অধ্যবসায় রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)

ভূমিকা: অধ্যবসায় আমাদের জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্লগপোস্টে “অধ্যবসায় রচনা” দেওয়া হয়েছে, যা Class 7, 8, 9, 10, SSC ও HSC শিক্ষার্থীদের জন্য উপকারী হবে।

অধ্যবসায় রচনা Class 7 8 9 10 ‍SSC HSC (২০+ পয়েন্ট)

অধ্যবসায় রচনা 

সূচনা : ব্যর্থতা কেউ চায় না। সবাই সাফল্য খোঁজে। কিন্তু কেউই সব কাজে একবারে সফল হয় না। সফলতার জন্য বারবার চেষ্টা করতে হয়। কোনো কাজে সাফল্য লাভের জন্য বারবার এই চেষ্টার নামই অধ্যবসায়। অধ্যবসায় ছাড়া জীবনে উন্নতি লাভ করা যায় না। অধ্যবসায়ই হচ্ছে মানব সভ্যতার অগ্রগতির চাবিকাঠি।

অধ্যবসায় কী : অধ্যবসায় শব্দের আভিধানিক অর্থ অবিরাম সাধনা, ক্রমাগত চেষ্টা। কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অবিরাম সাধনা বা ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াকে বলে অধ্যবসায়। ব্যর্থতায় নিরাশ না হয়ে কঠোর পরিশ্রম আর ধৈর্যের সাথে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর মধ্যেই অধ্যবসায়ের সার্থকতা নিহিত।

অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা : ব্যর্থতাই সফলতার প্রথম ধাপ। ব্যর্থতার মধ্য দিয়েই সাধনার শুরু হয়, আর সফলতার মাধ্যমে তা পরিপূর্ণতা পায়। তাই জীবনে সফল হতে হলে সাধনা ও অধ্যবসায়ের কোনো বিকল্প নেই। অধ্যবসায়ী ব্যক্তি কঠিন কাজকেও সহজ করে তুলতে পারে। এমনকি অধ্যবসায়ের গুণেই মানুষ পৃথিবীতে অমর হয়ে থাকতে পারে। তাই জীবনে সফল হতে হলে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।

ছাত্রজীবনে অধ্যবসায় : ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। ছাত্রজীবনই ভবিষ্যৎ গড়ার উপযুক্ত সময়। এ সময় ব্যর্থ হলে সম্পূর্ণ মানবজীবনই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। যে ছাত্র অধ্যবসায়ী, সাফল্য তার হাতের মুঠোয়। অলস ছাত্র-ছাত্রী মেধাবী হলেও পড়াশোনায় কখনো সফল হতে পারে না। কঠোর অধ্যবসায় ছাড়া কোনো কাজেই জয়ী হওয়া যায় না। ছাত্রজীবনেই এই সত্য উপলব্ধি করে নিজেকে অধ্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে কবি কালীপ্রসন্ন ঘোষের বিখ্যাত উক্তি :

                পারিব না একথাটি বলিও না আর, 
                                       কেন পারিবে না তাহা ভাব একবার,
                              পার কি না পার কর যতন আবার
                                একবার না পারিলে দেখ শতবার।
 
অধ্যবসায় ও প্রতিভা : অধ্যবসায় প্রতিভার চেয়েও শক্তিশালী। মনীষী ভলতেয়ার বলেছেন, "প্রতিভা বলে কিছু নেই। পরিশ্রম ও সাধনা কর, তাহলেই তুমি প্রতিভাকে অগ্রাহ্য করতে পারবে।" ডালটনও বলেছেন, "লোকে আমাকে প্রতিভাবান মনে করে, কিন্তু আমি শুধুই পরিশ্রমের ফল জানি।" বিজ্ঞানী নিউটনও তার সাফল্যের রহস্য উন্মোচন করে বলেছেন, "আমার আবিষ্কার প্রতিভার কারণে নয়, বরং দীর্ঘদিনের অধ্যবসায় ও নিরবচ্ছিন্ন সাধনার ফল।"

