ভাবসম্প্রসারণঃ শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

 এই পোস্টে তুমি পড়তে পারবে একটি সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ: “শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে”। এটি একটি ছোট কিন্তু অর্থপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ, যা পড়ে তোমার মনে ভালো লাগবে। পুরো ভাবসম্প্রসারণটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে ফেলো।

ভাবসম্প্রসারণঃ শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

ভাবসম্প্রসারণঃ শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে

মূলভাব : শাসনের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের ভুল বা দোষ সংশোধন করা। যদি সেখানে প্রতিশোধের ভাব না থাকে এবং সহানুভূতির ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তাহলে শাসন সত্যিই অর্থবহ ও কার্যকর হয়। মূলত, শাসন মানুষের কল্যাণের জন্য করা হয়, কোনো ধরনের অত্যাচারের জন্য নয়। একজন শাসক যদি নিজের উপর অত্যাচারিত হয়, তবে তার পক্ষে ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্ত নেওয়া কখনও সম্ভব হয় না।

সম্প্রসারিত-ভাব : অন্যায় যে করে সে অপরাধী। স্বাভাবিকভাবেই অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করা হয়ে থাকে। আর কারো কোনো দোষক্রতি দূর করার জন্যই শাসনের রীতি প্রচলিত আছে। সমাজে অপরাধীকে দণ্ডদানের যে আদেশ প্রচলিত আছে তা সমাজের কল্যাণের জন্য একান্ত প্রয়োজন। দণ্ড নির্মম হলেও শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এর আবশ্যকতা অপরিহার্য। অপরাধের শাস্তি প্রদান দণ্ডদাতা বা বিচারককের অত্যাচার নয়, বরং তা অন্যায়, অনাচার, অবিচারের হাত থেকে সমাজের প্রতিটি মানুষকে রক্ষা করার একটি উপায় কিন্তু যে শাস্তি নিষ্ঠুর, সমাজ বিরোধী, বিভীষিকার সৃষ্টি করে তা ক্ষণিকের সফলতা লাভ করলেও অন্যায়কে সমূলে উচ্ছেদ করতে পারে না। প্রেমপ্রীতি মমত্ববোধ ও সমবেদনা প্রভৃতির স্পর্শ লাভ করলে প্রকৃতির মানুষ্য ও সুপ্ত মানুষত্বে জাগিয়ে তোলার সুযোগ পায়। সমাজ থেকে পাপ, অন্যায় অবিচারকে দূর করার জন্য অন্যায়কারীকে শাস্তি দিতে হবে সত্য। কিন্তু শাস্তি দেওয়ার সময় বিচারকের হৃদয় অত্যাচারীর প্রতি মহানুভূতিশীল হতে হবে। যদি বিচারকের হৃদয় সমবেদনায় কাতর হয় তবে তা অপরাধীর হৃদয় স্পর্শ করে। ফলে সে তার হারানো বিবেক বুদ্ধি ফিরে পাবে। এ অনুশোচনা ও বিবকের দংশন অপরাধীকে মনুষ্যত্বের পথে ফিরিয়ে আনবে।

শাসক ও বিচারকের মূল লক্ষ্য চরিত্রের ক্রটি সংশোধন। যার সংশোধন করা হবে তার প্রতি স্বাভাবিক সহানুভূতি থাকা আবশ্যক। মানুষের মঙ্গল করার ইচ্ছা থেকেই এ সহানুভূতির জন্ম নেয়। যদি লোকের ভালো করার ইচ্ছা না থাকে তাহলে তার বিচার করার কোন অর্থ নেই। সোহাগ, আদর, স্নেহ এ ধরনের অনুভূতির পেছনে মঙ্গলের ইচ্ছাই কাজ করে। আর যদি এ ইচ্ছা থাকে তাহলে কোন কোনো ত্রুটি সংশোধনের ক্ষেত্রে কোন অকল্যাণ কাজ করতে পারে না। আর যদি সোহাগ থাকে তাহলে শাসনের মধ্যে কল্যাণ ধর্ম অবশ্যই ফুটে উঠবে। অর্থাৎ, বিচারকের আদর্শ হওয়া উচিত পাপকে ঘৃণা করা পাপীকে নয়। এ আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে সোহাগের মনোভাব নিয়ে বিচার করলে সেটা মানবতাবিরোধী হবে না।

