রজব মাসের গুরুত্ব, ফজিলত ও আমলঃ রজব মাস! একটি পবিত্র ও সম্মানিত মাস, যা আমাদের কাছে আল্লাহর রহমত ও বরকতের বার্তা নিয়ে আসে। এই মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য এমন যে, এটি আমাদের অন্তরে আলাদা একটি অনুভূতি জাগ্রত করে। রজব মাসকে বলা হয় "শাহরুল্লাহ" বা আল্লাহর মাস। এটি শুধু একটি পঞ্জিকাগত সময় নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, ইবাদত ও প্রস্তুতির একটি বিশেষ সুযোগ। এই মাস আমাদের জীবনে নিয়ে আসে রমজানের আগমনী বার্তা। তাই আসুন, আমরা রজব মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিই।
রমজানের প্রস্তুতির মাস রজব
রজব ও শাবান মাস রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। প্রিয় নবী (সা.) রমজানের জন্য প্রস্তুতি নিতে এই দুই মাসে বেশি বেশি ইবাদত ও রোজা পালন করতেন। তিনি একটি বিশেষ দোয়া বেশি পড়তেন:
দোয়া:
اَللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।
অর্থ: হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর এই আমল মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রজব মাসের ফজিলত
রজব মাস হলো হিজরি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস। এটি আল্লাহ ঘোষিত চারটি সম্মানিত মাসের (আশহুরে হুরুম) একটি। কোরআনে বলা হয়েছে:
“নিশ্চয়ই আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মাস ১২টি, আসমান ও জমিন সৃষ্টির দিন থেকেই। সুতরাং এই মাসগুলোতে নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।” (সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৩৬)
এই মাসে নবী করিম (সা.) অধিক নফল ইবাদত করতেন। হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, রজব মাসের প্রথম রাতে দোয়া কবুল হওয়ার সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে।
মিরাজের মাস
মহিমান্বিত মিরাজ রাত রজব মাসের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। নবুওয়াতের একাদশ বছরে রজব মাসের ২৬ তারিখ রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর বিশেষ মেহমান হিসেবে আরশে আজিমে পরিভ্রমণ করেন। এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
রজব মাসের বিশেষ দোয়া
রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাসের শুরুতেই বিশেষ একটি দোয়া পড়তেন:
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ وَشَعْبَانَ وَبلغنا رَمَضَانَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।
তওবা ও ইবাদতের গুরুত্ব
রজব মাসে তওবা, ইস্তিগফার, এবং নফল রোজা পালনের মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধি অর্জন করা উচিত। ইসলামপূর্ব জাহেলিয়াতের যুগেও রজব মাস সম্মানিত ছিল। ইসলাম আসার পর এ সম্মান আরও বৃদ্ধি পায়।
রজব মাসের শিক্ষা
ইমাম আবু বকর জাসসাস (রহ.) বলেছেন, "সম্মানিত মাসগুলোতে ইবাদতের প্রতি যত্নবান হলে অন্য মাসগুলোতেও ইবাদত করা সহজ হয়।" হজরত আবু বকর বলখি (রহ.) বলেছেন, "রজব হলো ফসল রোপণের মাস, শাবান হলো সেচের মাস, আর রমজান হলো ফসল তোলার মাস।"
তাই রজব মাস থেকে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করা উচিত। বেশি বেশি নফল নামাজ ও রোজা রাখুন এবং দান-খয়রাত করুন।
রজব মাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
➕ রজব মাসের গুরুত্ব কী?
➕ রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাসে কোন দোয়া পড়তেন?
➕ রজব মাসে বিশেষ আমল কী কী?
রজব মাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
➕ রজব মাসের গুরুত্ব কী?
➕ রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব মাসে কোন দোয়া পড়তেন?
➕ রজব মাসে বিশেষ আমল কী কী?
উপসংহার
রজব মাস শুধু একটি সময় নয়, এটি আমাদের আত্মশুদ্ধির এক অপূর্ব সুযোগ। এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত করুন, দোয়া পড়ুন এবং নফল রোজা রাখুন। রমজানের প্রস্তুতি শুরু করুন এখনই। আর আপনার জ্ঞান ও ইমান আরও শক্তিশালী করতে StudyTika.com-এ আরও গুরুত্বপূর্ণ পোস্টগুলো পড়ুন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই মাসের ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দিন।