এসব উক্তি প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র প্রতিভা কোনো সফলতার নিশ্চয়তা দেয় না। পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমেই প্রতিভাকে কাজে লাগানো সম্ভব। প্রকৃতপক্ষে, অধ্যবসায়ীরাই নিজেদের কর্ম দিয়ে প্রতিভার সীমানা অতিক্রম করে। অনেকেই কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রতিভাবান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তাই সফলতার মূল চাবিকাঠি অধ্যবসায়।

অধ্যবসায়ের উদাহরণ : পৃথিবীতে যেসব মনীষী সাফল্যের উচ্চ শিখরে আরোহণ করে অমরত্ব লাভ করেছেন, তাঁরা সকলেই ছিলেন অধ্যবসায়ী। স্কটল্যান্ডের রাজা রবার্ট ব্রুস ও ফ্রান্সের বিখ্যাত ঐতিহাসিক কার্লাইল অধ্যবসায়ের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। রবার্ট ব্রুস বারবার ইংরেজদের কাছে পরাজিত হয়েও যুদ্ধ-জয়ের আশা ও চেষ্টা ত্যাগ করেন নি। ষষ্ঠবার পরাজিত হয়ে তিনি যুদ্ধ চিন্তায় মগ্ন আছেন, এমন সময় দেখতে পেলেন একটি মাকড়সা বারবার কড়িকাঠে সুতা বাঁধবার চেষ্টা করছে এবং ব্যর্থ হচ্ছে। এইভাবে ছয়বার ব্যর্থ হয়ে সপ্তমবারে মাকড়সাটি সফল হলো। এই দেখে রবার্ট ব্রুসও সপ্তমবার যুদ্ধ করে ইংরেজদের পরাজিত করেন এবং স্কটল্যন্ডের ওপর নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন। মনীষী কার্লাইল তাঁর লেখা ফরাসি বিপ্লবের ইতিহাসের পাণ্ডুলিপি এক বন্ধুকে পড়তে দিয়েছিলেন। বন্ধুর বাড়ির কাজের মহিলা সেটিকে বাজে কাগজ ভেবে পুড়িয়ে ফেলেন। কার্লাইল এতে একটুও দমে যান নি। তিনি আবার চেষ্টা করে বইখানা লিখে বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়েছিলেন। সম্রাট নেপোলিয়ান, আব্রাহাম লিঙ্কন, ক্রিস্টোফার কলম্বাস প্রমুখ মনীষীর জীবনও অধ্যবসায়ের এক বিরাট সাক্ষ্য। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় অধ্যবসায়ের গুণেই আজ বিশ্ববিখ্যাত । ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকান্ত ভট্টাচার্য অধ্যবসায়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা বাঙালিমাত্রই তাঁদের জন্য গর্বিত।

উপসংহার : অধ্যবসায় হচ্ছে জীবনসংগ্রামের মূল প্রেরণা। এ সংগ্রামে সফলতা ও ব্যর্থতা উভয়ই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যবসায়ী মানুষ জীবনের সব ব্যর্থতাকে সাফল্যে পরিণত করতে পারে। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, জীবনে সাফল্যের জন্য অধ্যবসায়ের বিকল্প নেই।

(একই রচনা আরেকটি বই থেকে সংগ্রহ করে দেয়া হলো)

অধ্যবসায় রচনা ২

ভূমিকা: 

কীর্তিমান ব্যক্তির যেমন মৃত্যু নেই, তেমনি নিঃশেষও নেই। এ পৃথিবীতে সে নিজস্ব কীর্তির মহিমায় লাভ করে অমরত্ব। জগতে যারা কীর্তিমান হয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই ছিলেন অধ্যবসায়ী। সাফল্য লাভের জন্য বারবার চেষ্টা ও সংগ্রাম করার নামই অধ্যবসায়। যদিও মানুষ মাত্রই ভুল করে, তথাপি কোনো কাজের ব্যর্থতার গ্লানি মুছে ফেলে সফলতার দ্বারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে মহান প্রচেষ্টা, যে একাগ্রতা ও নিষ্ঠা, তারই নাম অধ্যবসায়।

অধ্যবসায় কী?

