ভাবসম্প্রসারণঃ জননন্দিত একজন সাহসী নেতার কন্ঠস্বর সহস্র বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

"জননন্দিত একজন সাহসী নেতার কন্ঠস্বর সহস্র বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী"—এই চমৎকার ভাবসম্প্রসারণটি আমরা সহজ ও সুন্দরভাবে এই ব্লগপোস্টে তুলে ধরেছি। শিক্ষার্থীরা খুব সহজে বুঝতে পারবে। চলুন শুরুতেই পড়ে নিই পুরো ভাবসম্প্রসারণটি!

ভাবসম্প্রসারণঃ জননন্দিত একজন সাহসী নেতার কন্ঠস্বর সহস্র বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী [Class 6 7 8 9 10 ‍SSC HSC]

জননন্দিত একজন সাহসী নেতার কন্ঠস্বর সহস্র বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী

মূলভাব : শাসক-শোষকদের রক্তচক্ষু আর অস্ত্রের ভয়কে উপেক্ষা করে লাঞ্চিত-বঞ্চিত ও পরাধীন মানুষের অধিকার আদায় করার জন্য প্রয়োজন যোগ্য নেতার। এক্ষেত্রে জনগণনন্দিত একজন যোগ্য ও সাহসী নেতার প্রতিবাদী কন্ঠস্বর শোষকের সহস্র বুলেটের চেয়েও বেশি কার্যকর।

সম্প্রসারিত ভাব : স্মরণাতীত কাল থেকে পৃথিবীতে ক্ষমতাবান ও পেশি শক্তির বলে বলীয়ান মানুষ সাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষদের নানা উপায়ে বঞ্চিত করে আসছে। কখনও মনুষ্যসৃষ্ট কৃত্রিম ভূমিব্যবস্থাপনা ও বন্টন - নীতির কারণে, আবার কখনও মুনাফালাভের অপকৌশল হিসেবে সাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষদের ঠকিয়ে এরা সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। অন্যদিকে, বিশ্বের বহু রাষ্ট্রে আজও স্বৈরাচারী ও একনায়ক শাসকেরা নাগরিকদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছে। আবার, যেসব জাতি উপনিবেশিক শাসনের নাগপাশে আবদ্ধ, তারাও নানা ভাবে শোষিত ও নিপীড়িত হয় ঔপনিবেশিক শক্তির দ্বারা। কিন্তু নির্যাতিত ও নিগৃহীত মানুষ সবসময় এই লাঞ্চনা ও বঞ্চনাকে চুপচাপ মেনে নেয় না। অধিকার ও স্বাধীনতার দাবিতে তারা বারবার প্রতিবাদে ফেটে পড়ে, জেগে ওঠে সংগ্রামের মন্ত্রে। শোষকদের রক্তচক্ষু কিংবা সহস্র অস্ত্র—কোনোটাই তাদের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে দমন করতে পারে না। এই প্রতিবাদী চেতনা শোষকদের অস্ত্রনির্ভর শাসনভিত্তিকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেয়। একজন প্রতিবাদী নেতা বা সচেতন মানুষ প্রথমে জনগণের মধ্যে অধিকারবোধ জাগিয়ে তোলেন, তাদের সংঘবদ্ধ করেন এবং অধিকার আদায়ের পথে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ করে তোলেন। ফলে, এক সময় সেই নিপীড়নকারী শাসকগোষ্ঠীও জনতার ঐক্যবদ্ধ দাবির সামনে পরাজয় স্বীকারে বাধ্য হয়। ইতিহাস সাক্ষী, মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ে গণসংগ্রাম ও প্রতিবাদই শেষ পর্যন্ত বিজয়ের পথ রচনা করে।

মন্তব্য : অত্যচারী ও শোষক শ্রেণির রক্তচক্ষু ও অস্ত্রের ভয় উপেক্ষা করে সাহসিকতার সঙ্গে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এজন্যে সাহসী তরুণদের নেতৃত্বের ভার গ্রহণ করতে হবে এবং নিজের সাহস ও প্রতিবাদী সত্তার দ্বারা জনগণের আস্থাভাজন হতে হবে।

এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করা হলো

মানুষ যুদ্ধ করার সাহায্যে দেশ জয় করে। যুদ্ধের অন্যতম অবলম্বন বুলেট। দু'পক্ষ মুখোমুখি হয়ে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়। সহস্র বন্দুক ও কামান গর্জে ওঠে। হাজার হাজার বুলেট বিপক্ষ সৈন্যের বুক ঝাঁঝরা করে দেয়। তারপর এক সময় অনেক মৃত্যু অনেক রক্তস্রোত বইয়ে দিয়ে শক্তির দন্ডের বিজয় ছিনিয়ে নেয়। এ বিষয়টি করুণ, ভয়াবহ এবং মানব সভ্যতার জন্য কলঙ্কস্বরূপ। কিন্তু একজন মহান নেতা বুলেট নয়, তার বজ্রকণ্ঠের গম্ভীর নিনাদে একটি জাতিকে জাগ্রত করতে সক্ষম হয়। পৃথিবীতে বহু নেতা দেখা যায়, যাদের আহ্বানে মানুষ লৌহ কঠিন শপথে দীপ্ত হয়েছে। বাঙালির জাতীয় অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন : 

“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”

তখন সেই উদাত্ত কণ্ঠস্বর শত সহস্র বুলেটের চেয়েও অধিকতর শক্তিশালী হয়ে জাগিয়ে তোলে নিপীড়িত জাতির অন্তর্নিহিত চেতনা। মহান নেতার বজ্রকণ্ঠ শুনে বাঙালি জাতি যেন ঘুম ভেঙে জেগে উঠেছিল, তাদের ভেতরে জেগে উঠেছিল অপরিমেয় সাহস, আত্মবিশ্বাস এবং অদম্য প্রাণশক্তি। সেই বলিষ্ঠ উচ্চারণের প্রেরণাতেই মাত্র নয় মাসের রক্তস্নাত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অর্জন করে মহান স্বাধীনতা। তাই বলা যায়, যেখানে সহস্র বুলেট ব্যর্থ হয়, সেখানে জনগণের হৃদয়ে প্রোথিত একজন মহান নেতার বজ্রনিনাদ পারে ইতিহাসের গতিপথ পাল্টে দিতে।

এই ছিল ভাবসম্প্রসারণ "জননন্দিত একজন সাহসী নেতার কন্ঠস্বর সহস্র বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী"। আপনি যদি আরও এমন সহজ ও সুন্দর ভাবসম্প্রসারণ পড়তে চান, তাহলে এখনই ঘুরে আসুন আমাদের ওয়েবসাইটে — StudyTika.com

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.