রচনা পরিচিতি: এই ব্লগপোস্টে একটি সুন্দর রচনা দেওয়া আছে, যার শিরোনাম "ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক সংঘ রচনা Class 7 8 9 10 SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)"। আপনি চাইলে পুরো রচনা পড়তে পারেন।
ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক সংঘ রচনা
সূচনা : শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন দেশে যে সংগঠন গড়ে উঠেছে, তাকে শ্রমিক সংঘ বা ‘ট্রেড ইউনিয়ন’ বলে। বর্তমান যুগে বৃহৎ শিল্প কারখান সমূহে হাজার হাজার শ্রমিক একত্রে কাজ করে। শ্রমিকেরা দরিদ্র ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে অশিক্ষিত বলে তারা অনেক সময় মালিক শ্রেণীর দ্বারা অন্যায়ভাবে শোষিত ও বঞ্চিত হয়। একজন শ্রমিক এককভাবে এর বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারে না। তাই প্রয়োজন দেখা দেয় একটি সামগ্রিক শ্রমিক সংগঠনের। এ থেকেই আধুনিক কালের ‘ট্রেড ইউনিয়ন’ বা শ্রমিক সংঘের উৎপত্তি। পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় পুঁজিপতিদের শক্তি ও ক্ষমতা সীমাহীন। বস্তুতপক্ষে একতাই শ্রমিক সংঘের শক্তির মূল উৎস। বর্তমানে শ্রমিক শ্রেণী আর পূর্বের মত মালিকদের লাঞ্ছনা ও অন্যায়-অবিচার সহ্য করতে রাজি নয়, এখন তারা অনেক বেশি সচেতন। শ্রমিকদের বেতনের হার বৃদ্ধি, শ্রমের সীমা নির্ধারণ, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং অধিকতর আর্থিক সুবিধার জন্য তারা সংগঠনের মাধ্যমে সংগ্রাম করে। শ্রমিকদের সামগ্রিক কল্যাণের জন্যও এই সংঘ বিশেষ সচেষ্ট থাকে। বর্তমানে পৃথিবীর শিল্পপ্রধান দেশসমূহে শ্রমিক সংঘ আরও ব্যাপকভাবে গড়ে উঠেছে। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে শ্রমিকগণ অপেক্ষাকৃত বেশি সংঘবদ্ধ।
ট্রেড ইউনিয়নের কাজ : শ্রমিক সংঘ বা ট্রেড ইউনিয়নের প্রধান কাজ হলো মালিকপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করে শ্রমিক নিয়োগ, বেতন ও চাকরির শর্ত ঠিক করা। অনেক শ্রমিক অশিক্ষা, দারিদ্র্য এবং প্রতিযোগিতার কারণে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয় এবং সঠিকভাবে কাজ পেতে অসুবিধায় পড়ে। তাই ট্রেড ইউনিয়ন মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রমিকদের চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত করে। যেন কোনো অযোগ্য শ্রমিককে অযথা প্রমোশন বা যোগ্য কাউকে অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত না করা হয়—এদিকে ট্রেড ইউনিয়ন নজর রাখে। এছাড়াও দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ আদায়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য রক্ষা ও বিনোদনের সুযোগ তৈরি করাও এর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। অসুস্থ বা গরিব শ্রমিকদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থাও শ্রমিক সংঘ করে থাকে। শ্রমিকদের চাঁদা থেকেই এই সংগঠনের খরচ চালানো হয় এবং একটি সাধারণ তহবিল গঠন করা হয়। তবে মনে রাখা জরুরি, শ্রমিক সংঘের কাজ শুধুই মালিকদের বিরোধিতা করা নয়। অপ্রয়োজনে ধর্মঘট ডেকে উৎপাদন বন্ধ রাখলে তা দেশের জন্য বড় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
উপসংহার : বাংলাদেশে শিল্পোন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিক আন্দোলনও গড়ে উঠেছে। তবে মালিকদের কুটবুদ্ধি, শ্রমিকদের সংঘবদ্ধতার অভাব এবং অর্থের অপ্রতুলতার কারণে শ্রমিক আন্দোলন তেমন বিস্তারলাভ করতে পারছে না। সরকার অবশ্য শ্রমিক কল্যাণের জন্য নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
রচনা উপসংহার: আশা করি রচনাটি আপনার ভালো লেগেছে। আরও অনেক রচনা পড়তে চাইলে আমার ওয়েবসাইট StudyTika.com-এ ঘুরে আসবেন। নতুন নতুন রচনা পেয়ে আনন্দ পাবেন। ধন্যবাদ!