🌼 ভূমিকা: এই ব্লগপোস্টে আমরা পড়ব একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ – "স্বার্থপরতা মানব জীবনের উন্নতির পথে মূল প্রতিবন্ধক"। খুব সহজ ভাষায় এখানে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে, যেন তোমরা ক্লাস ৬ থেকে শুরু করে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যন্ত সবাই সহজেই বুঝতে পারো। পুরোটা পড়লে আশা করি ভালোভাবে শিখতে পারবে।
স্বার্থপরতা মানব জীবনের উন্নতির পথে মূল প্রতিবন্ধক
মূলভাব : মানুষ মানুষের জন্য। সকলের সাথে একাত্ম হয়ে, নিজস্ব পরিমণ্ডল থেকে বেড়িয়ে এসে বৃহত্তর মানব কল্যাণে আত্মনিয়োগই মানব জীবনের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ সামাজিক জীব। অন্যের সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া সে তার জীবনযাপন করতে পারে না। আর এ কারণেই মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে। পরের উপকারে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে সে আত্মতুষ্টি লাভ করে। কিন্তু সমাজে এমন এক শ্রেণির মানুষ রয়েছে যারা পরের উপকারের চেয়ে নিজেকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে পরের স্বার্থের ব্যাপারে উদাসীন থাকে।স্বার্থপর মানুষ সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, কারণ স্বার্থপরতা মানুষের মানবিকতার বিরোধী। যখন কেউ কেবল নিজের স্বার্থের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তখন সে অন্যদের প্রতি মায়া, স্নেহ, ভালোবাসা, সহানুভূতি হারিয়ে ফেলে। একজন মানুষ হিসেবে তার সামাজিক দায়িত্ব পালন হয় না, বরং সে সমাজের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। স্বার্থপর ব্যক্তি নিজের উন্নতি করতে পারে, কিন্তু মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা পায় না। মৃত্যুর পর তাদের নাম-মাখা পৃথিবী থেকে মুছে যায়, এমনকি কাছের মানুষরাও তাদের ভুলে যায়। যেখানে মানুষের উন্নতির জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হয়, সেখানে স্বার্থপর ব্যক্তি শুধু নিজের চিন্তায় থাকায় বড় উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিশ্বজয়ের মহান মানুষরা নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করে সমাজের কল্যাণে কাজ করে স্মরণীয় হয়েছেন। তাদের পথ অনুসরণ করে আমাদেরও সমাজের উন্নয়নে নিজের অবদান রাখতে হবে এবং পরোপকারের মহৎ কাজে নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে।
স্বার্থপরতার বলয় থেকে বেরিয়ে এসে পরোপকারে আত্মনিয়োগ করতে হবে তবেই সুখময় জীবনের স্বাদ পাওয়া যাবে। সমাজ হবে সুন্দর ও স্বার্থক। মনে রাখতে হবে-
‘স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে, সে কখনও শেখেনি বাঁচিতে।’
এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো
মূলভাব : নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যস্ত থাকায় শান্তি নেই; বরং পরার্থপরতাই উন্নতির অন্যতম বান্ধব।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষকে বলা হয় আশরাফুল মাখলুকাত, অর্থাৎ সমস্ত সৃষ্টি জগতের মধ্যে সর্বোচ্চ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সে উন্নতির আকাঙ্ক্ষী। ধৈর্য্য, অধ্যবসায়, সত্যবাদিতা, পরার্থপরতা ইত্যাদি ভালো গুণাবলী উন্নতির মূল হাতিয়ার। কিন্তু উন্নতির পথে বড় বাধা হলো অহংকার, অহংবৃত্তি, বিলাসিতা এবং স্বার্থপরতা। যারা এসবকে সুখের উপকরণ মনে করে উন্নতির আশা করে, তারা আসলে নিজেরাই পড়ে যায় অবনতি ও বিপদের মধ্যে। কারণ মানুষ শুধুমাত্র নিজের সুখ-সুবিধার জন্যই জন্মায়নি। জীবনের প্রকৃত অর্থ হলো অন্যের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা। পৃথিবীর সৎ ও মহৎ মানুষরাই তাই করে থাকেন—they সর্বদা নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে অন্যের ভালো চিন্তা করেন। অন্যদিকে, স্বার্থপর হয়ে যিনি মনে করেন পুরো জগৎ শুধু তারই জন্য, আর সবাইকে বঞ্চিত করে বড় হতে চান, তার জীবন হয় কলুষিত—বিদ্বেষ, হিংসা ও কলহে ভরে যায়। কিন্তু যখন মানুষ নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে অন্যের জন্য কাজ করে, তখন তার জীবন হয় সুন্দর ও সার্থক।
মন্তব্য : আত্মার সার্বিক তৃপ্তির কাছে জড়দেহের সুখভোগ মূল্যহীন। স্বার্থপরতার পাষাণ প্রাচীরে কখনোই সুখের অমনিবাস তো দূরের কথা অভিষেকই হতে পারে না।
🍀 উপসংহার: ভাবসম্প্রসারণটি কেমন লাগলো? যদি উপকারে আসে, তাহলে আমাদের সাইটে আরও অনেক সহজ ভাবসম্প্রসারণ আছে। আরও পড়তে ভিজিট করো 👉 StudyTika.com – পড়াশোনাকে সহজ করে তোলার জন্যই তো আমরা আছি!