এই ব্লগপোস্টে দেওয়া হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ — "মানুষকে ভুল করিতে না দিলে, মানুষকে শিক্ষা লাভ করিতে দেওয়া হয় না"। সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন সব ক্লাসের শিক্ষার্থীরা সহজে বুঝতে পারে। চলুন, পুরোটা পড়ে নেই।
মানুষকে ভুল করিতে না দিলে,মানুষকে শিক্ষা লাভ করিতে দেওয়া হয় না
মূলভাব : মানবজীবন সবসময় পরিবর্তনশীল, আর এই পরিবর্তনের পথে ভুলের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভুল করা কি দোষের কথা? না, ভুল দোষ নয়, কারণ ভুল হলো জীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ। ভুল থেকেই মানুষ পৃথিবীর সব ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করে। ভুল না করার জন্য প্রথমেই ভুল করতে হয়, তারপর সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে ঠিক করতে হয়।
সম্প্রসারিত ভাব : কাজে ভুল হলেও জীবনের জন্য কাজ করতে হয়। ভুল করার মধ্যেই মানুষের শিক্ষার তাৎপর্য নিহিত। কাজ করলেই ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, কাজ না করলে ভুলও হবে না। কর্মহীন জীবন স্থবির হয়ে যায়। জীবনে চলার পথে নানাকাজে ভুল হয় বলে মানুষ কখনও থেমে থাকে না। ভুলের মধ্য দিয়েই জীবনের নতুন নতুন অভিজ্ঞতাকে অর্জন করে নেয়। ভুল শুধরে শুধরে মানুষ কজে দক্ষ হয় এবং ক্রমেই ভুলের মাত্রা কমতে থাকে। যারা শিখতে চায় তাদের কাজে ভুল হবেই শিক্ষা গ্রহণ মানব জীবনের সর্বকালের বৈশিষ্ট্য। শিক্ষার ভিতর দিয়েই মানুষ জীবনের পথে এগিয়ে চলে। সব কাজই যে নির্ভুল হবে এমন কোন কথা নেই। কারণ অনেক কাজেই উদ্যোগী মানুষকে প্রথম অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয়। সেখানে ভুল-ভ্রান্তি হওয়া স্বাভাবিক। কাজের বেলায় নির্ভুল কাজ করতে হবে এমন শর্ত আরোপ করে দেওয়াই ভুল। কেননা নির্ভুল কাজের অঙ্গিকার কারও পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই জীবনে ভুল স্বীকার করে নেওয়াই যথার্থ সত্য, অস্বীকারে থাকে মিথ্যার চাতুর্য। ভুলভ্রান্তি সত্যকে পাওয়ার পথে প্রতিবন্ধক বা অন্তরায় নয়, বরং ভুল ভ্রান্তি থেকে বাস্তব-অভিজ্ঞতা লাভ করেই মানুষ প্রকৃত সত্যকে উদ্ঘাটন করে। জীবনে ভুলকে অপরাধ ভাবার চেয়ে স্বাভাবিক একটি অংশ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। তবে অসতর্কতা বা লাপরসতার কারণে যে ভুল হয়, সেটি ভুলের মতো নয়, কারণ তা সতর্কতার অভাবে ঘটে। যারা মিথ্যা ও ভুল-ভ্রান্তিকে এড়িয়ে শুধু সত্যের সন্ধান করে, তারা সত্যের কাছে পৌঁছাতে পারে না। মানবজীবনের প্রতিটি ভুল মানুষকে এক বা একাধিক নতুন সত্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। যেমন শিশুরা আছাড় খেয়ে খেয়ে হাঁটতে শেখে, তেমনি মানুষও ভুল-ভ্রান্তির মধ্য দিয়ে সত্য চিনে নেয়। ভুল করে এবং তা শুধরে মানুষ তার শিক্ষার শূন্যতা পূরণ করে।
জীবনের জন্য কাজ আর কাজ করতে গেলেই ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক, তাই ভুল করাটা দোষের নয় বরং ভুলের ভয়ে কাজ থেকে বিরত থাকাই দোষের।
এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো
মূলভাব : ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। ভুল থেকেই মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করে, অভিজ্ঞতা অর্জন করে। অর্থাৎ মানুষ ভুল থেকেই নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ পায় এবং এতে মানব জীবন পরিশুদ্ধ হয়।
সম্প্রসারিত ভাব : মানবজীবন কর্মমুখর। মানুষকে সর্বদাই কোনো না কোনো কাজে জীবন অতিবাহিত করতে হয়। এই চলার পথে বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি, তথা বন্ধুর পথ অতিক্রমে সতর্ক থেকে সার্থকতা অর্জন করতে হয়। কিন্তু সর্বদা কি নির্ভুল পথ চলা সম্ভব? মোটেও তা সম্ভব নয়। ভুল করা দূষণীয় নয়, ভুল করা মানবজীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ভুলের মধ্য দিয়েই মানুষকে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। পৃথিবীর কোনো মানুষই শতভাগ নির্ভুলভাবে কোনো কাজ সম্পন্ন করতে পারে না। কাজে ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে ভুলের ভয়ে কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। এতে জীবন স্থবির হয়ে পড়ে। তখন জীবনের কোনো তাৎপর্য খুঁজে পাওয়া যায় না। ভুলের মধ্য দিয়েই মানুষ নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে। ভুল থেকে শিখে ধীরে ধীরে দক্ষতা বাড়ে এবং ভুল কমে আসে। কাজ করার সময় ‘একদম নির্ভুল’ হওয়া বাধ্যতামূলক নয়, বরং ভুল ভুলে কাজ করার সুযোগ থাকা উচিত। নিয়মিত কাজ করার মাধ্যমে মানুষ নতুন কিছু শিখে এবং পৃথিবীকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে। ভুল থেকেই প্রকৃত সত্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়। মানুষের অর্জিত জ্ঞান মানবকল্যাণে কাজে লাগে। যারা শুধু মিথ্যা বা ভুল ভুলে সত্য খোঁজে, তারা কখনো সত্য জানতে পারে না। জীবনে প্রতিটি ভুল মানুষকে নতুন একটি সত্যের কাছে নিয়ে যায়। মূলত ভুল থেকেই মানুষ সঠিক পথ খুঁজে পায়।
মন্তব্য : মানুষের প্রতিটি ভুলই মানুষকে নতুন পথ দেখায়। মানুষ তার ভুল থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করে এবং সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। তাই ভুলকে অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ স্বরূপ গ্রহণ করে, কাজের মাধ্যমে জীবনে এগিয়ে যেতে হবে।
আশা করি, ভাবসম্প্রসারণটি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছো। এমন আরও সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ পড়তে ভিজিট করো আমার ওয়েবসাইটে — StudyTika.com। নতুন নতুন ভাবসম্প্রসারণের জন্য নিয়মিত চোখ রাখো!
rovehin720@ethsms koma
234FGSDG$322dfg