অধ্যবসায় হচ্ছে কতিপয় গুণের সমষ্টি। চেষ্টা, উদ্যোগ, আন্তরিকতা, পরিশ্রম, ধৈর্য ইত্যাদি গুণের সমন্বয়ে অধ্যবসায় পরিপূর্ণতা লাভ করে। কোন কাজে ব্যর্থ হওয়ার পরও সফলতার জন্য পুনঃ পুনঃ চেষ্টা করার নামই অধ্যবসায়। তাছাড়া মনের আস্থা ও বিশ্বাসকে বাস্তবে রূপদানের জন্য সুদৃঢ় সংকল্প নিয়ে চেষ্টার পুনরাবৃত্তিকেও অধ্যবসায় বলা হয়।

অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা

জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম । মানবজীবনের যেকোনো কাজে বাধা আসতে পারে, কিন্তু সে বাধাকে ভয় করা কাপুরুষতা । যাদের মন “সংশয়ে সংকল্প সদা টলে”, তারা সহজে সাফল্যকে করায়ত্ত করতে সক্ষম হয় না। রাতের আঁধার পেরিয়ে যেমন উজ্জ্বল সূর্য উদিত হয়, তেমনি অবিরাম চেষ্টার ফলেই মানুষের ভাগ্যাকাশে উদিত হয় সাফল্যের ধ্রুবতারা । তাই ব্যর্থতায় অবদমিত না হয়ে নিরন্ত র চেষ্টা চালিয়ে গেলে এক সময় জীবনে সাফল্য আসবেই। জগতে বড় বড় শিল্পী, সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক সবাই ছিলেন অধ্যবসায়ী। অধ্যবসায়ী না হলে কোনো জাতি উন্নতি করতে পারে না।

অধ্যবসায়ের উদাহরণ

জগতে যত বড় শিল্পী, সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক, সেনানায়ক, ধর্মপ্রবর্তক রয়েছেন, তাঁদের সবাই ছিলেন অধ্যবসায়ী। ইতিহাসের পাতায় পাতায় রয়েছে তার দৃষ্টান্ত। মহাকবি ফেরদৌসি দীর্ঘ তিরিশ বছর ধরে রচনা করেছিলেন অমর মহাকাব্য ‘শাহনামা’। জ্ঞানেন্দ্রমোহন দশ বিশ বছরের একক প্রচেষ্টায় রচনা করেন পঞ্চাশ হাজারের বেশি শব্দ সংবলিত বাঙলা ভাষার অভিধান। আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই নিজের চেষ্টা ও সাধনায় দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে সংগ্রহ করেছিলেন দু’হাজার প্রাচীন পুঁথি, যার ফলে বাঙলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রায় চার’শ বছরের ইতিহাসের অজানা অধ্যায় উদ্ঘাটিত হয়।

অধ্যবসায়ীর জীবনাদর্শ

জীবনসংগ্রামে সাফল্য লাভের মূলমন্ত্র হচ্ছে অধ্যবসায়। অর্ধ পৃথিবীর অধীশ্বর নেপোলিয়ন তাঁর জীবনকর্মের মধ্য দিয়ে রেখে গেছেন অধ্যবসায়ের অপূর্ব নিদর্শন। কোনো কাজকে তিনি অসম্ভব বলে মনে করতেন না। তাই তিনি একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও ফরাসি জাতির ভাগ্যবিধাতা হতে পেরেছিলেন। শুধু অধ্যবসায়ের বলেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র বসু, কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ মনীষীগণ বিশ্বখ্যাত হয়েছেন।

অধ্যবসায়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্য


যে জাতি যত বেশি অধ্যবসায়ী, সে জাতি তত বেশি উন্নত। আমাদের জীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। যে কোনো কাজে সফলতা আসে অধ্যবসায়ের মাধ্যমে, হোক সেটা ব্যক্তিজীবনে বা জাতীয়জীবনে। অধ্যবসায়ের কারণে জাপান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ হয়েও বর্তমানে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর একটি। চীনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। গত তিন-চার দশকে চীনের মানুষ নিজেদের দারিদ্র মুক্ত করতে পেরেছে। চীন হয়েছে বিশ্বের অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার। কোনো দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে হলে সেই দেশের প্রতিটি নাগরিককে অধ্যবসায়ী হতে হবে নিঃসন্দেহে। অবশ্য ব্যক্তিজীবনে অধ্যবসায়ের ফল জাতীয় জীবনের বৃহত্তম কল্যাণ নিয়ে আসে। সমস্ত উন্নত সভ্যতাই জাতীয় অধ্যবসায়ের ফল।

