সাহিত্য জাতির দর্পণস্বরূপসাহিত্য জাতির দর্পণস্বরূপ

 🌸 ভূমিকা: এই ব্লগপোস্টে তোমাদের জন্য একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ দেয়া হয়েছে, যার শিরোনাম "সাহিত্য জাতির দর্পণস্বরূপ"। আশা করি এখানে লেখা সহজ ভাষায় তোমরা ভালোভাবে বুঝতে পারবে। পুরোটা পড়ে নিও, তোমার অনেক কাজে আসবে।

সাহিত্য জাতির দর্পণস্বরূপ

সাহিত্য জাতির দর্পণস্বরূপ

মূলভাব : সাহিত্যের মাধ্যমে কোন জাতির ধ্যান-ধারনা, চিন্তা-চেতনার প্রকাশ ঘটে। একটি দেশের সামগ্রিক পরিচয় ফুটে উঠে সেই দেশের সাহিত্যে।

সম্প্রসারিত ভাব : সাহিত্যের সাথে মানব জাতির ও সমাজের যোগাযোগ খুবই ঘনিষ্ঠ। জীবন ও সমাজকে নিয়েই সাহিত্য। কবি সাহিত্যিকেরা সমাজের মানুষ। সমাজ জীবনের লদ্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে সাহিত্য রচিত হয়। সে জন্য সাহিত্যে সমাজ জীবনের প্রতিফলন ঘটে। সাহিত্যের এ বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে সাহিত্যকে সমাজের দর্পন বলে অভিহিত করা হয়।

সাহিত্য তৈরি হয় সমাজকে নিয়েই, সমাজের মানুষের জন্য এবং সমাজের মানুষ দ্বারা। লেখকরা তাদের চারপাশের জীবন থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে তা তাদের লেখায় তুলে ধরে। তারা যা দেখে, যা অনুভব করে, তার সঙ্গে কল্পনা ও মাধুরী মিশিয়ে সাহিত্য সৃষ্টি করে। তাই সাহিত্য রচনার প্রধান উপাদান হলো মানুষের জীবন, অর্থাৎ সমাজ। লেখকরা সমাজেরই একজন সদস্য এবং তারা সমাজের জন্যই লেখেন। তারা সমাজের জীবনধারা থেকে উপকরণ সংগ্রহ করেন। এজন্য সাহিত্যে জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। সাহিত্য পড়ে আমরা সমাজের জীবন সম্পর্কে জানতে পারি। এই দিক থেকে সাহিত্য হলো সমাজ ও জাতির আড়ম্বরপ্রদর্শক। সমাজের মানুষও সাহিত্যের মাধ্যমে নিজের জীবনের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পায়। তাই সাহিত্য যুগ যুগ ধরে মানুষের কাছে সমাদৃত এবং জীবনকে বৈচিত্র্যময়ভাবে দেখার উৎস হয়ে থাকে।

কোন জাতির প্রতিনিধিত্ব করে সেই জাতির সাহিত্য। পৃথিবীতে যে জাতির সাহিত্য যত বেশি উন্নত, জাতি হিসেবেও সে জাতি তত বেশি উন্নত।

এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো

ভাব-সম্প্রসারণ : একটি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও চিন্তা-চেতনা প্রতিফলিত হয় তার সাহিত্যে। সাহিত্যের সাথে মানবজাতির জীবন ও সমাজের যোগাযোগ খুবই ঘনিষ্ঠ। জীবন ও সমাজকে নিয়েই সাহিত্য।

মানুষের দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মনীতি, অনুরাগ-বিরাগ, আশা-নৈরাশ্য, তার অন্তরের সত্য ও স্বপ্ন- এ সবই সাহিত্য। দর্পণে যেমন আমাদের পূর্ণাঙ্গ মুখচ্ছবি প্রতিফলিত হয়, তেমনি সাহিত্যেও একটি জাতির পরিপূর্ণ চিত্র ফুটে ওঠে। ইংরেজিতে তাই বলা হয়, Literature is the criticism of life- সাহিত্য জীবন- সমালোচনা। যে জাতি যত উন্নত সে জাতির সাহিত্য তত সমৃদ্ধ। সাহিত্যের মাধ্যমেই একটি জাতির অবস্থান সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। কেননা প্রত্যেক জাতির কবি-সাহিত্যিকগণই তাঁদের লেখনীর নিপুণ আঁচড়ে সে জাতির নিজস্ব জীবনধারা ও বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলেন। যেমন: লিও তলস্তয়ের ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’ কেবল যুদ্ধ নয়, শান্তির গুরুত্বকে তুলে ধরে; ভল্টেয়ার ও রুশোর সাহিত্য ফরাসি স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের চেতনা জাগিয়ে তোলে; মাক্সিম গোর্কির লেখা জারের শাসনের পতনের সংকেত বয়ে এনেছিল; বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ব্রিটিশ শাসন থেকে দেশের মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন—‘শিকল পরা ছল, মোদের এই শিকল পরা ছল’। আবার মিসেস হ্যারিয়েট বীচার স্টো-এর ‘আঙ্কল টমস ক্যাবিন’ থেকে আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাসদের নিষ্ঠুর নির্যাতনের চিত্র জানা যায়। এভাবেই সাহিত্যে জাতির গৌরব, উন্নতি ও অবনতির গল্প লেখা হয়। জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্য সহজেই সাহিত্যের মাধ্যমে বোঝা যায়। তাই কোনো জাতিকে ভালোভাবে জানতে চাইলে তার সাহিত্যকে ভালোভাবে চিনতে হয়।

জাতীয়জীবনে মানুষের উত্থান-পতন, প্রেম-ভালবাসা, সুখ-দুঃখের কাহিনী স্বীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে সাহিত্যে ধরা পড়ে। তাই, সাহিত্য কেবল কবির কবিতা ও সাহিত্যিকের রচনা নয়, তা একটি জাতির সংস্কৃতির ধারক ও বাহক।

🌟 উপসংহার: এই ভাবসম্প্রসারণটি তোমার কেমন লেগেছে? আরো অনেক সহজ ও সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ পড়তে চাইলে, তোমার জন্য অপেক্ষা করছে আমাদের ওয়েবসাইটে। আরো পড়তে ভিজিট করো 👉 StudyTika.com এবং তোমার পড়াশোনাকে আরও সহজ করে তুলো।

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.