কোষ বিভাজন আমাদের জীবনের এক চমৎকার বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। কিন্তু তুমি কি জানো, সব কোষ বিভাজন একরকম নয়? কিছু কোষ এমনভাবে বিভাজিত হয়, যেখানে কোনো জটিল ধাপ বা বিশেষ গঠন তৈরি হয় না—সবকিছু ঘটে খুব সরলভাবে! আজকের এই লেখায় আমরা এমনই এক বিশেষ ধরনের কোষ বিভাজন সম্পর্কে জানব, যা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে চল, আসুন একসাথে সহজভাবে বুঝে নিই এই প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।
অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
যে প্রক্রিয়ায় মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি নতুন কোষ তৈরি করে, তাকে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে। এই বিভাজনে নিউক্লিয়ার পর্দা ভেঙে যায় না এবং কোনো বেমতন্তু (spindle fiber) তৈরি হয় না।
অ্যামাইটোসিস কোথায় দেখা যায়
অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট, অ্যামিবা ইত্যাদি নিম্নশ্রেণির জীবদেহে দেখা যায়।
অ্যামাইটোসিসের বৈশিষ্ট্য
- এটি নিম্নশ্রেণির জীবদেহে ঘটে।
- প্রথমে নিউক্লিয়াসটি ডাম্বেল আকৃতির হয়, এরপর মাঝখানে খাঁজ সৃষ্টি হয়।
- খাঁজ গভীর হয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হলে দুটি নতুন কোষ তৈরি হয়।
- নিউক্লিয়াস বিভাজনের কোনো ধাপ (stage) গঠিত হয় না। তাই একে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলা হয়।
- নিউক্লিয়ার পর্দা অবলুপ্তি ও বেমতন্তু গঠন ছাড়াই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
- নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম সরাসরি বিভাজিত হয়।
অ্যামাইটোসিসের তাৎপর্য
- নিম্নশ্রেণির জীবরা এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বংশবিস্তার করে।
- এই বিভাজনে নিউক্লিয়াস বিভাজনের কোনো ধাপ তৈরি হয় না।
- এটি খুব অল্প সময়ে সম্পন্ন হয়।
অ্যামাইটোসিসের ধাপসমূহ
অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়া দেখতে সহজ হলেও এটি নির্দিষ্ট কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। নিচে ধাপগুলো ব্যাখ্যা করা হলো:
১. নিউক্লিয়াসের সরাসরি পরিবর্তন
কোষ বিভাজনের সময় প্রথমে নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে ক্রোমাটিন উপাদান ঘনীভূত হয়। এটি বিভাজনের জন্য প্রস্তুত হয়।
উদাহরণ: ব্যাকটেরিয়ার মতো এককোষী জীবের ক্ষেত্রে নিউক্লিয়াস সরাসরি দুই ভাগে বিভক্ত হয়।
২. নিউক্লিয়াস বিভাজন (Direct Division)
এই ধাপে নিউক্লিয়াসের মধ্যে কোনো মাইটোটিক স্পিন্ডল বা ধাপে ধাপে ক্রোমোজোমের বিন্যাস ঘটে না। নিউক্লিয়াস সরাসরি দুটি অংশে বিভক্ত হয় এবং প্রতিটি অংশ নতুন কোষে চলে যায়।
৩. সাইটোপ্লাজম বিভাজন (Cytokinesis)
নিউক্লিয়াস বিভাজনের পরে সাইটোপ্লাজমও বিভক্ত হয়। কখনো এটি সম্পূর্ণভাবে বিভাজিত হয়, আবার কখনো আংশিকভাবে বিভাজিত থাকে। এর মাধ্যমে নতুন কোষের গঠন সম্পূর্ণ হয়।
অ্যামাইটোসিসে বংশবিস্তার
এককোষী জীব যেমন ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট, ছত্রাক ও অ্যামিবা— তারা অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভক্ত হয়ে বংশবিস্তার করে।
অ্যামাইটোসিস কেন প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন
এই ধরনের বিভাজনে নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম সরাসরি বিভক্ত হয় এবং কোনো ধাপ তৈরি হয় না। তাই একে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলা হয়।
অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন সম্পর্কে জানলে আমরা বুঝতে পারি, জীবজগতে কত ভিন্নভাবে জীবন কাজ করে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছোট ছোট জীবেরা নিজেদের বংশবিস্তার করে, যা প্রকৃতির এক অসাধারণ সৃষ্টি। 💫 তুমি যদি এমন আরও সহজ ভাষায় বিজ্ঞান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চাও, তাহলে ঘুরে এসো আমার ওয়েবসাইট StudyTika.com — এখানে তুমি পাবে আরও অনেক দরকারি ও মজার শিক্ষামূলক পোস্ট!