⭐ ভূমিকা: এই ব্লগপোস্টে রয়েছে একটি সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ — "যাহারা এ পৃথিবীতে হয়েছেন ধন্য,নিজের জন্য ভাবেনিকো,ভেবেছেন পরের জন্য"। সহজ ভাষায়, পরিষ্কারভাবে লেখা হয়েছে যাতে সবাই সহজে বুঝতে পারে। চলুন পুরোটা পড়ে নিই — ছোট কিন্তু অনেক কিছু শেখার আছে এই ভাবসম্প্রসারণ থেকে।
যাহারা এ পৃথিবীতে হয়েছেন ধন্য,নিজের জন্য ভাবেনিকো,ভেবেছেন পরের জন্য
মূলভাব : মানব জন্ম শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্য নয়। কারণ, মানুষ মানুষের জন্য। যারা এ পৃথিবীতে মহৎ বলে চির স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন তারা সব সময় পরের মঙ্গলের জন্য ব্যতিব্যস্ত ছিলেন।
সম্প্রসারিত ভাব : আত্মস্বার্থ ভাব মানুষে স্বভাবতই থাকে, কিন্তু যারা এই প্রবৃত্তির বন্দি, তারা কখনো মহৎ কাজ করতে পারে না। যারা মহৎ কর্ম করেন না, তাদের সব কাজ মৃত্যুর সাথে মুছে যায়, কেউ তাদের কথা মনে রাখে না। কিন্তু যারা সত্যি মহৎ, তারা কখনো নিজের জন্য চিন্তা করে না। তারা রোগ, শোক ও মৃত্যুকেও পরাস্ত করতে পারে তাদের মহান চিন্তা ও কর্মের মাধ্যমে। এই ধরনের মানুষ অন্যদের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে, তাদের জীবন আদর্শ ফুলের মতো সুগন্ধময় ও পবিত্র হয়। সবাই তাদের প্রতি মুগ্ধ হয়, কারণ তারা ফুলের মতো নিজের সৌন্দর্যে অন্যের হৃদয়ে শান্তি ও আনন্দ দিয়ে যায়। মৃত্যুর অনেক বছর পরেও মানুষ তাদের ভুলতে পারে না। এই মহান মনীষীদের কারণেই সভ্যতা দ্রুত উন্নতি করছে, আজ আমরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডও জয় করছি। যেমন- মহান নবী মুহাম্মদ (স.) যিনি মানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন, তাকে কীভাবে কেউ ভুলতে পারে? নিউটন যার সূত্র থেকে বিমান ও রকেট আবিষ্কার হয়েছে, তাকে কি কেউ ভুলবে? রবীন্দ্রনাথ ও শেক্সপিয়ার যাঁরা মানবতার গান গেয়ে মানুষের হৃদয় জয় করেছেন, তাদের কি কেউ ভুলবে? আর মাদার তেরেসা, যিনি নিজের সুখ ত্যাগ করে দরিদ্র ও বঞ্চিতদের সেবা করেছেন, তাকে কি কেউ ভুলতে পারে? এসব সম্ভব নয়।অর্থাৎ এরা মানুষ হিসেবে সার্থক ও ধন্য। কারণ একটাই তারা কখনও কখনও নিজের স্বার্থচিন্তায় ব্যতিব্যস্ত থাকেনি। সারা জীবন তারা অন্যের মঙ্গল চিন্তায়, পৃথিবী ও পৃথিবীর জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের কল্যাণের চিন্তায় নিয়োজিত থেকেছেন। তাই তারা ধন্য। আর যারা আত্মস্বার্থ নিয়ে বিভোর হয়ে থেকেছে, তারা কি পেয়েছে? মৃত্যু পর্যন্তই তাদের সবকিছু সীমাবদ্ধ। কত মানুষই তো কালের স্রোতে হারিয়ে গেছে। কিন্তু টিকে আছে লুব্ধকের মত ভাস্বর কজন তারকামানব শুধুই তাদের পরহিতৈষিতার কারণে। তাই কবির কণ্ঠে শোনা যায়-
‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও।
তার মত সুখ কোথাও কি আছে?
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।’
পরার্থপরতাই মানবজীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য। যারা এ সত্যটি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে, তারাই স্বার্থচিন্তায় বিভোর থেকেছে। ফলে তাদের মানব প্রজন্ম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। আর যারা সত্যটি অনুধাবন করে পরের কল্যাণের চিন্তা করেছে তারাই ধন্য হয়েছে।
✅ উপসংহার: আশা করি ভাবসম্প্রসারণটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এমন আরও সহজ ও সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ পড়তে ভিজিট করুন আমার ওয়েবসাইট StudyTika.com–এ। এখানেই পাবেন Class 6 থেকে HSC পর্যন্ত অনেক দরকারি ভাবসম্প্রসারণ একসাথে।