এই ব্লগপোস্টে আপনি পাবেন একটি সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ যার শিরোনাম “ফুলের বাগান সবার মনেই আছে, ফুল ফুটাতে সবাই নাহি পারে”। এখানে ভাবসম্প্রসারণটি খুব সহজ ও পরিষ্কার ভাষায় লেখা, যা ৬ থেকে ১০ শ্রেণি এবং SSC-HSC শিক্ষার্থীদের জন্য খুব উপযোগী। আশা করি, এই ভাবসম্প্রসারণ আপনাদের পড়তে ভালো লাগবে এবং লেখায় নতুন ভাবনা যোগ করবে।
ফুলের বাগান সবার মনেই আছে,ফুল ফুটাতে সবাই নাহি পারে
মূলভাব : প্রত্যেক মানুষই ফুল ভালোবাসে। ফুল পেতে চাইলে বাগান করতে হয়, ফুলের গাছ লাগাতে হয়, গাছের যত্ন নিতে হয়। তার পরই কেবল বাগানের গাছে ফুল ফোটে। বাগানে ফুল না ফুটলে শুধু গাছের সৌন্দর্যে মন ভরে না। বাগানের সার্থকতা ফুল ফোটানোতে।
সম্প্রসারিত ভাব : আমাদের জীবন ফুলের বাগানের মতো। আমরা মনের মাটিতে আকাঙ্ক্ষার বীজ রোপন করি, তাতে গাছ জন্মায় আমাদের আকাঙ্ক্ষারূপ বৃক্ষ শত শাখায় পত্র-ফুষ্পে বিকশিত হতে চায়। জ্ঞান ও কার্যে জীবনকে পূর্ণতা দান করতে চায়। চেষ্টা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনরূপ বাগানকে ফুলে-ফলে ভরে তোলা যায়। পরিশ্রম ছাড়া শুধু স্বপ্ন দিয়ে জীবনকে সুন্দর করার কোনো পথ নেই। জ্ঞান, সেবা, আদর্শ, ত্যাগ, শিক্ষা, মানুষের জীবনকে সুন্দর ও মহৎ করে। এতগুলো গুণের আকাঙ্ক্ষা সবারই আছে। কিন্তু সকল মানুষ এ গুণগুলোকে সার্থকভাবে বিকশিত করে তুলতে পারে না। জীবনকে জ্ঞানময় ও পরিপুর্ণ করতে পারে না। তার কারণ একনিষ্ঠ চেষ্টার অভাব। মানুষের মহত্তর ভাবনা পুষ্পের ন্যায় বিকশিত হতে চায়। চেষ্টা ও পরিশ্রম দিয়ে জীবনরূপ বাগানকে ফুলে ফুলে ভরে তোলা যায়। কিন্তু নিষ্ঠার অভাবে জীবনক্ষেত্রকে সুন্দর করে অনেকেই ফুল ফোটাবার মতো অনুকূল অবস্থানে আনতে পারে না। তাই মনের ইচ্ছাগুলো অনেক সময় মনে চাপা পড়ে থাকে, বাস্তবে তা পূর্ণতা পায় না। যত্ন আর সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে মনের অনেক ভালো গুণ ও ভাবনা মুছে যায়। সুন্দর মন থেকেই জন্ম নেয় ভালো ও নির্মল ইচ্ছা। তাই আগে দরকার মনকে সুন্দর করা, এমন মন যা নিজের ভালোটা সবার জন্য বিলিয়ে দিতে পারে। মনের ইচ্ছা ও গুণকে বিকশিত করতে হলে প্রয়োজন জ্ঞান, শিক্ষা ও সৎকর্ম। শিক্ষা হলো এমন এক পানি, যা মনরূপ মাটিতে দিলে তা ফুলে-ফলে ভরে উঠে, চারপাশে ছড়িয়ে দেয় সৌন্দর্য ও সুবাস। তাই ‘কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে’ এই নীতিকে মনে রেখে আমাদের সবার উচিত নিজের মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা স্বপ্ন ও ইচ্ছাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে ফুলের মতো গুণের চাষ করা ও তা ফুটিয়ে তোলা।
শুধু বাগান তৈরি করলেই চলবে না। বাগানকে যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে ফুল ফোটাতে হবে। ফুল ফুটলেই কেবল বাগানের সার্থকতা। আমাদের জীবনরূপ বাগানকে বিকশিত করতে হলে দরকার ঐকান্তিক সাধনা, অপরিসীম নিষ্ঠা। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই কর্মঠ হওয়ার মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। নইলে জীবনের পূর্ণাঙ্গ বিকাশ ঘটানো অসম্ভব।
এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো
ভাব-সম্প্রসারণ : সকল মানুষই সদ্গুণাবলির অধিকারী। কিন্তু প্রত্যেকে এর বিকাশ ঘটাতে পারে না।
প্রকৃতির রাজ্যে ফুল তার স্বীয় গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্যের জন্যে এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছে। তাই সৌন্দর্যের আকর হিসেবে একান্ত সখ করে মানুষ গড়ে তোলে ফুলের বাগান। বিধাতার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষের মনও ফুলের বাগানের মতো। বাগানের ফুল যেমন মানুষকে আনন্দ দিয়ে থাকে, তেমনি মানুষের বিভিন্ন গুণও অপরকে আনন্দ দিতে পারে। প্রেম-প্রীতি, মায়া-মমতা, পরোপকার, সহমর্মিতা, সহানুভূতি, সমবেদনা প্রভৃতি গুণাবলির অনুশীলনে ও ব্যবহারে স্বীয় মনোরাজ্যে গড়ে তুলতে পারে ফুলের বাগান তথা সদ্গুণাবলির ভাণ্ডার। মানুষের কাজ-কর্ম ও আচরণে ফুলের মতো সৌরভ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ভালোবাসা আর মমতায় সে গোটা পৃথিবীকে আপন করে নিতে পারে। কিন্তু অনেকেই নিজেদের রিপুর দাস হয়ে ক্ষমতা ও গুণ ভুলে পশুর মতো জীবন কাটায়। তাই তাদের মনের কোমল ও সুন্দর অনুভূতিগুলো আর বিকশিত হয় না, তারা উদার হতে পারে না। যদিও সবার মনেই যেন ফুল-ফলের বাগান রয়েছে, কিন্তু সবাই সেই বাগানে ফুল ফোটাতে পারে না। অর্থাৎ, অনেক ভালো গুণ থাকা সত্ত্বেও অনেকে তা প্রকাশ করতে পারে না।
মানুষকে স্বীয় কর্ম ও সাধনা দিয়ে প্রতিভার প্রতিফলন ঘটাতে হয়। প্রতিটি মানুষের মনের কোমল বৃত্তিগুলো যখন বাগানের অসংখ্য ফুলের মতো প্রস্ফুটিত হবে তখনই পৃথিবী হয়ে উঠবে সুখ ও শান্তির আবাসস্থল।
আশা করি, এই ভাবসম্প্রসারণ আপনাদের কাজে এসেছে। আরো অনেক সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট studytika.com-এ ঘুরে দেখুন। সেখানে আরও অনেক সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ রয়েছে, যেগুলো আপনাদের পড়াশোনায় সাহায্য করবে।