উপসংহার

যে ব্যক্তি অধ্যবসায়ী নয়, সে জীবনের কোনো সাধারণ কাজেও সফলতা লাভ করতে পারে না। জীবনের সফলতা এবং বিফলতা অধ্যবসায়ের ওপরই নির্ভর করে, তাই আমাদের সকলের উচিত অধ্যবসায়ের মতো মহৎ গুণটিকে আয়ত্ত করা, পরশপাথরের মতো এই পাথরটিকে ছুঁয়ে দেখা এবং সোনার কাঠির মতো একে অর্জন করা। মনে রাখতে হবে অধ্যবসায়ই জীবন, জীবনই অধ্যবসায়।

(একই রচনা আরেকটি বই থেকে সংগ্রহ করে দেয়া হলো)

অধ্যবসায় রচনা ৩

ভূমিকা

প্রতিটি মানুষের জীবনেই সফলতার জন্য প্রচেষ্টা থাকে। সফলতা অর্জনের পথ মোটেও সহজ নয়, তবে যারা সফল হতে চান, তারা তাদের অধ্যবসায় দিয়েই তা অর্জন করতে পারেন। জীবনে অনেক বাধা-বিপত্তি আসবে, এবং কিছু ব্যর্থতাও হতে পারে, কিন্তু যিনি তার চেষ্টা থামান না এবং সব কিছুর পরেও এগিয়ে যান, তিনি হচ্ছেন সফল। প্রত্যেকের জীবনে আলাদা লক্ষ্য থাকে এবং সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য অনেক সময় এবং পরিশ্রম দিতে হয়। তবে অনেক সময় প্রচেষ্টা করার পরও যখন লক্ষ্য পূর্ণ হয় না, তখন অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করা বন্ধ করে দেন। কিন্তু, যে ব্যক্তি জীবনের কোনো এক পর্যায়ে হাল ছাড়ে না, সে হয় সফল। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, জীবনে যেকোনো লক্ষ্য অর্জন করার জন্য সকল ব্যর্থতা ও বাধাকে অতিক্রম করতে হবে, ধৈর্য্য এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে; এই প্রচেষ্টার নামই হচ্ছে অধ্যবসায়।

অধ্যবসায় কী

অধ্যবসায় বলতে বুঝায় অবিরাম প্রচেষ্টা। যখন কোনো ব্যক্তি তার লক্ষ্য পূরণের জন্য থেমে না গিয়ে অবিচলভাবে কাজ করে, তখনই তাকে অধ্যবসায়ী বলা হয়। জীবনে কিছু ভালো পেতে হলে, তা কখনো সহজে পাওয়া যায় না। তার জন্য অধ্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে ব্যক্তি যত বেশি ধৈর্য ধারণ করে এবং তার লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে, সে তত বেশি সফলতার দিকে এগিয়ে যায়। অধ্যবসায় হচ্ছে একজন ব্যক্তির মানসিক শক্তি। সফলতার পথে যতই বাধা আসুক না কেন, একজন অধ্যবসায়ী তার সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যায়। মানসিক শক্তি যত বেশি থাকে, তত বেশি সে অধ্যবসায়ী।

কবি কালীপ্রসন্ন ঘোষ তার এক বিখ্যাত কবিতায় বলেছেন:

“পারিব না এই কথাটি বলিও না আর,
একবার না পারিলে দেখ শতবার।”

এই কথাগুলির মাধ্যমে তিনি আসলে বোঝাতে চেয়েছেন যে, যদি কোনো কাজ একবারে না হয়, তাহলে তা বারবার চেষ্টা করলেই সফলতা আসবে। তাই, অধ্যবসায় একটি অপরিহার্য গুণ।

