আপনি কি জানেন দৈর্ঘ্য আসলে কী? দৈর্ঘ্য হলো কোনো বস্তুর দূরত্ব বা পরিমাপের এক গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা। আমরা দৈনন্দিন জীবনে দৈর্ঘ্যের অনেক ব্যবহার দেখছি, যেমন ঘরের মাপ নেওয়া, কাপড় কাটা, রাস্তার দূরত্ব জানা ইত্যাদি। দৈর্ঘ্য বোঝার মাধ্যমে আমরা কোনো বস্তু বা জায়গার আকার এবং স্থান সম্পর্কে সহজে ধারণা পেতে পারি। এই পোস্টে আমরা দৈর্ঘ্য, এর একক, মাপের পদ্ধতি এবং দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সহজ সূত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করব, যাতে পড়ে আপনি দৈর্ঘ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেতে পারেন। সহজ ভাষায় এবং উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যাতে যেকোনো ছাত্র-ছাত্রীর জন্য পড়া সহজ হয় এবং সবকিছু বোঝা যায়।
দৈর্ঘ্য কাকে বলে?
কোনো বস্তুর মাত্রার পরিমাপকে তার দৈর্ঘ্য (Length) বলে।
দৈর্ঘ্য হলো কোনো বস্তুর দূরত্বের পরিমাপ। সহজভাবে বললে, একটি বস্তুর বৃহত্তম মাত্রাকেই দৈর্ঘ্য বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি আয়তক্ষেত্রের বৃহত্তম দিককে আমরা দৈর্ঘ্য হিসেবে গণনা করি। দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক হলো মিটার। পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস পর্যন্ত দ্রাঘিমা বরাবর বিষুবরেখার কোটি ভাগের এক ভাগকে এক মিটার হিসেবে ধরা হয়েছিল।
পরে এটি সুবিধাজনক না হওয়ায়, প্যারিসের মিউজিয়ামে সংরক্ষিত একটি প্লাটিনাম রডকে ১ মিটার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই মিটারকে ভিত্তি ধরে রৈখিক পরিমাপ করা হয়। মেট্রিক পদ্ধতির নামকরণও মিটারের একক থেকেই এসেছে। দৈর্ঘ্য ছোট হলে সেন্টিমিটারে প্রকাশ করা হয় এবং দৈর্ঘ্য বেশি হলে কিলোমিটারে প্রকাশ করা হয়।
মেট্রিক পদ্ধতি দৈর্ঘ্য পরিমাপ
- ১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সে.মি.
- ১ মাইল = ১.৬০ কিলোমিটার
- ১ নটিক্যাল মাইল = ১.৮৫৩ কিলোমিটার বা ১৮৫৩.১৮ মিটার
- ২০০ নটিক্যাল মাইল ≈ ৩৭০ কিলোমিটার
- ১০ সেন্টিমিটার = ১ ডেসিমিটার
- ১০ ডেসিমিটার = ১ মিটার
- ১০০ সেন্টিমিটার = ১ মিটার
- ১০ মিলিমিটার = ১ সেন্টিমিটার
- ১০ মিটার = ১ ডেকামিটার
- ১০ ডেকামিটার = ১ হেক্টোমিটার
- ১০ হেক্টোমিটার = ১ কিলোমিটার
- ১ কিলোমিটার = ১০০০ মিটার
- ১ মিটার ≈ ৩৯.৩৭ ইঞ্চি
- ১ কিলোমিটার ≈ ০.৬২ মাইল
দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সূত্র
দৈর্ঘ্য মূলত একটি মাত্রাকে প্রতিনিধিত্ব করে। একটি আয়তাকার তলের ক্ষেত্রফল নির্ভর করে তার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের ওপর। যদি আমরা তলের দৈর্ঘ্যকে প্রস্থ দ্বারা গুণ করি, তাহলে তার ক্ষেত্রফল পাওয়া যায়। ফলে, একটি আয়তক্ষেত্র বা আয়তাকার পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল বের করতে, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের গুণফল করতে হয়। ক্ষেত্রফলকে প্রস্থ দ্বারা ভাগ করলে দৈর্ঘ্য পাওয়া যায়।
- আয়তাকার পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল = (দৈর্ঘ্য × প্রস্থ) বর্গ একক।
- দৈর্ঘ্য = (আয়তাকার পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল ÷ প্রস্থ) একক
আয়তাকার পৃষ্ঠতলের দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সূত্র
দৈর্ঘ্য = (আয়তাকার পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল ÷ প্রস্থ) একক
বস্ত্রের দৈর্ঘ্য পরিমাপের দেশীয় পদ্ধতি
- ৩ যবোদার = ১ আঙ্গুলী
- ৩ আঙ্গুলী = ১ গিরা
- ৩ গিরা = ১ হাত
- ১৬ গিরা = ১ গজ
- ১৮ ইঞ্চি = ১ হাত
- ৩৬ ইঞ্চি = ১ গজ
- ২ হাত = ১ গজ
- ২০ গজ = ১ থান
ভূমির/জমির ক্ষেত্রফল পরিমাপে দেশীয় ও ব্রিটিশ পদ্ধতি
- ১ বর্গ হাত = ১ গন্ডা
- ২০ গন্ডা = ১ ছটাক
- ১ ছটাক = ৫ বর্গগজ
- ১৬ ছটাক = ১ কাঠা
- ১ কাঠা = ৮০ বর্গগজ
- ১ বিঘা = ২০ কাটা বা ১৬০০ বর্গগজ
- ১০৮ ঘনহাত = ১ কুয়া
- ৩৬৪ ঘনফুট = ১ কুয়া
- ১০০০ ঘনফুট ≈ ২.৭৫ কুয়া
- ১৪৪ বর্গ ইঞ্চি = ১ বর্গফুট
- ৯ বর্গফুট = ১ বর্গগজ
- ১৭৬০ গজ = ১ মাইল
- ৪৮৪০ বর্গগজ = ১ একর
দৈর্ঘ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা যা আমাদের দৈনন্দিন জীবন ও শিক্ষায় অনেক কাজে লাগে। আমরা শিখলাম দৈর্ঘ্য কী, এর এককগুলো কীভাবে ব্যবহার হয় এবং দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সহজ সূত্রগুলো। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে আপনি দৈর্ঘ্য সম্পর্কে সুন্দরভাবে ধারণা পেয়েছেন। আরও এমন শিক্ষামূলক এবং সহজভাবে লেখা পোস্ট পড়তে আমাদের StudyTika.com ভিজিট করতে ভুলবেন না। এখানে আপনার পড়াশোনার জন্য অনেক উপকারী বিষয় পাবেন।