কাফের কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা) | কুফর শব্দের আভিধানিক অর্থ | কুফরের প্রকারভেদ

আজ আমরা জানব 'কাফের' শব্দটির অর্থ এবং এর ধর্মীয় প্রেক্ষাপট। অনেক সময় আমরা শুনি কাফের, কুফর ইত্যাদি শব্দ, কিন্তু সঠিক অর্থ জানিনা। কাফের হলো সেই ব্যক্তি যিনি আল্লাহ, ইসলাম বা নবীর প্রতি বিশ্বাস করেন না। এই ব্লগপোস্টে আমরা সহজ ভাষায় জানব কুফর শব্দের অর্থ, কুফরের প্রকারভেদ এবং কে কাফের বলে গণ্য হয়। এটি পড়লে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন ইসলামে কুফরের গুরুত্ব ও এর প্রকারভেদ। পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন, এতে আপনি ইসলামি আকিদা সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পাবেন।

 

কাফের কাকে বলে? (সহজ সংজ্ঞা)

কাফের কাকে বলে?

কাফের হলো সেই ব্যক্তি যিনি আল্লাহ, ইসলাম বা নবীর প্রতি অবিশ্বাস করে।

কাফের শব্দটি কুফর থেকে এসেছে। ‘কুফর’ শব্দের অর্থ হলো অস্বীকার করা, অবিশ্বাস করা বা লুকানো। বাংলায় ‘কাফের’ শব্দের অর্থ হলো অবিশ্বাসী। যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত দ্বীন ইসলাম বা ইসলামের কোন অংশ, ক্বুরানুল কারীম বা এর কোন আয়াত, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা কোন নবী বা রাসূলকে অস্বীকার করে, ইসলামি আকিদাহ বা মৌলিক ধর্মীয় বিশ্বাসকে অবমাননা করে বা উপহাস করে, তাকে কাফের বলা হয়। কাফের চির জাহান্নামী, সে কখনো জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে না এবং চিরকাল কঠিন শাস্তি ভোগ করবে।

উদাহরণ

যেমন ইয়াহুদী ও খ্রীস্টানরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘রাসুল’ হিসেবে বিশ্বাস করে না, ক্বুরানকে আল্লাহর কালাম হিসেবে বিশ্বাস করে না। সুতরাং তারা কাফের। অনুরূপভাবে নাস্তিক যারা আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না, তারাও কাফের। হিন্দুরাও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করে না, তাই তারা একদিকে মুশরেক, অন্যদিকে কাফেরও।

কুফর শব্দের আভিধানিক অর্থ

الكفر শব্দটি’বাবে নসর’-এর মাসদার, যা ك -ف – ر থেকে এসেছে। এর আভিধানিক অর্থ হলো:

সংজ্ঞা: ইসলামি পরিভাষায় আল্লাহর অস্তিত্ব অস্বীকার করা বা অবিশ্বাস করা কুফর বলা হয়। এছাড়াও ইসলামের মূল বিষয়ের প্রতি অবিশ্বাস করা ও অস্বীকার করাও কুফর।

কুফরের প্রকারভেদ

কুফর প্রধানত পাঁচ প্রকার:

  1. كفر إنكار (কুফর উল ইনকার): অন্তর ও মৌখিকভাবে আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসূলের রিসালাত অস্বীকার করা।
  2. كفر جحود (কুফর উল জুহুদ): অন্তরে বিশ্বাস থাকলেও মৌখিকভাবে অস্বীকার করা।
  3. كفر عناد (কুফর উল ইনাদ): অন্তর ও মৌখিক স্বীকৃতি থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তিস্বার্থ বা অন্য কারণে অস্বীকার করা।
  4. كفر نفاق (কুফর উল নিফাক): মৌখিক স্বীকৃতি দেওয়া কিন্তু অন্তরে অস্বীকার করা।
  5. كفر الاعراض (কুফর উল ই’রাধ): ইসলামের মর্মার্থ বুঝে নিজেকে তা থেকে বিরত রাখা।

কুফরের আরও প্রকারভেদ

স্বীকৃতি ও বাস্তবতার নিরিখে কুফর আবার দুই প্রকার:

  1. كفر في الاعتقاد (আকিদাগত কুফর): যেমন তাওহীদ ও রিসালাত অস্বীকার করা। ধর্মত্যাগী এবং মিথ্যা নবুয়তের দাবিদারগণ এ প্রকারের অন্তর্ভুক্ত।
  2. كفر في العمل (আমলের কুফর): যেমন নামাজ না পড়া, যাকাত না দেওয়া, রোযা না রাখা। এ জাতীয় কুফর ইসলামের মূল বিধান অমান্য করার সাথে সম্পর্কিত। যদিও তারা সরাসরি কাফের না, তবে ইসলামের বিধান অস্বীকার করলে কাফের হিসেবে গণ্য হবে।

আশা করি এই ব্লগপোস্টটি পড়ে আপনি কাফের এবং কুফরের অর্থ ও প্রকারভেদ সম্পর্কে সহজভাবে জানতে পেরেছেন। ইসলামি আকিদার বিষয়গুলো বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই এসব বিষয়ের প্রতি সচেতন থাকা উচিত। StudyTika.com-এ আরও অনেক সহজভাবে লেখা ব্লগপোস্ট আছে, সেগুলো পড়ে আপনার জ্ঞান বাড়াতে পারেন। আমাদের অন্যান্য পোস্টগুলোও দেখুন এবং নিয়মিত শিক্ষামূলক তথ্য গ্রহণ করুন।

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.