষার প্রভাব: মানব মনে বর্ষার প্রভাব অপরিসীম। বর্ষা মনকে সহজ, সরল ও সৃষ্টিশীল করে তোলে। বর্ষা হৃদয়ে আনে অফুরন্ত আবেগের প্রবাহ। বর্ষাই বাংলার কাব্য সাহিত্যকে রসসমৃদ্ধ করেছে। প্রেম ও ভালোবাসার অনুভূতিও বর্ষা আমাদেরকে উপহার দিয়েছে।

উপকারীতা: বাংলাদেশে বর্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। বর্ষাই বাংলাদেশকে সুজলা-সুফলা ও শস্য-শ্যামলা করে তুলেছে। বর্ষার ফলে অনুর্বর মাটি হয়ে উঠে উর্বর। বর্ষাকালে নৌকা যোগে চলাচল করা যায়। গ্রীষ্মের উত্তপ্ত পৃথিবী বর্ষার পানিতে শীতল হয়। বৃষ্টির পানিতে বাতাসের দূষিত পদার্থ মাটিতে নেমে বাতাস বিশুদ্ধ হয়।


অপকারীতা:  বর্ষার কিছু অপকারিতাও রয়েছে। এই সময়ে রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, চলাচলে সমস্যা হয়। অনেক জায়গায় বন্যা দেখা দেয়। গরিব ও দিনমজুরদের অবস্থা খুবই করুণ হয়ে যায়। তাদের ভাঙা ঘরের চাল দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে, ঘরের ভেতর পানি জমে যায়। গবাদি পশুরাও কষ্টে দিন কাটায়। বর্ষা শেষ হলে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই দেখা দেয়, যা মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তোলে।

উপসংহার: বর্ষার অপকারের চেয়ে উপকারই বেশি। বর্ষা না হলে আমাদের দেশ মরুভূমিতে পরিণত হত। শুধু বর্ষার কারনেই এ দেশ সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা নামের অধিকারী হতে পেরেছে। আর তাই আমরা বর্ষাকে জানাই সাদর সম্ভাষন।

বর্ষাকাল রচনা ২

সূচনা :- 

গ্রীষ্মের প্রখর তাপে দেশ যখন প্রায় দগ্ধ হয়ে ওঠে তখন বর্ষার বৃষ্টিপাত ভূমিকে সরস ও সজীব করে তোলে। বর্ষা তাই আমাদের কাছে অতি প্ৰিয় ।

সময় :

বাংলাদেশে ছয়টি ঋতুর মধ্যে বর্ষা দ্বিতীয় ঋতু। আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দু’মাস বর্ষাকাল। কিন্তু বাংলাদেশে প্রায় ভাদ্রমাস পর্যন্ত বর্ষা স্থায়ী হয়।

প্রাকৃতিক অবস্থা :

বর্ষার আগমনের সাথে সাথেই আকাশ জুড়ে শুরু হয় কালো মেঘের ঘনঘটা। মাঝে মাঝে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়তে থাকে। কখনো দিনের পর দিন চলতে থাকে একটানা বৃষ্টি। যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। কবির ভাষায়—

“বর্ষার ঝর ঝর সারাদিন ঝরছে
মাঠ-ঘাট থৈ থৈ খাল বিল ভরছে।”

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপে যে সব গাছপালা শুকিয়ে গিয়েছিল, বর্ষার পানিতে আবার তা হয়ে ওঠে সবুজ আর সতেজ।

উপকারিতা :

কৃষি প্রধান এই বাংলাদেশে বর্ষার পানির ওপরই আমাদের ফসল নির্ভর করে। যে বছর বর্ষায় পরিমাণ মতো বৃষ্টি হয়, সে বছর ফলন হয় প্রচুর। এছাড়া বর্ষার পানিতে আবর্জনা পরিষ্কার হয়ে থাকে। এর সাথে পরিষ্কার হয়ে যায় রোগ জীবাণু। এ সময় প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। এই বর্ষায় জন্মে আনারস, পেয়ারা, তাল, আতা, আরও কত কী ফল!

