প্রিয় পাঠক, আজ আমরা একটি বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব—শরীয়তের দৃষ্টিতে ঈমান। ঈমান মুসলিম জীবনের মূল ভিত্তি, যা অন্তরে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি এবং কাজের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। আল্লাহ আমাদের জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য ঈমানের দিশা দিয়েছেন।
এই পোস্টে, আমরা জানতে পারব ঈমান কী, এর গুরুত্ব এবং কিভাবে এটি আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলে। চলুন, ঈমানের এই মহৎ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি!
শরীয়তের দৃষ্টিতে ঈমান কী?
শরীয়তের পরিভাষায়, ঈমান বলতে বোঝায়, অন্তরে বিশ্বাস রাখা, মুখে তা স্বীকার করা এবং কাজের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা। এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে একজন মুসলিম তার জীবন পরিচালনা করে। 'ঈমান' শব্দটি আরবি ‘আমান’ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ নিরাপত্তা, আস্থা, এবং বিশ্বাস।
মানুষের জীবনে আল্লাহর পথনির্দেশনা
আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের জীবনের দিশা দেখানোর জন্য দ্বীন নির্ধারণ করেছেন। যারা আল্লাহর দ্বীনে চলে তারা সফল হয়, কারণ আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম ইসলাম। যারা ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম হয়েছেন, তারা সৌভাগ্যবান। ঈমান হলো ইসলামের মূল ভিত্তি। আজ আমরা জানবো, ঈমান আসলে কী?
কুরআনে ঈমানের ব্যাখ্যা
আল্লাহ কুরআনে অনেক স্থানে ঈমানের গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন। মানুষের জীবনে ঈমান যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই কুফরের জ্ঞানও থাকা জরুরি। কুরআনের কিছু আয়াতের মাধ্যমে আমরা ঈমানের ব্যাখ্যা জানতে পারি:
সূরা নিসা আয়াত ১৩৬: "হে মুমিনগণ! তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসুলের প্রতি, এবং সে কিতাবের প্রতি যা তাঁর রাসুলের উপর নাযিল হয়েছে।"
সূরা আল ইমরান আয়াত ১৯৩: "হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আহ্বান শুনে তোমার প্রতি ঈমান এনেছি।"
হাদীসের আলোকে ঈমান
একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করলেন, "ঈমান কী?" রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, "ঈমান হল আল্লাহ, ফেরেশতা, কিতাব, রাসুল, এবং আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখা।"
এছাড়াও ঈমানের সাথে তাকদীরের (ভাগ্যের) ভালো-মন্দে বিশ্বাস রাখা জরুরি। রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, "ইবাদত করতে হবে এমনভাবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ, আর যদি দেখতে না পাও, তবে বিশ্বাস করো তিনি তোমাকে দেখছেন।"
জিবরীল (আ.) এর হাদীস
হাদীসে জিবরীল থেকে জানা যায় যে, ঈমানের মূল ভিত্তি আল্লাহর প্রতি, ফেরেশতাদের প্রতি, কিতাবসমূহের প্রতি, রাসুলদের প্রতি, এবং কিয়ামতের প্রতি বিশ্বাস। এছাড়াও তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখাটাও ঈমানের অংশ।
জিবরীল (আ.) একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন, এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে সঠিকভাবে উত্তর দেন।
সঠিক জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব
প্রত্যেক মুসলিমের উচিত, ঈমান সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা। অনেকেরই এ বিষয়ে সঠিক ধারণা নেই। আসুন আমরা নিজে জ্ঞান অর্জন করি এবং অপরকেও এর জন্য উৎসাহিত করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন।
এখন আমরা বুঝতে পারি যে ঈমান মুসলিম জীবনের অপরিহার্য অংশ। এটি আমাদের বিশ্বাস ও কাজের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। আশা করি, আপনি ঈমানের গুরুত্ব ও ধারণা সম্পর্কে নতুন কিছু শিখেছেন। আমাদের ওয়েবসাইটে আরও তথ্যপূর্ণ পোস্ট পড়তে ভুলবেন না এবং অন্যদের সাথে এই জ্ঞান শেয়ার করতে উৎসাহিত করুন!