বিজ্ঞান আমাদের চারপাশের অনেক রহস্যকে প্রকাশ করে। কখনও কি তুমি ভেবেছো, গরমের দিনে মাটির কলসির পানি কেন অন্য পাত্রের তুলনায় এত ঠাণ্ডা থাকে? কিংবা একটি বস্তু গরম বা ঠাণ্ডা হতে কতটা তাপ প্রয়োজন হয়, তা কীভাবে বোঝা যায়? আজ আমরা এমন কিছু মজার এবং সহজ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব, যা পড়লে তোমার দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট রহস্যগুলোও সহজে বোঝা যাবে। এই পোস্টে তুমি জানতে পারবে তাপধারণ ক্ষমতা এবং মাটির কলসির পানির ঠাণ্ডা থাকার পিছনের বৈজ্ঞানিক কারণ।
তাপধারণ ক্ষমতা কাকে বলে?
কোনো বস্তুর তাপমাত্রা ১ কেলভিন বা ১ K বাড়াতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয়, তাকে ঐ বস্তুর তাপধারণ ক্ষমতা বলে।
সহজভাবে বললে, একটি বস্তু গরম হতে বা ঠাণ্ডা হতে যে পরিমাণ তাপ নেয় বা দেয়, সেটাই তার তাপধারণ ক্ষমতা।
তাপধারণ ক্ষমতা বস্তুর উপাদান এবং ভর উভয়ের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ, দুটি ভিন্ন পদার্থের ভর ও গঠন আলাদা হলে তাদের তাপধারণ ক্ষমতাও আলাদা হবে।
তাপধারণ ক্ষমতার একক হলো জুল প্রতি কেলভিন (J K⁻¹)।
মাটির কলসিতে পানি ঠাণ্ডা থাকে কেন?
গরমের দিনে আমরা মাটির কলসির পানি খেতে খুব পছন্দ করি, কারণ এটি কাচ বা পিতলের পাত্রের পানির চেয়ে অনেক বেশি ঠাণ্ডা থাকে। কিন্তু তুমি কি কখনও ভেবেছো, কেন এমন হয়? আসলে মাটির কলসির গায়ে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে, যা খালি চোখে দেখা যায় না। এই ছিদ্রগুলোর মাধ্যমে খুব অল্প করে পানি কলসির বাইরে বেরিয়ে আসে। এই পানি বাইরে এসে বাষ্পে পরিণত হতে চায়, কিন্তু বাষ্প হতে তাপের প্রয়োজন হয়। সেই তাপটি আসে কলসির ভেতরের পানি থেকে।
ফলে ভেতরের পানি কিছু তাপ হারিয়ে ফেলে এবং ঠাণ্ডা হয়ে যায়। অন্যদিকে, কাচ বা পিতলের পাত্রে এমন ছিদ্র না থাকায় পানি বাইরে যেতে পারে না এবং বাষ্পও হয় না, তাই সেই পাত্রের পানি তেমন ঠাণ্ডা হয় না। এভাবেই মাটির কলসি প্রাকৃতিক উপায়ে পানিকে ঠাণ্ডা রাখে — কোনো ফ্রিজ ছাড়াই।
বিজ্ঞান আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক রহস্য সহজভাবে ব্যাখ্যা করে। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে তুমি তাপধারণ ক্ষমতা এবং মাটির কলসির পানির ঠাণ্ডা থাকার প্রাকৃতিক কারণ বুঝতে পেরেছো। আরও অনেক মজার ও সহজভাবে লেখা ব্লগ পোষ্ট পড়তে তুমি দেখতে পারো StudyTika.com এ। প্রতিটি পোস্টে তুমি নতুন কিছু শিখতে পারবে এবং দৈনন্দিন জীবনের নানা রহস্য জানতে পারবে।