এই ব্লগপোস্টে আছে একটি সহজ ও সুন্দর রচনা — “বাংলাদেশের প্রাণিজগৎ” নিয়ে। তোমার পড়াশোনায় কাজে লাগবে এমন ২০+ পয়েন্টে সাজানো এই রচনাটি একবার পড়েই দেখো।
বাংলাদেশের প্রাণিজগৎ রচনা
ভূমিকা : দুনিয়াজুড়ে রয়েছে বিচিত্র প্রাণীর বাস। এদের কেউ বাস করে পানিতে, কেউ বাস করে ডাঙায়। বাংলাদেশেও রয়েছে অনেক রকমের প্রাণী।
গৃহপালিত পশু বা প্রাণী : আমরা যেসব পশু বা প্রাণীকে গৃহে লালন পালন করে বড় করে তুলি, সেগুলোকে বলে গৃহপালিত প্রাণী। বাংলাদেশের গৃহপালিত প্রাণীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটির বর্ণনা নিচে উপস্থাপন করা হলো—
গরু : বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গরু গৃহপালিত পশুর মধ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করে। দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামীণ বাড়িতে গরু পাওয়া যায়। গরুর প্রতিটি অংশ মানুষের জীবনে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। গরুর দুধ অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং সহজপাচ্য, যা শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সকলের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য। এছাড়া গরুর মাংস পুষ্টিতে সমৃদ্ধ ও সুস্বাদু। গরুর গোবর প্রাকৃতিক সার হিসেবে কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় এবং গবাদিপশুর চামড়া থেকে তৈরি হয় চামড়াজাত বিভিন্ন উপকরণ, যা অর্থনীতিতে সহায়ক। তাছাড়া গরু কৃষি কাজে যেমন হাল টানা বা ভার বহনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই গরু বাংলাদেশের গ্রামবাংলার অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
ভেড়া : ভেড়া আমাদের দেশে অতিপরিচিত গৃহপালিত প্রাণী। এটি লোমশ প্রাণী। ভেড়ার লোম দিয়ে কম্বল, কার্পেট ইত্যাদি তৈরি হয়। এর মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ছাগল : গৃহপালিত প্রাণীগুলোর মধ্যে ছাগল সবচেয়ে পরিচিত প্রাণী। বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতে ছাগল দেখা যায়। ছাগল সাধারণত কালো, সাদা, ধূসর, মিশ্র রঙের হয়ে থাকে।
কুকুর ও বিড়াল : কুকুর ও বিড়াল এ দেশের দুটি জনপ্রিয় প্রাণী। এ দেশের মানুষ এগুলোকে শখ করে পুষে থাকে। তবে কুকুর বাড়ির নিরাপত্তা দিতে বেশ পারদর্শী।
বন্য প্রাণী : বাংলাদেশের দক্ষিণে সাগরমুখে গড়ে উঠেছে সুবিশাল সুন্দরবন। এ ছাড়া সারা দেশে অনেক জায়গায় বন দেখা যায়। এসব বনে রয়েছে নানা ধরনের প্রাণীর বসবাস। নিচে এর কয়েকটি পরিচিতি তুলে ধরা হলো;..
হরিণ : আমাদের দেশে সুন্দরবনে হরিণ দেখা যায়। হরিণ প্রধানত দুই প্রকারের—(১) চিত্রা হরিণ এবং (২) বলগা হরিণ। হরিণ দেখতে খুবই সুন্দর ও মনোরম। এরা খুবই ভীতু প্রাণী। অনেক সময় নিজের পেটের ডাকে ভয় পেয়ে দ্রুত দৌড়ে পালায়।
বাঘ : আমাদের দেশে সুন্দরবনে বাঘ দেখা যায়। এরা হিংস্র ও মাংসাশী প্রাণী। সুন্দরবনের বাঘকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার বলা হয়। আমাদের জাতীয় পশু রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, সুন্দরবনের বাঘ পৃথিবী বিখ্যাত।
বানর : আমাদের দেশে সুন্দরবনে এবং অন্যান্য বনজঙ্গলে বানর দেখতে পাওয়া যায়। বানর গাছের ডালে ডালে সারা দিন লাফালাফি করে।
জলজ প্রাণী : বাংলাদেশকে বলা হয় নদীমাতৃক দেশ। নদীমাতৃক দেশের এসব নদীতে রয়েছে অসংখ্য প্রাণীর বাস। নিচে এদের কয়েকটির বর্ণনা দেওয়া হলো—
কুমির : সুন্দরবনের নদী ও জলাশয়ে কুমির দেখা যায়। কুমির খুব হিংস্র প্রাণী। কুমির হিংস্র প্রাণী হলেও খামারভিত্তিক চাষের মাধ্যমে বর্তমানে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
হাঙর : হাঙর হিংস্র প্রাণী। রক্তের গন্ধ পেলে এরা সেখানে ছুটে যায়। হাঙর স্তন্যপায়ী প্রাণী।
শুশুক : বাংলাদেশের প্রায় নদীতেই শুশুক দেখা যায়। মৎস্যাকার প্রাণী হিসেবে জলে বাস করলেও এটি স্তন্যপায়ী। এটি খুবই নিরীহ প্রাণী।
উপসংহার : প্রাণিজগতে বিস্ময় সৃষ্টিকারী জীবজন্তু কমে যাচ্ছে। ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। নিজেদের স্বার্থেই এসব প্রাণীকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের কর্তব্য।
রচনাটি কেমন লাগলো জানিও। এমন আরও অনেক রচনা পড়তে এখনই ভিজিট করো — StudyTika.com। সহজ ভাষায় সাজানো সব রচনা তোমার জন্যই।