ভগ্নাংশ নিয়ে আজকের সহজ পোস্টে আপনাকে স্বাগতম! ভগ্নাংশ কাকে বলে এবং এর প্রকারভেদ সম্পর্কে জানুন সহজ ভাষায়।
ভগ্নাংশ কাকে বলে?
যখন দুটি পূর্ণ সংখ্যাকে ভাগ বা অনুপাত আকারে প্রকাশ করা হয়, তখন যে রাশি পাওয়া যায়, সেটাকে ভগ্নাংশ বলা হয়। সহজ ভাষায়, যে সকল রাশি লব ও হর দিয়ে প্রকাশ করা যায়, সেগুলোই ভগ্নাংশ।
অথবা,লব ও হর বিশিষ্ট গাণিতিক রাশি কে ভগ্নাংশ বলে। উদাহরণস্বরূপ, X এবং Y দুটি পূর্ণ সংখ্যা হলে, ভগ্নাংশ হবে X/Y। 3 এবং 7 দুটি পূর্ণ সংখ্যা হলে, ভগ্নাংশ হবে 3/7.
অথবা,লব ও হর বিশিষ্ট গাণিতিক রাশি কে ভগ্নাংশ বলে। উদাহরণস্বরূপ, X এবং Y দুটি পূর্ণ সংখ্যা হলে, ভগ্নাংশ হবে X/Y। 3 এবং 7 দুটি পূর্ণ সংখ্যা হলে, ভগ্নাংশ হবে 3/7.
ভগ্নাংশের কত প্রকার ও কি কি?
ভগ্নাংশ মূলত দুই প্রকারের হয়ে থাকে:
- সাধারণ ভগ্নাংশ
- দশমিক ভগ্নাংশ
সাধারণ ভগ্নাংশ
যে ভগ্নাংশগুলি লব ও হর দিয়ে গঠিত, সেগুলো সাধারণ ভগ্নাংশ। উদাহরণস্বরূপ: ৫/৮, ২/৩, ১/৫।
দশমিক ভগ্নাংশ
যে ভগ্নাংশগুলি দশমিক চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়, তাদের দশমিক ভগ্নাংশ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ: ২.৫, ৩.২, ৬.৯।
আকৃতি অনুযায়ী ভগ্নাংশের প্রকারভেদ
আকৃতি অনুযায়ী ভগ্নাংশ তিন প্রকার:
- সরল ভগ্নাংশ
- জটিল ভগ্নাংশ
- যৌগিক ভগ্নাংশ
সরল ভগ্নাংশ
যে ভগ্নাংশগুলোতে স্বাভাবিক সংখ্যার লব ও হর থাকে, সেগুলো সরল ভগ্নাংশ। উদাহরণস্বরূপ: ২/৫, ৭/৩।
জটিল ভগ্নাংশ
যে ভগ্নাংশের লব বা হর বা উভয়ই ভগ্নাংশ, তাকে জটিল ভগ্নাংশ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ: ১/২/৩, ২/৩/২।
যৌগিক ভগ্নাংশ
যে ভগ্নাংশের মধ্যে আরও ভগ্নাংশ থাকে, তাকে যৌগিক ভগ্নাংশ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ: ১/২ এর ৭/৫, ২/৫ এর ৭/১১।
প্রকৃতি অনুযায়ী ভগ্নাংশের প্রকারভেদ
প্রকৃতি অনুযায়ী ভগ্নাংশ তিন প্রকার:
- প্রকৃত ভগ্নাংশ
- অপ্রকৃত ভগ্নাংশ
- মিশ্র ভগ্নাংশ
প্রকৃত ভগ্নাংশ
যে ভগ্নাংশের লব হরের চেয়ে ছোট, তাকে প্রকৃত ভগ্নাংশ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ: ১/৫, ১৩/১৭, ৫/১৮।
অপ্রকৃত ভগ্নাংশ
যে ভগ্নাংশের লব হরের চেয়ে বড়, তাকে অপ্রকৃত ভগ্নাংশ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ: ৭/৩, ১৭/১৩, ১৮/৫।
মিশ্র ভগ্নাংশ
যে ভগ্নাংশ পূর্ণ সংখ্যা এবং প্রকৃত ভগ্নাংশ নিয়ে গঠিত, তাকে মিশ্র ভগ্নাংশ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ: ১-৫/৮, ৩-১/৭।
হর অনুযায়ী ভগ্নাংশের প্রকারভেদ
হর অনুযায়ী ভগ্নাংশ দুই প্রকার:
- সমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশ
- অসমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশ
সমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশ
যদি একাধিক ভগ্নাংশের হর একই হয়, তাহলে তাকে সমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ: ১/৫, ২/৫, ৪/৫।
অসমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশ
যদি একাধিক ভগ্নাংশের হর ভিন্ন হয়, তাহলে তাকে অসমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ: ১/২, ৩/৪, ৬/৭।
ভগ্নাংশ শব্দের উৎপত্তি
ভগ্নাংশ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ভাষা থেকে, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় Fraction। বাংলা শব্দ "ভগ্ন" মানে "ভাঙ্গা" বা "বিচ্ছিন্ন", এবং "আংশ" মানে "অংশ"। তাই ভগ্নাংশের অর্থ হচ্ছে "ভাঙ্গা অংশ" বা "বিচ্ছিন্ন অংশ"।
ভগ্নাংশ নিয়ে সাধারণ সমস্যা
ভিন্ন হরের ভগ্নাংশের যোগ বা বিয়োগ করতে সমস্যায় পড়া: সমাধান: ভগ্নাংশগুলোর হর সমান করার জন্য লঘিষ্ঠ গুণিতক (LCM) নির্ণয় করতে হবে। একবার LCM পাওয়া গেলে, উভয় ভগ্নাংশের হর সমান করে যোগ বা বিয়োগ করতে হবে।
অপ্রকৃত ভগ্নাংশকে মিশ্র ভগ্নাংশে রূপান্তর করতে সমস্যা: সমাধান: অপ্রকৃত ভগ্নাংশকে মিশ্র ভগ্নাংশে রূপান্তর করতে হলে, লবকে হর দ্বারা ভাগ করতে হবে। ভাগফল হবে পূর্ণ সংখ্যা এবং ভাগশেষ হবে মিশ্র ভগ্নাংশের লব, হর অপরিবর্তিত থাকবে।
ভগ্নাংশের ব্যবহার (Practical Uses of Fractions)
ভগ্নাংশ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো:
- রান্নায়: রেসিপিতে সঠিক মাপ নির্ধারণে ভগ্নাংশ ব্যবহৃত হয়। যেমন, ১/২ কাপ চিনি মানে সম্পূর্ণ কাপের অর্ধেক অংশ।
- পরিমাপে: দৈর্ঘ্য, ওজন, বা ভলিউম পরিমাপ করার জন্য ভগ্নাংশ ব্যবহৃত হয়। যেমন, ১/৪ ইঞ্চি বা ১/৩ কিলোগ্রাম।
- অর্থ ব্যবস্থাপনায়: অর্থের হিসাব-নিকাশে ভগ্নাংশ ব্যবহৃত হয়। যেমন, টাকা বা সেন্টের হিসাব করতে ভগ্নাংশ দরকার হয়।