✦ ভূমিকা: এই ব্লগপোস্টে রয়েছে একটি সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ— “ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই জ্ঞানীর কাজ”। সহজ ভাষায় লেখা এই ভাবসম্প্রসারণটি স্কুল ও পরীক্ষার জন্য খুবই কাজে লাগবে। চলুন পড়ে নিই এই ছোট অথচ মূল্যবান লেখাটি।
ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই জ্ঞানীর কাজ
মূলভাব : অতীত ইতিমধ্যে অতীত হয়ে গেছে এবং বর্তমানও খুব দ্রুত অতীতে পরিণত হয়, তাই জ্ঞানী ব্যক্তিরা সব সময় ভবিষ্যতকে সামনে রেখে চিন্তা ও পরিকল্পনা করে থাকেন।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের কর্মময় জীবনের সাথে তিনটা কাল সম্পৃক্ত আছে, অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। অতীতকে ভুলে যেতে হবে, অতীতের দুশ্চিন্তার ভার অতীতকেই নিতে হবে। অতীতের কথা ভেবে অনেক বোকাই মরেছে। পণ্ডিতেরা বলে গেছেন ‘গতস্য শোচনা শাস্তি’। আর বর্তমান সে তো নেই বললেই চলে। কারণ একটি কথা বলতে বলতে অতীত হয়ে যায়। কাজেই নদীর তরঙ্গ গোনা আর বর্তমানের চিন্তা করা সমানই অনর্থক। ভবিষ্যতটা হল আসল, কারণ ভবিষ্যতকে মানুষ পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাতে পারে। ভবিষ্যৎ সকলের সম্মুখে উন্মুক্ত। সেটা কখনও শেষ হয় না। তাই ভবিষ্যতের মানব কেমন হবে সেটা একবার ভেবে দেখা উচিত। ভবিষ্যতে মানুষের জীবনযাত্রা কিরূপ হবে। কি কি বিপদে তারা পতিত হতে পারে, তাদের সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আজকেই ভাবা উচিত। ভবিষ্যতের মানুষকে সুন্দর একটি পৃথিবী উপহার দিতে আজকেই নিতে হবে বাস্তব পদক্ষেপ। ভবিষ্যৎ ভাবনা হল একটি পরিকল্পনা। আর পরিকল্পনা ছাড়া যে কোথাও এগুনো যায় না তা মানুষ মাত্রই উপলব্ধি করতে পারে। ভবিষ্যতের ভাবনায়ই মানুষ সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ হয়। সংসারের গণ্ডির মধ্যে থেকে সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তায় মা বাবার কাটে অধিকাংশ সময়। সমস্ত জীব-জন্তুর দুটো চোখ সামনে থাকার মানে হল ভবিষ্যতের দিকে যেন নজর থাকে। কেননা ভবিষ্যতের ভাবনাই জীবনকে সার্থক ও সুন্দর করে তোলে।
অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে আসে মানুষের জন্য অফুরন্ত সম্ভাবনা। সেই সম্ভাবনাকে যথার্থভাবে বাস্তবায়নে ভবিষ্যতের ভাবনা সদা মনে জাগ্রত রাখা প্রয়োজন।
এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো
মূলভাব : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ–মহাকাল এই তিন ভাগে বিভক্ত। জ্ঞানী মানুষেরাই ভবিষ্যতের চিন্তা বেশি করে। আর যারা অবিবেচক, তারা বর্তমান ও অতীত নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ অনিশ্চিত, সেটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। যে কোনো সময় যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে। অনেক জ্ঞানী মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে থাকেন। প্রাণিজগতেও কিছু প্রাণী যেমন পিঁপড়ে, মৌমাছি ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে; তাই মানুষেরও ভবিষ্যৎ চিন্তা করা উচিত। কিছু মানুষ অতীত নিয়ে খুব চিন্তা করেন। যদি অতীতের কোনো ঘটনা খারাপ হয়ে থাকে, তারা শোকে পড়ে যায় এবং বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের দিকে মনোযোগ দিতে পারেন না। এটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়, কারণ অতীত নিয়ে বেশি চিন্তা করলে কোনো লাভ হয় না। পণ্ডিতেরা বলেছেন, ‘গতস্য শোচনা নাস্তি’, অর্থাৎ অতীত নিয়ে দুঃখ করা উচিত নয়। তবে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়াই ভালো। অন্যদিকে কিছু মানুষ শুধুমাত্র বর্তমান নিয়ে চিন্তা করেন, যা যথার্থ নয়। কারণ বর্তমান কথাই তাড়াতাড়ি অতীত হয়ে যায়। তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভবিষ্যতের চিন্তা করা, কারণ ভবিষ্যৎ কখনো শেষ হয় না। সত্যিকারের জ্ঞানীরা সব সময় ভবিষ্যতকে সামনে রেখে পরিকল্পনা করেন।
✦ উপসংহার: আশা করি এই ভাবসম্প্রসারণটি আপনার ভালো লেগেছে। আরও সহজ ভাষার ভাবসম্প্রসারণ পড়তে চাইলে ঘুরে আসুন আমার ব্লগ StudyTika.com থেকে। এখানে রয়েছে অনেক ভাবসম্প্রসারণ একসাথে, একদম সহজ ভাষায়।