অধ্যবসায় কীভাবে সফলতার পথে সহায়ক

যে ব্যক্তি তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য অধ্যবসায় প্রদর্শন করে, তার জীবন সহজে সফল হতে পারে। জীবনে নানা বাধা আসবে, কিন্তু যারা তাদের লক্ষ্য স্থির রেখে কাজ করতে থাকে, তারা কখনও থামতে পারে না। তাদের এই অধ্যবসায় তাদেরকে সফলতার দিকে নিয়ে যায়। বিশ্বের সমস্ত বড় বড় সফল মানুষদের মাঝে এই গুণটি ছিল। যেমন বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, সাহিত্যিক, শিল্পী, বা সমাজ সংস্কারকরা — তাদের সকলের সফলতার পিছনে অধ্যবসায় ছিল। যদি তারা অধ্যবসায় না দেখাতেন, তাহলে তারা নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারতেন না। অধ্যবসায় এমন একটি শক্তি, যা একজন ব্যক্তিকে তার বাধা পেরিয়ে অসাধ্য সাধনে সহায়তা করে।

অধ্যবসায় ও সফলতার সম্পর্ক

অধ্যবসায় হলো সফলতার চাবিকাঠি। জীবনে কোন কিছু অর্জন করতে হলে কখনোই সহজে তা পাওয়া যায় না। অধ্যবসায়ের মধ্য দিয়ে যে সফলতা আসে, তা অভিন্ন। যারা নিজেদের কাজের প্রতি অবিচল থাকে এবং বারবার চেষ্টা করে, তারা এক সময় সফল হয়। বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, দার্শনিক, এমনকি বড় উদ্যোক্তাদেরও সফলতার পেছনে অধ্যবসায়ই প্রধান কারণ। বিজ্ঞানী থমাস এডিসন তাঁর শতাধিক বার ব্যর্থ হয়ে শেষে বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিষ্কার করেছেন, যদি তিনি হাল ছেড়ে দিতেন, তাহলে পৃথিবী কখনো এই আবিষ্কার পেত না। তিনি তাঁর ব্যর্থতাকে অধ্যবসায় ও অধ্যয়ন হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।

অধ্যবসায়ের গুরুত্ব

কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন:

“কেন পান্থ ক্ষান্ত হও, ভেরি দীর্ঘ পথ
উদ্যম বিহনে কার পুরো মনোরথ?”

এটি আমাদের জীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব বোঝাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উক্তি। পৃথিবীতে সকল মানুষই কর্মরত থাকে, এবং কর্মের সাথে জড়িত প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে অধ্যবসায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যবসায় হলো সেই শক্তি যা আমাদের সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সফলতা পেতে হলে মাঝে মাঝে ব্যর্থতার সম্মুখীন হতে হয়, কিন্তু এটি কোনোভাবেই আমাদের থামাতে পারে না। ব্যর্থতাই হলো সফলতার প্রথম সিঁড়ি। বিল গেটস একবার বলেছিলেন:

“জীবনে বড় ধাক্কা খাওয়া বা বাজে পরিস্থিতির শিকার হওয়াও সাফল্যের অন্যতম মূলমন্ত্র।”

অধ্যবসায় থাকলে, মানুষ অনেক কিছুই অর্জন করতে পারে যা একদম অসম্ভব মনে হতে পারে। যারা বারবার ব্যথা বা দুঃখের পরেও থেমে না থেকে তাদের লক্ষ্য অর্জনে সংগ্রাম চালিয়ে গেছে, তারাই প্রকৃত অধ্যবসায়ী। এ কারণে মানব জীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।

ব্যক্তিগত জীবনে অধ্যবসায়

জীবনের পথে চলতে গিয়ে নানা বাধা ও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যার সমাধানে অধ্যবসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা সামান্য চেষ্টা করেই হাল ছেড়ে দেয়, তারা প্রকৃত অধ্যবসায়ী নয়। কিন্তু যারা নিরলস পরিশ্রম ও দীর্ঘ প্রচেষ্টার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করে, তারাই সত্যিকারের অধ্যবসায়ী। অধ্যবসায় না থাকলে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপেই ব্যর্থতা ও হতাশা ছাড়া কিছুই অর্জিত হয় না।