অসুবিধা :

বর্ষা আমাদের জন্য কল্যাণকর বটে। অনেক সময় আবার নানা রকমের অসুবিধারও সৃষ্টি করে। বর্ষার প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে পথ-ঘাট কর্দমাক্ত ও নোংরা হয়ে যায়। এতে চলাফেরার অসুবিধা হয়। বর্ষার অতিরিক্ত বৃষ্টি বা নদীর পানিতে কখনো কখনো বন্যা ঘটায়। বন্যার ফলে মহামারী এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এতে শত শত লোকের প্রাণহানিও ঘটে।

উপসংহার :

বর্ষায় নানা রকম অসুবিধা আছে বটে, কিন্তু অপকারের তুলনায় উপকার বেশি। বর্ষা না হলে এদেশে ফসল হত না। গাছ-পালা জন্মাত না। যেখানে বর্ষা নেই, সেখানে সব শূন্য, মরুভূমি। তাই শুষ্ক পৃথিবীর বুকে বর্ষা হলো নবজীবনের আশীর্বাদ।

বর্ষাকাল রচনা ৩

সূচনা : 

বর্ষা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ঋতু । আমাদের দেশে আষাঢ়-শ্রাবণ এই দু’মাস বর্ষাকাল । ষড়ঋতুর এই দেশে বর্ষা আসে সজল মেঘের ভেলায় চড়ে সাজসাজ রবে। বিভিন্ন কারণে বর্ষা আমার প্রিয় ঋতু । 

বর্ষার প্রকৃতি : 

বর্ষাকালে আকাশ প্রায়ই মেঘে ঢেকে থাকে এবং ঘন ঘন বৃষ্টি হয়। মাঝে মাঝে বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকসহ ঝড়ও দেখা যায়। কখনো কখনো টানা কয়েকদিন সূর্যের দেখা মেলে না। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে অনেক সময় বন্যা দেখা দেয়। খাল-বিল ও নদীর পানি উপচে পড়ে এবং মাঠ-ঘাট ও জনপদ পানিতে ডুবে যায়। তখন গ্রামের মানুষ নৌকায় চলাফেরা করে। আবার শহরেও অতিবৃষ্টির ফলে নিচু এলাকায় পানি জমে যায়, যার ফলে মানুষের চলাফেরায় অনেক কষ্ট হয়।

বর্ষার ফুল-ফল : 

বর্ষায় বিলে-ঝিলে ফোটে পদ্ম, শাপলা, কলমি ইত্যাদি ফুল। ডাঙায় ফোটে কদম, কেয়া, হিজল, বেলি, গন্ধরাজ ইত্যাদি ফুল । বর্ষাকালে পেয়ারা, আতা, বাতাবি লেবু, আমড়া, লটকন ইত্যাদি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল পাওয়া যায়।

বর্ষার সৌন্দর্য : 

বর্ষায় প্রকৃতি এক ভিন্ন সাজে আবির্ভূত হয়। নদী- নালা সব পানিতে থৈ থৈ করে। গ্রামে গেলে মনে হয় বাড়িঘরগুলো দ্বীপের মতো পানিতে ভেসে আছে। এ সময় বড়দের সঙ্গে নৌকায় চড়ে বেড়াতে আমার খুব ভালো লাগে। 

গ্রামের বাড়িতে টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনতে আমি খুব পছন্দ করি। কদম-হিজল-গন্ধরাজ ফুলের সুবাসে পল্লি প্রকৃতি হয়ে ওঠে মোহনীয়। বর্ষার নতুন পানি চারপাশ পরিচ্ছন্ন করে তোলে । জলাশয়ে এ সময় প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। মাছ ধরা বর্ষাকালের অন্যতম উৎসব। এসব কারণে এ ঋতু আমার প্রিয় ।

উপসংহার : 

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ বলে ঋতুচক্রে বর্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপকারিতার পাশাপাশি সৌন্দর্যের জন্যও বর্ষা আমার বেশি প্রিয়। 

উপসংহার: আপনারা যদি এরকম আরও রচনা পড়তে চান, তাহলে ভিজিট করুন আমার সাইট StudyTika.com। এখানে অনেক সহজ ও সুন্দর রচনা পাবেন। ধন্যবাদ!

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.