ভাবসম্প্রসারণঃ নিন্দুক সে বেঁচে থাকুক বিশ্বহিতের তরে, আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

 এই ব্লগপোস্টে দেওয়া হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ—"নিন্দুক সে বেঁচে থাকুক বিশ্বহিতের তরে, আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে"। সহজ ভাষায় লেখা এই ভাবসম্প্রসারণটি তোমার পড়াশোনায় কাজে লাগবে। নিচে পুরোটা পড়ো—আশা করি ভালো লাগবে।

ভাবসম্প্রসারণঃ নিন্দুক সে বেঁচে থাকুক বিশ্বহিতের তরে, আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

 নিন্দুক সে বেঁচে থাকুক বিশ্বহিতের তরে, আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে 

মূলভাব : নিন্দুকের কাজ হলো অপরের নিন্দা করা। তাই বলে নিন্দুককে ঘৃণা করা উচিত নয়। সে মানুষের পরম বন্ধু। নিন্দার ভয়ে মানুষ দূষণীয় কাজ থেকে বিরত থাকতে চেষ্টা করে এবং পরিপূর্ণতা অর্জন করে।

সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ সামাজিক জীব। তাই সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করে। সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় জীবনে সমালোচনাকারী বা পরনিন্দাকারী লোকের অভাব নেই। তবে সমালোচনা বা পরনিন্দা সবসময় সমাজের ক্ষতি করে না। বরং কিছু কিছু গঠনমূলক সমালোচনা সমাজ বা রাষ্ট্রকে সঠিক পথে পরিচালিত হতে সহায়তা করে। একটি রাষ্ট্রের বিরোধী দল সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে। এতে সরকার নিজেদের ভুলত্রুটি শুধরে নিতে পারে। ফলে জনগণের কল্যাণ সাধিত হয়। নিন্দ না থাকলে পৃথিবীর গৌরব হ্রাস পেত। একটি ভালো কাজের যদি সমালোচনা না হয়, তাহলে সেই ভালো কাজের প্রকৃত মূল্যায়নও সম্ভব হয় না। কারণ সমালোচনার মধ্য দিয়েই ভালো কাজটি আলোচনায় আসে এবং তার গুরুত্ব প্রতিফলিত হয়। তাই কোনো মহৎ ও কল্যাণকর কাজ করতে গেলে বারবার সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়। নানা প্রতিকূলতা, বাধা-বিপত্তি ও নিন্দা সয়েই একজন মানুষ প্রকৃত মহত্ত্ব অর্জন করতে পারে। যেমন আগুনে পুড়ে খাঁটি হয় সোনা, তেমনই মানুষের চরিত্র নিন্দাবাদের মধ্য দিয়েই নির্মল ও বিশুদ্ধ হয়। যে এই নিন্দার মুখে ভেঙে পড়ে, সে মহত্ত্বের আসনে পৌঁছাতে পারে না। নিন্দুকের কাজ শুধুই দোষ ধরা নয়—অনিচ্ছাকৃত হলেও তারা একজন মানুষকে আরও দৃঢ়, আরও উন্নত ও মহৎ করে তোলে। নিন্দুক যেমন খুঁত ধরতে ভালোবাসে, তেমনি তাদের সেই দৃষ্টিভঙ্গি একজন মানুষকে নিজের ভুল শুধরে নিতে ও আরও ভালো মানুষ হতে অনুপ্রাণিত করে। তাই নিন্দুককে শত্রু নয়, বরং পরোক্ষ বন্ধু ভাবা উচিত। তাকে ঘৃণা না করে সহনশীলতা ও ভালোবাসার চোখে দেখা প্রকৃত মানুষ হওয়ার অন্যতম পরিচায়ক। জীবনে এমনও সময় আসতে পারে, যখন প্রিয়জন, আত্মীয়স্বজন, এমনকি বন্ধুরাও দূরে সরে যায়। কিন্তু নিন্দুক যেন ছায়ার মতো সর্বদা লেগে থাকে—নিরবে, নিঃশব্দে আমাদের কল্যাণের পথে ধাবিত করে। এই জন্যই বলা হয়, নিন্দুক মানুষকে কঠিন বাস্তবতা উপলব্ধি করতে সাহায্য করে এবং একপ্রকার মনের আয়না হয়ে দাঁড়ায়। তাই জীবন চলার পথে নিন্দাকে ভয় নয়, বরং ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করাই প্রজ্ঞার লক্ষণ।

নিন্দুকের নিন্দার মাধ্যমে মানুষ নিজেদের ভুলত্রুটি সম্পর্কে অবগত হতে পারে। নিন্দুকের ভূমিকার কারণেই মানুষ ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে কল্যাণ সাধন করতে পারে। তাই নিন্দুক তার নিন্দার মাধ্যমে পরোক্ষভাবে সমাজের কল্যাণ করে।

এই ছিল আজকের ছোট্ট ভাবসম্প্রসারণ। আরো এমন সহজ ও সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ পড়তে চাইলে ঘুরে আসো আমার ওয়েবসাইট StudyTika.com এ। এখানে অনেক ভাবসম্প্রসারণ তোমার জন্য অপেক্ষা করছে!

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.