ছাত্র জীবনে অধ্যবসায়

ছাত্রজীবন আমাদের ভবিষ্যত জীবনের প্রস্তুতি। এই সময়ে অধ্যবসায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা অর্জন এবং অধ্যবসায়ের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। শুধুমাত্র মেধা থাকলেই সফলতা আসে না। পড়াশোনায় মনোযোগী না হলে, মেধা একা কোনো কাজে আসে না। তাই ছাত্রজীবনে অধ্যবসায় রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। যখন একজন ছাত্র নিয়মিত অধ্যয়ন করে, তখন সে শুধুমাত্র জ্ঞান অর্জন করে না, তার জীবনও সাফল্যের দিকে এগিয়ে যায়। অনেক মেধাবী ছাত্র শিখতে যথেষ্ট চেষ্টা না করার কারণে জীবনে সফলতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়।

মানব সভ্যতায় অধ্যবসায়

আমাদের আজকের এই আধুনিক পৃথিবী আমাদের পূর্বপুরুষদের অধ্যবসায়ের ফল। অতীতে মানুষ গুহায় বা বন-জঙ্গলে বাস করত, এবং তখন কোনো সভ্যতা ছিল না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মানুষের প্রচেষ্টায় সভ্যতার বিকাশ ঘটে। আজ যেসব জিনিস আমাদের কাছে রয়েছে, তা একসময় মানুষের স্বপ্ন ছিল। এই মানব সভ্যতার উন্নতি কোনও সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু অবিরাম পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে মানুষ এটি অর্জন করেছে।

মনীষীদের জীবনে অধ্যবসায়

বিশ্বের মহান ব্যক্তিত্বদের জীবনেও অধ্যবসায় ছিল তাদের সফলতার মূল চাবিকাঠি। যেমন মহাকবি ফেরদৌসী তার অমর মহাকাব্য “শাহনামা” লেখার জন্য তিরিশ বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আর জ্ঞানেন্দ্র মোহন দাশ, যিনি বিশ বছর ধরে কাজ করে “বাংলা ভাষার অভিধান” রচনা করেছিলেন। আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ, যারা সহায়তা ছাড়া প্রায় দু হাজার প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহ করেছিলেন, তাদের জীবনের অধ্যবসায়কে স্মরণ করতে হয়। এমনকি স্কটল্যান্ডের রাজা রবার্ট ব্রুসও ছয়বার ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হলেও থামেননি এবং শেষ পর্যন্ত তিনি জয়ী হন। এছাড়া, বিজ্ঞানী নিউটনও তার বিজ্ঞানের অবদান রেখেছেন দীর্ঘকাল ধরে একনিষ্ঠ সাধনা ও নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে। তাদের এই পরিশ্রমী জীবনই আমাদের শিক্ষা দেয় যে, অধ্যবসায় ছাড়া বড় কিছু অর্জন করা সম্ভব নয়।

অধ্যবসায়ের ফলস্বরূপ সাফল্য

অধ্যবসায় হলো সেই শক্তি যা আমাদের দৃষ্টিকে চমৎকার ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যায়। জীবনযুদ্ধে সাফল্য অর্জন করতে হলে আমাদের ধৈর্য ও পরিশ্রমের উপর নির্ভর করতে হয়। অধ্যবসায় থাকার কারণে মানুষের জীবন সহজতর হয় না, তবে এর মাধ্যমেই আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করি। তাই আমাদের জীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব কখনোই কমে না। যে যত কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায় দেখায়, তারই সামনে সাফল্যের পথ উন্মুক্ত হয়।

জাতীয় জীবনে অধ্যবসায়

আমাদের জাতীয় জীবনের উন্নতি এবং সগৌরব প্রতিষ্ঠায় অধ্যবসায়ের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। অধ্যবসায় শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নয়, জাতীয় জীবনে ও খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি জাতির সফলতা ও অগ্রগতি নির্ভর করে তার প্রতিটি নাগরিকের আত্মবিশ্বাস, কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের ওপর। এই কারণেই, একটি জাতির বৃহত্তর কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে, প্রত্যেক নাগরিকের মধ্যে অধ্যবসায়ের গুণাবলী থাকা অত্যন্ত জরুরি।

