বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারির সময় ডেল্টা ও ওমিক্রন দুটি ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। ডেল্টা যেখানে তুলনামূলকভাবে গুরুতর উপসর্গ সৃষ্টি করে বহু মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য করেছিল, সেখানে ওমিক্রন অনেক দ্রুত ছড়ালেও এর উপসর্গ তুলনামূলক হালকা ছিল। তবুও, উভয়ের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে যা জানা অত্যন্ত জরুরি।
ওমিক্রন কী?
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রথম সনাক্ত হয় ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এটি করোনাভাইরাসের একটি নতুন রূপ, যা অল্প সময়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে সংক্রমিত করতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওমিক্রনের প্রধান উপসর্গ হলো অবসাদ, গলা ব্যথা, হালকা ঠাণ্ডা, মাথা ব্যথা ও জয়েন্টে ব্যথা। যদিও এটি দ্রুত ছড়ায়, তবে মৃত্যুহার ডেল্টার তুলনায় অনেক কম।
ডেল্টা কী?
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রথম আবিষ্কৃত হয় ২০২০ সালে এবং এটি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সৃষ্টি করেছিল। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল শ্বাসকষ্ট, স্বাদ-গন্ধ হারিয়ে ফেলা এবং গুরুতর নিউমোনিয়ার মতো জটিলতা। এর কারণে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে এবং হাসপাতালগুলোতে ভিড় বেড়ে যায়।
ওমিক্রন
দ্রুত ছড়ালেও উপসর্গ সাধারণত হালকা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অবসাদ, হালকা জ্বর, গলা ব্যথা ও মাথা ব্যথা দেখা যায়। মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে কম হলেও সংক্রমণের গতি অত্যন্ত বেশি।
ডেল্টা
গুরুতর শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণ এবং স্বাদ-গন্ধ হারিয়ে ফেলা ডেল্টার প্রধান বৈশিষ্ট্য। মৃত্যুহার বেশি এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি ছিল।
ওমিক্রন ও ডেল্টার মধ্যে পার্থক্য
বিষয় | ওমিক্রন | ডেল্টা |
---|---|---|
উৎপত্তি | ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়। | ২০২০ সালে শনাক্ত হয় এবং দ্বিতীয় ঢেউ সৃষ্টি করে। |
উপসর্গ | অবসাদ, গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা, ঠাণ্ডা এবং হালকা জ্বর। | শ্বাসকষ্ট, উচ্চ জ্বর, স্বাদ-গন্ধ হারানো, ফুসফুসে সংক্রমণ। |
মৃত্যুহার | তুলনামূলকভাবে কম, তবে সংক্রমণের হার অত্যন্ত দ্রুত। | অনেক বেশি মৃত্যুহার এবং গুরুতর অবস্থার ঝুঁকি। |
ভ্যাকসিনের প্রভাব | ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সীমিত হতে পারে, নতুন ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হতে পারে। | ভ্যাকসিন কিছুটা সুরক্ষা দিতে সক্ষম, তবে গুরুতর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ প্রতিরোধ নাও হতে পারে। |
সাধারণ জিজ্ঞাসা
ওমিক্রন কি ডেল্টার মতো প্রাণঘাতী?
না, ওমিক্রনের উপসর্গ তুলনামূলকভাবে হালকা। তবে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাই সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।
ভ্যাকসিন নেওয়া কি ওমিক্রন প্রতিরোধে সাহায্য করে?
হ্যাঁ, ভ্যাকসিন গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। যদিও ওমিক্রনের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কিছুটা কম হতে পারে।
সবশেষে বলা যায়, ওমিক্রন এবং ডেল্টা উভয়ই করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট হলেও তাদের প্রকৃতি, উপসর্গ এবং প্রভাব ভিন্ন। ডেল্টা ছিল বেশি প্রাণঘাতী, আর ওমিক্রন ছিল দ্রুত ছড়ানো কিন্তু তুলনামূলকভাবে কম গুরুতর। তাই প্রতিটি ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অপরিহার্য। আরও তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুন studytika.com।