ভাবসম্প্রসারণটি অন্য একটি বই থেকেও সংগ্রহ করে দেওয়া হলো

মূলভাব : শাসন করার পেছনে লক্ষ্য থাকে কারও দোষ ক্রটি সংশোধন করা। তাই সেখানে কোন প্রতিশোধ প্রবণতা না থেকে যদি সহানুভূতির সম্পর্ক থাকে তবে সে শাসন তাপর্যময় হয়ে উঠতে পারে। মূলত, শাসন করা হয় কল্যাণের জন্য। কোন অত্যাচারের উদ্দেশ্যে নয়। শাসক যদি অত্যাচারিত হয় তাহলে তার পক্ষে ন্যায়বিজচার করা কখনও সম্ভবপর নয়।

সম্প্রসারিত-ভাব : অন্যায় যাকে করে সে অপরাধী, তাই সাধারণত অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হয়। শাসনের উদ্দেশ্য হলো কোনো ব্যক্তির দোষ-ত্রুটি দূর করা এবং সমাজের কল্যাণ রক্ষা করা। সমাজে অপরাধীর বিরুদ্ধে দণ্ডের ব্যবস্থা থাকা জরুরি, যদিও তা কখনো নির্মমতা ছাড়া নয়—শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মাঝে মাঝে কঠোরতার প্রয়োজন পড়ে। তবে মনে রাখতে হবে, শাস্তি যদি নৃশংস ও সমাজবিরোধী হয়ে ওঠে এবং মানুষের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে, তা অতিরিক্ত সফলতা দিলেও অন্যায় মুছে ফেলতে পারে না। শাস্তির আসল মানে হলো সমাজকে অন্যায় থেকে রক্ষা করা, বিচারক বা কর্তৃপক্ষের নির্যাতন নয়। প্রেম প্রীতি মমত্ববোধ ও সমবেদনা প্রভৃতির স্পর্শ লাভ করলে প্রকৃতির মানুষ্য ও সুপ্ত মানুষত্বে জাগিয়ে তোলার সুযোগ পায়। সমাজ থেকে পাপ, অন্যায় অবিচারকে দূর করার জন্য অন্যায়য়কারীকে শাস্তি দিতে হবে সত্য। কিন্তু শাস্তি দেওয়ার সময় বিচারকের হৃদয় অত্যাচারীর প্রতি মহানুভূতিশীল হতে হতে হবে। যদি বিচারকের হৃদয় সমবেদনায় কাতর হয় তবে তা অপরাধীর হৃদয় স্পর্শ করে। ফলে সে তার হারানো বিবেক বুদ্ধি ফিরে পাবে। এ অনুশোচনা ও বিবেকের দংশন অপরাধীকে মনুষ্যত্বের পথে ফিরিয়ে আনবে।

শাসক ও বিচারকের মূল লক্ষ্য চরিত্রের ক্রটি সংশোধণ। যার সংশোধন করা হবে তার প্রতি স্বাভাবিক সহানুভূতি থাকা আবশ্যক। মানুষের মঙ্গল করার ইচ্ছা থেকেই এ সহানুভূতি জন্ম নেয়। যদি লোকের ভালো করার ইচ্ছা না থাকে তাহলে তার বিচার করার কোন অর্থ নেই। সোহাগ, আদর, স্নেহ এ ধারনের অনুভতির পেছনে মঙ্গলের ইচ্ছাই কাজ করে। আর যদি এ ইচ্ছা থাকে তাহলে কোন কোন ক্রটি সংশোধনের ক্ষেত্রে কোন অকল্যাণ কাজ করতে পারে না। আর যদি সোহাগ থাকে তাহলে শাসনের মধ্যে কল্যাণ ধর্ম অবশ্যই ফুটে উঠবে। অর্থাৎ, বিচারকের আদর্শ হওয়া উচিত পাপকে ঘৃণা করা পাপীকে নয়। এ আত্ববিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে সোহাগের মনোভাব নিয়ে বিচার করলে সেটা মনবতাবিরোধী হবে না।

স্নেহভাজনকে শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে তার কল্যাণ সাধন করা। যেখানে এ মনোভাব থাকে না সেখানে শাস্তিদান অত্যাচর মাত্র। কিন্তু যেখানে সোহাগের মনোভাব বিরাজ করে সেখানে শাস্তিদান করা সমাজের জন্য কল্যাণকর।


এই ভাবসম্প্রসারণটি যদি তোমার ভালো লেগে থাকে, তাহলে আরও অনেক সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ পড়তে ভিজিট করো আমাদের ওয়েবসাইট StudyTika.com। এখানে তুমি পাবে সহজ ভাষায় লেখা আরও অনেক শিক্ষামূলক ভাবসম্প্রসারণ। 🌿

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.