🌼 ভূমিকা: এই ব্লগপোস্টে রয়েছে একটি সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ – “সমস্ত পাথর হলে মহামূল্য মণি, মণির কদর কিছু হত না কখনি”। যারা ক্লাস ৬ থেকে শুরু করে এসএসসি-এইচএসসি পর্যায়ের, সবার জন্য সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে। চলো তাহলে পড়ে নিই।
সমস্ত পাথর হলে মহামূল্য মণি,মণির কদর কিছু হত না কখনি
মুলভাব : মূল্যবান জিনিস যদি পরিমাণে বেশি হয় তাহলে তার মর্যাদা থাকে না। সবকিছুর অতিরিক্ত সমাদরের যোগ্য নয়। বরং যা সহজে পাওয়া যায় না, পাওয়া গেলেও পরিমাণে কম, তারই মূল্য বেশি। আদরও তার বেশি হয়ে থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব : মণি ও মুক্তা খুবই মূল্যবান বস্তু। এগুলো সংগ্রহ করতে অনেক টাকা খরচ করতে হয় এবং মানুষ এগুলোকে খুব যত্ন করে রক্ষা করে। মণি ও মুক্তা এক ধরনের পাথর, যাদের বিরলতা তাদের মূল্য ও সমাদর বাড়িয়ে দেয়। যদি সব পাথরই মণির মতো সহজলভ্য হত, তাহলে সেগুলোর দাম কমে যেত এবং মানুষের কাছে তাদের গুরুত্বও কমে আসত। যতো বেশি কোনো জিনিস সহজে পাওয়া যাবে, তার মূল্য তত কমে যায়। মানুষের জীবনেও এমনটাই দেখা যায়। যেসব গুণসম্পন্ন মানুষ কম সংখ্যায় থাকেন, তাদের সমাজে কদর বেশি থাকে। কিন্তু যদি সেই ধরনের মানুষ অনেক বেশি হয়ে যায়, তাহলে তাদের কদর কমে যায়, কারণ সংখ্যার আধিক্য তাদের মর্যাদা কমিয়ে দিতে পারে।
পৃথিবীর সকল পাথর যদি মণি, মুক্তা হত তাহলে তার আর কদর থাকত না। সেভাবে এ পৃথিবীর সকল মানুষ যদি জ্ঞানী-গুনী ও শিক্ষিত হত। তাহলে সে সম্পর্কে তাদের কোন মূল্যই থাকত না।
এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো
ভাব-সম্প্রসারণ : জগতে কোনো বস্তুর মূল্য তার উপযোগিতা এবং পাওয়ার সহজ-অসুবিধা দেখে নির্ধারিত হয়। যার উপকারিতা বেশি এবং গুণ ভালো, সেই বস্তুর দামও বেশি হয়। তবে যদি কোনো বস্তু খুবই কম পাওয়া যায়, তাহলে তার দাম আরো বেশি বেড়ে যায়। অন্যদিকে, যদি মূল্যবান কোনো জিনিস সহজে অনেক পরিমাণে পাওয়া যায়, তাহলে তার গুরুত্ব একটু কমে যায়। যেসব জিনিস অনেক বেশি পাওয়া যায়, তাদের ভালো গুণ থাকলেও তেমন সম্মান বা কদর হয় না। তবে যেসব জিনিস গুণে ভালো এবং পাশাপাশি বিরল ও দুর্লভ, সেগুলোকে খুবই মূল্যবান মনে করা হয় এবং সেগুলোর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা ও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মণি ও মুক্তা এক ধরনের পাথর, কিন্তু সাধারণ পাথরের মতো নয়। এগুলোর সৌন্দর্য অনন্য এবং পাওয়া খুবই কঠিন। গুণগত উৎকর্ষ ও বিরলতার কারণে মণি-মুক্তা মানুষের কাছে খুবই মূল্যবান। এগুলো সংগ্রহ করতে অনেক টাকা খরচ হয়। কারো কাছে যদি বিরল কোনো মণি-মুক্তা থাকে, তাহলে সে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করে। তারা এগুলোকে অমূল্য সম্পদ হিসেবে খুব যত্নে রক্ষা করে। মণি-মুক্তা দেখতে অনেক দর্শক তার কাছে আসেন। গুণ ও দুষ্প্রাপ্যতার কারণে মণিমুক্তার সম্মান অনেক বেশি। কিন্তু যদি মণি-মুক্তার এবং সাধারণ পাথরের মধ্যে কোনো পার্থক্য না থাকত, অর্থাৎ সব পাথরই মণি-মুক্তার মতো মূল্যবান হত, তাহলে মণি-মুক্তার এত গুরুত্ব ও সম্মান থাকত না।
মানুষের মধ্যেও যাঁরা বিরল প্রতিভাবান ও অসাধারণ গুণী তাঁরা সমাজে বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা পেয়ে থাকে। তাঁরা সাধারণ মানুষের কাছে বরেণ্য গুণীজন হিসেবে সমাদৃত হন। কিন্তু সমাজের সব লোকই যদি এ ধরনের গুণীজনে পরিণত হন তবে গুণীর সমাদর আর আগের মতো থাকে না।
প্রকৃত গুণীর সংখ্যা কম বলেই তাঁদের এত সম্মান ও মর্যাদা। নির্গুণ আর গুণী ব্যক্তি কখনোই একই মর্যাদা পেতে পারেন না। নির্গুণকে গুণীর সঙ্গে এক কাতারে দাঁড় করালে প্রকৃত গুণীর সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়।
🍀 উপসংহার: ভাবসম্প্রসারণটি কেমন লাগলো? StudyTika.com-এ আরও অনেক সহজ ও সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। একবার ঘুরে দেখো 👉 StudyTika.com – শেখা হবে আরও সহজ!