ভাবসম্প্রসারণঃ হিংসা যেদিন যাইবে দুনিয়া ছাড়িয়া,সব তরবারি হইবে সেদিন কাষ্ঠের তরবারি [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

হিংসা যেদিন যাইবে দুনিয়া ছাড়িয়া, সব তরবারি হইবে সেদিন কাষ্ঠের তরবারি"—এই সুন্দর ও গভীর কথাটির ভাবসম্প্রসারণ আপনি এই ব্লগপোস্টে সহজ ভাষায় পড়তে পারবেন। চলো, পুরোটা পড়ে নিই।

ভাবসম্প্রসারণঃ হিংসা যেদিন যাইবে দুনিয়া ছাড়িয়া,সব তরবারি হইবে সেদিন কাষ্ঠের তরবারি [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

হিংসা যেদিন যাইবে দুনিয়া ছাড়িয়া,সব তরবারি হইবে সেদিন কাষ্ঠের তরবারি

মূলভাব : প্রাচীনকাল থেকেই পৃথিবীর বুকে মানুষ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করে চলেছে। 

সম্প্রসারিত ভাব : এ সংগ্রাম আগে ছিল মানুষের বেঁচে থাকার, পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম। অসহায় মানুষ তখন বন্য জন্তুর আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য, প্রকৃতির তাণ্ডব থেকে বাঁচার জন্য সংগ্রাম করেছে। কিন্তু অস্ত্র আবিষ্কারের পর থেকে মানুষ মানুষের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু এখন মানুষ। হিংসার উন্মত্ত একশ্রেণির ক্ষমতালিপ্সু রণোন্মাদ মানুষ বিজ্ঞানীদের বাধ্য করেছে মারণাস্ত্র আবিষ্কারে। যারা প্রকৃত অর্থে বিজ্ঞানের সাধক, তারা বিজ্ঞান চর্চা করেন না ধ্বংসের জন্য মারণাস্ত্র আবিষ্কারের আশায়, বরং অজানাকে জানার আগ্রহে এবং মানব সভ্যতার উন্নতির স্বপ্নে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তাদের আবিষ্কারের সুফলকে ব্যবহার করেছে কিছু সঙ্কীর্ণ জাতীয়তাবাদী দেশ, যারা এগিয়ে গেছে ভয়ংকর অস্ত্র তৈরির দিকে। যত বেশি মারণাস্ত্র তৈরি হয়েছে, ততই বেড়েছে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও যুদ্ধের আশঙ্কা। আত্মবিশ্বাস মানেই যেন অস্ত্র ধরা, আর অস্ত্র মানেই তা ব্যবহারের ইচ্ছা—এমন মানসিকতা বেড়ে গেছে। ‘মহাভারত’-এ আমরা দেখি, বহু রাজন্যবর্গের অংশগ্রহণে এক ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়, যা ভারতকে বীরশূন্য করে তোলে। আধুনিক যুগেও প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ একই রকম ধ্বংস ডেকে এনেছিল। তবে সেকালের যুদ্ধ আর একালের যুদ্ধের মাঝে বড় পার্থক্য হলো—এখনকার যুদ্ধ অনেক বেশি ভয়ংকর। এখন সব দেশই জানে, যুদ্ধ শুরু হলে কেউই নিরাপদ থাকবে না। এই ভয়ের কারণেই মানুষ ধীরে ধীরে যুদ্ধবিরোধী চিন্তায় অভ্যস্ত হচ্ছে। যুদ্ধের ভয়াবহতা এখন শুধু সৈনিকদের নয়, তাদের পরিবার, সমাজ ও গোটা বিশ্ববাসীকে দারুণভাবে নাড়া দিয়েছে। তবুও মানুষের মনের গভীরে যে যুদ্ধের বাসনা লুকিয়ে থাকে, তা পুরোপুরি মুছে ফেলা কঠিন। যত বেশি মানুষ বিশ্বাস করবে যে ‘হিংসা নয়, সংহতি’ই শেষ কথা, ততই যুদ্ধের সম্ভাবনা কমবে। মহাকাশ বিজ্ঞান, পরমাণুবিজ্ঞান বা রসায়নের নতুন আবিষ্কার তখনই সত্যিকারের আশীর্বাদ হয়ে উঠবে, যখন সেগুলো মানুষ ও মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হবে।

বিজ্ঞান তার সার্থকতার জন্য অপেক্ষা করবে। শৈশবে খেলাঘরের মারামারি যেমন পরিণত বয়সের স্নেহ সম্পর্কে পরিণত হয়, সভ্যতার অপরিণত অহঙ্কারের প্রকাশ ‘যুদ্ধ’ তেমনি একদিন অবসিত হয়ে পরিণত হবে আন্তর্জাতিক সৌভ্রাত্ববোধে। যেদিন স্নেহ ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে মানুষকে হত্যার কথা ভুলে যাবে, তখন আর যুদ্ধের কোন প্রয়োজন থাকবে না। শেষ হবে অস্ত্র তৈরির প্রয়োজন। ভ্রান্তিজনিত পদস্থলন হিসেবে গণ্য হবে যুদ্ধ। তখন সব অস্ত্রই হবে শিশুদের খেলার সামগ্রী।

এই ছিলো "হিংসা যেদিন যাইবে দুনিয়া ছাড়িয়া..." এই কথার ভাবসম্প্রসারণ। আরও অনেক সুন্দর ও সহজ ভাবসম্প্রসারণ পড়তে চাইলে ঘুরে আসুন আমাদের ওয়েবসাইটে—StudyTika.com

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.