বিজ্ঞানে অধ্যবসায়

বিশ্বের সকল ক্ষেত্রেই অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম, তবে বিজ্ঞানে এর ভূমিকা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। বিজ্ঞান কোনো সহজ বিষয় নয়, বরং এটি অবিরাম অধ্যবসায়ের ফলস্বরূপ এগিয়ে যায়। যত বড় বড় বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার বা প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়েছে, তার পেছনে আছেন বিজ্ঞানীরা যারা দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে এটি সম্ভব করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, বর্তমান যুগে আমরা যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করি, তা অতীতে এমন ছিল না। বৈজ্ঞানিকরা তাদের পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে বিশ্বে নতুন নতুন আবিষ্কার করে চলেছেন। তাই, বিজ্ঞানের মধ্য দিয়ে আমরা শিখতে পারি যে অধ্যবসায় কখনও ব্যর্থ হয় না, বরং এটি সাফল্যের পেছনে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।

অধ্যবসায়ের মূল্য

মানুষের জীবনে অধ্যবসায়ের মূল্য অত্যন্ত বড়। জীবনের যে কোনো কঠিন পরিস্থিতি বা বিপদই আসুক না কেন, অধ্যবসায়ী মানুষ সেগুলোর মোকাবিলা করতে সক্ষম। যেমন বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, ভূমিধস, নদী ভাঙন ইত্যাদি প্রকট সমস্যা, কিন্তু মানুষ এসবের সঙ্গে সংগ্রাম করে এগিয়ে যেতে সক্ষম। এটি সম্ভব হয়েছে তাদের দৃঢ় মনোবল, সাহসিকতা এবং অধ্যবসায়ের কারণে। অধ্যবসায়ের মূলমন্ত্র হলো সাহস এবং আত্মবিশ্বাস, যা মানুষকে প্রতিটি বিপদ থেকে বেরিয়ে আসার শক্তি দেয়।

অধ্যবসায় এবং প্রতিভা

অনেকে বিশ্বাস করেন যে, সফলতা শুধু প্রতিভার উপর নির্ভর করে। কিন্তু এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। কোনো মানুষের মধ্যে যদি প্রতিভা থাকে, তবে তার মধ্যে যদি অধ্যবসায় না থাকে, তবে সে তার প্রতিভা কখনও পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারবে না। এটি একটি সাধারণ ধারণা যে, শুধুমাত্র প্রতিভাবান ব্যক্তিরাই সফল হয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অধ্যবসায়ই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। প্রতিভা সফলতার পেছনে অবদান রাখলেও, তাকে পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সঠিক পথে পরিচালিত করা হয়।

সাফল্যের চাবিকাঠি

অধ্যবসায় ছাড়া সফলতা কখনোই অর্জন করা সম্ভব নয়। ব্যক্তিগত জীবনে, শিক্ষাজীবনে, অথবা কোনো ক্ষেত্রেই অধ্যবসায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এটি শুধু একজন ব্যক্তির সাফল্যের চাবিকাঠি নয়, বরং জাতীয় উন্নতিরও অন্যতম প্রধান উপাদান। আমরা যদি নজর করি, বিশ্বে যেসব বড় বড় মনীষী, বিজ্ঞানী এবং সফল উদ্যোক্তা আছেন, তারা সবাই কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছেছেন। তাই অধ্যবসায়কে কখনো অবহেলা করা উচিত নয়, কারণ এটি সাফল্যের সবচেয়ে বড় উপাদান।

অধ্যবসায়ের চর্চা

অধ্যবসায় একটি শখ বা আগ্রহের বিষয় নয়, এটি একটি অভ্যাস যা চর্চার মাধ্যমে অর্জন করা যায়। এই চর্চার মাধ্যমে একজন মানুষ তার জীবনের কঠিন বাধাগুলো অতিক্রম করে সফলতা অর্জন করতে পারে। এটি কখনোই সহজ নয়, তবে অধ্যবসায়ের চর্চা না করলে, তা অর্জন করা সম্ভব হয় না। যেমন আমেরিকার একজন সফল উদ্যোক্তা আর্নল্ড গ্লাসগো বলেছিলেন, “সাফল্যের আগুন একা একা জলে না, এটা তোমাকে নিজ হাতে জ্বালাতে হবে।” তাই, অধ্যবসায়ের চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের জীবনের সফলতার দিক নির্দেশনা দেয়।

অধ্যবসায়হীন মানুষের পরিণাম

মানব জীবনে সফলতা অর্জন করা খুবই সহজ নয়। অনেক মানুষ কোন কাজে প্রথমে সফল হওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু শেষে অধ্যবসায়ের অভাবে তারা তা শেষ করতে পারে না। একজন মানুষের জীবনে যদি অধ্যবসায় না থাকে, তবে সে কখনোই সফল হতে পারবে না। কেননা, প্রতিটি সফলতার পেছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং অধ্যবসায়। অধ্যবসায় না থাকার কারণে অনেকেই ব্যর্থ হন। অ্যাপেল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস বলেছিলেন-

“রাতারাতি সাফল্য কিছুই নেই। মনোযোগ দিয়ে দেখুন, সব সাফল্যই অনেক সময় নিয়ে আসে।”

অধ্যবসায় এবং সফলতা

অধ্যবসায় যার মধ্যে আছে, তার জীবনে সফলতা আসা অনিবার্য। পৃথিবীর সকল মহান ব্যক্তিত্ব তাঁদের কর্মের মাধ্যমে এমন কিছু সৃষ্টি করেছেন, যা তাদের মৃত্যুর পরও মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। তারা হয়তো আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাদের কর্ম ও কীর্তি আজও জীবিত। সাফল্যের শিখরে পৌঁছানোর একমাত্র পথ হলো অধ্যবসায়। যার মধ্যে সত্যিকারের অধ্যবসায় রয়েছে, সে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করবে।

অধ্যবসায় এবং আত্মবিশ্বাস

অধ্যবসায়ের সঙ্গে সফলতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আত্মবিশ্বাস। যদি আপনি নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখেন যে আপনি পারবেন, তবে জীবনের কোন কাজই অসম্ভব মনে হবে না। যারা সফলতা অর্জন করেছেন, তারা সবাই নিজেদের ওপর বিশ্বাস রেখেছেন এবং বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে গেছেন। বিশ্বের অনেক মহান ব্যক্তির সাফল্যের পেছনে আত্মবিশ্বাসের বড় ভূমিকা ছিল। উদাহরণস্বরূপ, বিল গেটস যখন কলেজ ছেড়ে দিয়েছিলেন, তখন তার শিক্ষকরা ভেবেছিলেন তিনি আর কিছুই করতে পারবেন না। কিন্তু আজ তিনি বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি এবং মাইক্রোসফট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা।

অধ্যবসায়ের শিক্ষা

জীবনে ব্যর্থতা আসবেই, এমনটা প্রত্যাশিত। ব্যর্থতা আমাদের পথচলার এক অংশ, কিন্তু যারা ব্যর্থতার পরও হাল ছাড়েন না, তারা সফলতা অর্জন করতে পারেন। যাদের মধ্যে অধ্যবসায় থাকে, তারা সব বাধা অতিক্রম করে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। উন্নত দেশগুলোর মানুষ এবং সফল ব্যক্তিদের জীবন দেখলে দেখা যায়, প্রত্যেকেই তাদের সফলতার পথে অধ্যবসায়ের উপর ভরসা করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিখ্যাত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা তার এক ভাষণে বলেছিলেন-

“জীবনে সবচেয়ে বড় গৌরব হচ্ছে কখনো না পড়ে যাওয়া, বরং প্রতিবার পড়ে ওঠা।”

উপসংহার

জীবনে সফলতা লাভ করা এবং জাতিকে গর্বিত করার জন্য অধ্যবসায়ের বিকল্প কিছুই নেই। যখন কেউ তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিরন্তর চেষ্টা করে, তখন কোন বাধাই তাকে থামাতে পারে না। অধ্যবসায়ী মানুষ একদিন না একদিন সফলতা অর্জন করেই থাকে। প্রতিটি সফল জীবন এক ধরনের অধ্যবসায়ের প্রমাণ। তাই, ছোটবেলা থেকেই প্রত্যেকের উচিত এই মহৎ গুণটি অর্জন করা।

অধ্যবসায় নিয়ে এই রচনাটি পড়ার পর, যদি আপনি আরও সুন্দর রচনা পড়তে চান, তাহলে StudyTika.com এ আরও অনেক রচনা রয়েছে। এখনই পড়ে নিন!

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.